Multiple Myeloma: কিরণ খেরের মতো আপনার শরীরেও বাসা বাঁধতে পারে এই কর্কটরোগ!
করোনার থাবা তো রয়েছেই, ক্যানসারের দাপটেও বিধ্বস্ত বিশ্ববাসী। এই মারণ রোগ এখন মহামারীর মতোই ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দুনিয়ায়। ক্যানসার আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে, ক্যানসার মুক্ত সমাজ তৈরি করতে নিজেই সচেতন হোন। সচেতন করুন।
আবহাওয়া, খাদ্যাভাস, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জেরে এখন নানান রোগে আক্রান্ত মানুষ। বর্তমান পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে এখন মানুষের কখন কোন কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত হবে তা অজানা। সেই অজানা মারণ রোগের মধ্যে অন্যতম কর্কট রোগ। এই কঠিন রোগের শিকড় যে কতদূর ছড়িয়ে পড়েছে তার তল পাওয়া দুস্কর। শুধু সাধারণ মানুষ না, দুনিয়া কাঁপানো তারকারাও এই রোগে জর্জরিত। অনেকে ক্যানসারকে (Cancer) জয় করতে পারেননি, অনেকে কর্কটকে জয় করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। সম্প্রতি বলিউড অভিনেত্রী তথা চণ্ডীগড়ের বিজেপি সাংসদ কিরণ খের বিরল মাল্টিপল মেলোমা (Multiple Myeloma) রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন। এই মাল্টিপল মেলোমা একধরণের ব্লাড ক্যানসার ।
মাল্টিপল মেলোমা (Multiple myeloma) কী?
শরীরে যেখানে কোনও কোষ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়, তাকে ক্যানসার বলে। রক্তের প্লাজমা কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে (abnormal plasma cells) বলা হয় মাল্টিপল মেলোমা (Multiple myeloma)। এটি এক ধরণের ক্যানসার যা শ্বেত রক্ত কোষে ঘটে থাকে, তাকে প্লাজমা কোষ বলে। উপকারী প্লাজমা কোষগুলি অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। মাল্টিপল মেলোমা-তে ক্যানসারযুক্ত প্লাজমা কোষগুলি হাড়ের মজ্জাতে জমা হয় আর স্বাস্থ্যকর প্লাজমা কোষ রক্তকণিকা নির্গত করে। স্বাস্থ্যকর অ্যান্টিবডি তৈরির পরিবর্তে ক্যানসার কোষগুলি যখন অস্বাভাবিক প্রোটিন তৈরি করে জটিলতা তৈরি করে তখন সেই কোষগুলি অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। একে বলে মাল্টিপল মেলোমা।
মাল্টিপল মেলোমা- এর লক্ষণগুলি কী কী…
ব্যক্তি বিশেষে এই রোগের লক্ষণ (Symptoms) বিভিন্ন হতে পারে। সাধারণত যে যে লক্ষণগুলি দেখে বোঝা যায় মাল্টিপল মেলোমা হয়েছে সেগুলি হল, হাড়ে অবিরাম ব্যথা, বমি বমিভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যানিমিয়া, খাবার খাওয়ায় অরুচি, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করা, ঘন ঘন সংক্রামিত হওয়া, দ্রুত ওজন কমে যাওয়া, মাঝে মাঝেই পা অসাড় হয়ে যাওয়া, কিডনির সমস্যা, বারবার তৃষ্ণা পাওয়া।
মাল্টিপল মেলোমার কারণ (Causes of Multiple Myeloma) কী…
এই রোগের কারণ সম্পর্কে এখনও কোনও সঠিক দিশা দেখাতে পারেননি চিকিত্সকরা। অস্থিমজ্জায় প্লাজমা কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হলে তাকে ডাক্তারি ভাষায় মাল্টিপল মেলোমা বলে। এই রোগ শরীরে একটি অংশ থেকে অন্য অংশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মেলোমার কোষগুলি কোনও স্বাভাবিক জীবনচক্র অনুসরণ করে না। অনির্দিষ্টকালের জন্য় বিভক্ত হযে আরও জটিল করে তোলে। তবে এই কঠিনরোগে আক্রান্ত হন বিশেষত ৬৫ ও তার বেশি বয়সি বয়স্কদের। প্রধাণত পুরুষদের মধ্যে দেখা গেলেও মহিলারাও এই রোগে আক্রান্ত হন।
রোগের ট্রিটমেন্ট (Diagnosis) কীভাবে করা হয়…
এম প্রোটিন পরীক্ষা করতে রক্ত এবং মূত্র পরীক্ষা করা হয়। ক্যানসার কোষগুলি বিটা-২ মাইক্রোগ্লোবুলিন নামে একটি প্রোটিন তৈরি করে যা রক্তে পাওয়া যায়। এছা়ড়া রক্ত কোষের গণনা, ক্যালসিয়াম স্তর, ইউরিক অ্যাসিড, এমআরআই স্ক্যান বা সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। এই রোগ ধরা সনাক্ত করার পরই টারগেটেড থেরাপি, বায়োলজিক্যাল থেরাপি, কেমোথেরাপি, কোর্টিকোস্টেরয়েডস, রেডিয়েশন থেরাপি, স্টেম সেল ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে এই মাল্টিপল মেলোমা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।