Japan: ওবেসিটি-ক্যানসার নেই এই দেশে! জাপানে গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি হওয়ার আসল রহস্য কী?

জাপানিদের ভাল স্বাস্থ্যসেবা এবং একটি দুর্দান্ত খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি, বিশেষ করে দুটি জিনের কারণে তারা দীর্ঘায়ু হওয়ার বর পেয়েছেন। বেশিরভাগ জাপানি প্রবীণদের প্রতি যথেষ্ট যত্ন নেন। জাপানি পরিবারগুলি একসঙ্গে থাকতে পছন্দ করে।

Japan: ওবেসিটি-ক্যানসার নেই এই দেশে! জাপানে গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি হওয়ার আসল রহস্য কী?
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 20, 2021 | 12:32 PM

জি৭ দেশগুলির মধ্যে সাম্প্রতিক মৃত্যুর হারের পরিসংখ্যানের একটি আন্তর্জাতি তুলনা করা সময় আবিষ্কার হয় যে জাপানের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি। এর প্রধান কারণ হল ইস্কেমিক হৃদরোগ এবং ক্যান্সার (বিশেষ করে স্তন এবং প্রোস্টেট) থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম মৃত্যুর হার রয়েছে। এমনটাই বক্তব্য টোকিওর সেন্টার ফর পাবলিত হেল্থ সায়েন্সের সোইচিরো সুগানে।

জাপানে স্থূলতার প্রকোপ অনেকটাই কম। জাপানিদের লাল মাংসের পরিমাণ বিশেষ করে স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করেন না। এছাড়া তাদের মাছের খাওয়ার পরিমাণ বাঙালিদের থেকেও বেশি হয়। বিশেষ করে এন-থ্রি পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, সয়াবিনের মতো উদ্ভিদজাত খাবার এবং গ্রিন টি-এর মতো চিনি-মিষ্টিহীন পানীয় গ্রহণ করেন তাঁরা।

ইকিগাই- ‘ইকিগাই’ হল একটি প্রাচীন দর্শন, যেখানে বলা হয়েছে, একজন বা আমিত্বে না থেকে সকলের জীবনে কিছু আনন্দ ও উদ্দেশ্য সন্ধান করতে হবে। জীবন হল একটি অনুশীলন। যার জেরে একজন মানুষকে পরিপূর্ণতা দেয়। এই ধারণা তাত্‍ক্ষণিক প্রদানের লক্ষ্য নয়, জীবনের উদ্দেশ্য, আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য এবং আপনার জীবনের পূর্ণ সম্ভাবনাকে মর্যাদা দেয়। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, এমন ধারণা উচ্চ আত্মসম্মানবোধ জাগ্রত করে।

জেনেটিক্স- জাপানিদের ভাল স্বাস্থ্যসেবা এবং একটি দুর্দান্ত খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি, বিশেষ করে দুটি জিনের কারণে তারা দীর্ঘায়ু হওয়ার বর পেয়েছেন। DNA 5178 ও ND2-237 জিনোটাইপ। এটি জাপানের জনসংখ্যার মধ্যে বেশি লক্ষণীয়। যদিও প্রত্যেক জাপানিদের মধ্যে এই জিনের ধরন এক থাকে না, তবে যাঁদের আয়ু বেশি তাঁদের মধ্যে এজিনের গঠন দেখা গিয়েছে।

সক্রিয় জীবনধারা- সেরা গাড়ি ও মোটরসাইকেল জাপান থেকে উত্‍পাদন হয়। প্রযুক্তির আঁতুড়ঘর হল জাপান। তবে প্রযুক্তির মারপ্যাঁচ জানলেও জাপানিরা বরং ট্রেনে চড়ে বা হেঁটে অফিস যেতে বেশি পছন্দ করেন।

হারা হাছ বান মি- এটি একটি জাপানি প্রবাদ। এর অর্থ হল শরীরের চাহিদা অনুসারে ৪০ শতাংশ খাওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, চাহিদা অনুযায়ী খাবার খাওয়া কখন বন্ধ করতে হবে, তার সংকেত পেতে মস্তিষ্কের অন্তত ২০ মিনিট সময় লাগে। অন্যদিকে জাপানিরা অত্যন্ত ছোট ছোট আকারে খাবার খান। ধীরগতিতে খাওয়ার স্টাইল রয়েছে তাঁদের। এমনকি খাবার কম খাওয়ার জন্য একটি ছোট প্লেটে পরিবেশন করা হয়।

পরিবেশ পরিচ্ছন্ন ও ভাল স্বাস্থ্য়সেবা ব্যবস্থা- জাপানে অত্যাধুনিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রয়েছে। তারা বিনামূল্যে যক্ষ্মা চিকিত্সা করাতে পারেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ব্যাপক বিনিয়োগ করার ফল পাচ্ছে জাপান।

খাবার খাওয়ার সময় নিয়ম মেনে চলা- জাপানি পরিবারগুলি তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা সম্পর্কে খুব কঠোর। তারা মেঝেতে বসে চপস্টিক দিয়ে খান। পুরো খাবারটি অত্যন্ত ধীরগতিতে চলে। জাপানিদের একটি খুব পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। যার কারণে ওবেসিটি কী, তা অর্ধেক জাপানি জানেন না।

চা- চা অত্যন্ত পছন্দের একটি পানীয়। আর এ ব্যাপারে জাপানির অত্যন্ত শৌখিনও বটে। এই প্রাচীন পানীয়টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। যার কারণে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ক্যান্সারের সাথে লড়াই করতে, হজমে সাহায্য করতে, শক্তি সঞ্চয় করতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

বয়স্কদের যত্ন নেওয়া- বেশিরভাগ জাপানি প্রবীণদের প্রতি যথেষ্ট যত্ন নেন। জাপানি পরিবারগুলি একসঙ্গে থাকতে পছন্দ করে। দাদু-দিদাদের সহ্গে নিয়মিত নাতি-নাতনিদের সময় কাটানোর চল রয়েছে সে দেশে। জাপানিরা বিশ্বাস করে যে পারিবারিক মূল্যবোধ সকলকে একত্রিত করে এবং পরিবারের সদস্য, তরুণ ও বৃদ্ধ উভয়েরই উপকার করে।

আরও পড়ুন: Pollution: দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রতিদিন এই ৫ ভেষজ খান! হাতেনাতে মিলব ফল