বাচ্চার ডায়াপারে রয়েছে ভয়ংকর রাসায়নিক! নয়া তথ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা

একবার ব্যবহার করতে শুরু করলেই ডায়াপার থেকে থ্যালেট বেরোয়। বাচ্চাদের ব্যক্তিগত অঙ্গের সঙ্গে ডায়াপার যেমন লেগে থাকে ও শরীরে প্রবশে করে, তেমনই ত্বকের কোষের মাধ্যমেও থ্যালেট শরীরে শোষিত হয়।

বাচ্চার ডায়াপারে রয়েছে ভয়ংকর রাসায়নিক! নয়া তথ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Updated on: May 26, 2021 | 12:56 PM

ছোট বাচ্চারা বারবার প্রস্রাব করে। ফলে একাধিকবার জামাকাপড় বদলাতে হয়। এমনকী কিছু কিছু বাচ্চা দিনে দুই তিনবার পায়খানাও করে। সেক্ষেত্রেও বদলাতে হয় বাচ্চার কাপড়। সবচাইতে মুশকিল হয় কচি বাচ্চাকে নিয়ে বাড়ির বাইরে বেড়াতে গেলে। সঙ্গে নিয়ে যেতে হয় গুচ্ছের প্যান্ট-জামা। এখানেই শেষ নয়। বাচ্চারা বারবার ঘুমের ঘোরে বিছানা ভিজিয়ে ফেলে। জলে ভিজে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই রাতের বেলায় ঘনঘন সন্তানের পরনের কাপড় বদলাতে গিয়ে ঘুমের দফারফা হয়ে যায় অভিভাবকদের। এই ধরনের সকল সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় করে দেয় ‘ডায়াপার’। একবার পরিয়ে দিলে দীর্ঘ সময়ের জন্য নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন বাবা-মায়েরা। তবে আর বোধহয় চিন্তামুক্ত থাকা যাবে না। সম্প্রতি দিল্লীর এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ডায়াপার ব্যবহার নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। সেই সমীক্ষার ফলাফল হাতে আসতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছে বিশেষজ্ঞদের।

আরও পড়ুন: বাচ্চাদেরও কি ‘ডবল মাস্ক’ পরাতে হবে? মাস্ক পরানোর নতুন নিয়মগুলি জেনে নিন…

সংস্থা পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা যায়, ভারতের বাজারে যে ডায়াপার পাওয়া যায় তাতে রয়েছে বিষাক্ত ‘থ্যালেট’। এই ক্ষতিকর রাসায়নিকটি মানবদেহের এন্ডোক্রিন গ্রন্থির কার্যকলাপে বিঘ্ন ঘটাতে সক্ষম। পিট্যুইটারি গ্রন্থি, থাইরয়েড গ্রন্থি, অ্যাড্রিনালিন, অগ্ন্যাশয় গ্রন্থি এইরকম এন্ডোক্রিন গ্রন্থির উদাহরণ। এন্ডোক্রিন বা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিগুলির নানা কাজ থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় বাচ্চার দৈহিক ও মানসিক বিকাশে, আচার ব্যবহার স্বাভাবিক রাখতে, শক্তির সঞ্চয় করতে, শরীরে গ্লুকোজ, নুন ও জলের ভারসাম্য বজায় রাখতে, উত্তেজনার সময় সঠিক আচরণ প্রকাশ করতে এন্ডোক্রিন গ্রন্থিগুলি ভূমিকা নেয়।

‘টক্সিকস লিংক’ নামে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার করা সমীক্ষায় প্রকাশ পেয়েছে আরও তথ্য। স্থানীয় বাজার এবং অনলাইন থেকে সংগ্রহ করা ডায়াপারগুলিতে ক্ষতিকারক থ্যালেট পাওয়া গিয়েছে ২.৩৬পিপিএম থেকে ৩০২.২৫পিপিএম মাত্রায়! সংস্থাটি জানিয়েছে, ডায়াপার সংক্রান্ত সমস্ত পরীক্ষা করা হয়েছে ‘এনএবিএল’ স্বীকৃত পরীক্ষাগারে।

আরও পড়ুন: আপনার মলের ধারা কেমন? স্মার্ট টয়লেটেই ধরা পড়বে লুকনো অসুখ!

ডায়াপারে যে পলিমার ব্যবহার করা হয় তার সঙ্গেই যুক্ত থাকে থ্যালেট। ফলে ব্যবহার করতে শুরু করলেই ডায়াপার থেকে থ্যালেট বেরোয়। বাচ্চাদের ব্যক্তিগত অঙ্গের সঙ্গে ডায়াপার যেমন লেগে থাকে ও শরীরে প্রবশে করে, তেমনই ত্বকের কোষের মাধ্যমেও থ্যালেট শরীরে শোষিত হয়। ফলে বাচ্চাটি বড় হওয়ার পর ভবিষ্যতে তার ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, স্থূলত্ব, বন্ধ্যত্বের সমস্যা দেখা দেওয়ার ভয় রয়ে যাচ্ছে। এখানেই শেষ নয়। ব্যবহৃত এবং ফেলে দেওয়া ডায়াপার থেকেও পরিবেশে মিশছে থ্যালেট যা আগামীদিনে মানব স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।