বাইপোলার ডিসঅর্ডারে শিকার নিশা রাওয়াল! এই মানসিক অসুখ নিয়ে দু-চার কথা জেনে রাখা ভাল

মানসিক রোগ বা অসুখ কখনও পাগলের লক্ষণ নয়। আর এইখানেই ভুল করেন কাছের ও চারিপাশের মানুষজন। পাশে থাকা তো দূর, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলে তাঁকে আরও অবসাদের সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হয় আমাদের সমাজে।

বাইপোলার ডিসঅর্ডারে শিকার নিশা রাওয়াল! এই মানসিক অসুখ নিয়ে দু-চার কথা জেনে রাখা ভাল
বাইপোলার ডিসঅর্ডারে শিকার নিশা রাওয়াল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 04, 2021 | 11:41 AM

সম্প্রতি টেলিভিশন জগতে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। হিন্দি টিভি সিরিয়াল তারকা নিশা ও করণের বৈবাহিক সম্পর্কে চিড় ধরেছে। ১২ বছরের বিবাহিত জীবনের নানা সমস্যার কথার মাঝে সামনে এসেছে নিশার বাইপোলার ডিসঅর্ডারের সমস্যাও। ওই টিভি সিরিয়ালের অভিনেত্রী স্বীকারও করেছেন তাঁর এই মানসিক সমস্যার কথাও।

গ্ল্যামারাস দুনিয়ায় যাঁরা থাকেন, তাঁদেরই এমন মানসিক সমস্যা দেখা যায়, তা কিন্তু মোটেই নয়। এমন ব্যাধি আমজনতার মধ্যও ছড়িয়ে পড়েছে। মোট কথা এই সমস্যার তল খুঁজতে গিয়ে বিষ্মিত হয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বাইপোলার ডিসঅর্ডারের (Bipolar disorder)মতো রোগ এখন গোটা বিশ্বে যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে রীতিমতো কপালে ভাঁজ পড়েছে মনোবিদদের।

বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar Disorder) কী?

বাইপোলার ডিসঅর্ডার হল একধরনের মানসিক রোগ। যা বাতিকগ্রস্ত অবসাদ (Depression) বা হাইপোম্যানিয়া নামেও পরিচিত। এটি এমন একটি অবসাদের পর্যায়ে মানুষ ডুব দেয়, যেখানে তাঁকে উদ্ধার করা খুব মুশকিলের হয়ে যায়। কারণ এই বাইপোলার ডিসঅর্ডারের দুটি পর্যায় তাকে, একটি হল ডিপ্রেসন ও অন্যটি হল ম্যানিক স্টেজ। এই ম্যানিক স্টেজে মানুষের হঠাত করে খিদে বেড়ে যাওয়া, ঘুমের সময় কমে যাওয়া, সব সময় নানান সমস্যা সৃষ্টি করা, চূড়ান্ত মুড স্যুইং করা, বিভিন্ন সম্পর্তে জড়িয়ে পড়া, নিজের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে ব্যয় করার প্রবণতা বেড়ে যাওয়া। আবার যখন ম্যানিক স্টেজ থেকে অবসাদের পর্যায়ে চলে আসে তখন কোনও কারণ ছাড়াই কান্নাকাটি করা, জীবনের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হওয়া, অন্যের চোখে চোখ না রেখে কথা বলার মতো ঘটনা ঘটে। এছাড়া এই অসুখের কারমে মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশি থাকে। মারাত্মক নেশা করার প্রবণতা, উদ্বেগজনিত ব্যাধির সঙ্গেও এই বাইপোলার ডিসঅর্ডারের সমস্যাগুলি সংযুক্ত।

আরও পড়ুন: যে কোনও পরিস্থিতিতে নার্ভকে দ্রুত শান্ত রাখবেন কীভাবে? রইল কিছু টিপস

বাইপোলার ডিসঅর্ডার হওয়ার কারণ কী

এই অসুখ কেন হয়, তা এখনও সুস্পষ্ট নয়। তবে পরিবেশগত ও জিনগত কারণে এই মারাত্মক অবসাদের জন্ম হতে পারে। জিনগত ঝুঁকি থাকলেও শেশবে নির্যাতন ও দীর্ঘকালীন চেপে থাকা মানসিক যন্ত্রণা থেকে এই অবসাদ তৈরি হতে পারে। মনোবিদদের মতে, সাধারণত ৭৩-৯৩ শতাংশ জিন থেকে এই ডিসঅর্ডারের ঝুঁকি বাড়ে। অনেকক্ষেত্রে মারাত্মক আঘাত পেয়ে, স্ট্রোকের কারণে, ব্রেনে আগাত লাগলে, এইচআইভি ইনজেকশনের প্রভাবে এমন মানসিক অসুখের জন্ম হয়।

চিকিত্সাও রয়েছে

এই ডিসঅর্ডারের চিকিত্সার জন্য পার্মাকোলজিক্যাল ও সাইকোথেরাপেটিক পদ্ধতি প্রয়োগ করেন মনোবিদরা। এই রোগের জন্য মনোবিদরা অ্যান্টিডিপ্রেশান্টদেন। সেই সঙ্গে মুড স্টেবিলাইজার হিসেবে লিথিয়াম ও অ্যান্টিকনভালশান্ট কার্বামাজেপাইন, লেমোট্রিগাইন ও ভালপ্রোয়িক অ্যাসিড প্রেসক্রাবইড করেন। সাইকোথেরাপি হিসেবে আচরণগত থেরাপি, পরিবার-কেন্দ্রিক থেরাপি, সাইকোঅডুকেশন ও ইন্টারপার্সোনাল ও সোশ্যাল রিদম থেরাপির মাধ্যমে বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিত্সা করানো হয় ও সনাক্তকরণও করা হয়।