Tuberculosis: দু’বছরে দেশে যক্ষা রোগী বেড়েছে ১৯ শতাংশ, ৪০ আক্রান্তকে দত্তক নেওয়ার ঘোষণা
TB-Mukt India: যক্ষ্মা রোগীদের যত্ন ও সেবা করার জন্য এগিয়ে আসা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলিকে ‘নি-ক্ষয় মিত্র‘ বলা হবে। ব্লক, জেলা বা এমনকি একজন রোগীকেও দত্তক নেওয়া যেতে পারে
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে অভিনব পরিকল্পনার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। ৪০ জন যক্ষা রোগীকে দত্তক নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ২০২৫ সালের মধ্যে সারা ভারত থেকে যক্ষা নির্মূল…কে ফের একবার পুনুরুজ্জীবিত করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গত ৯ সেপ্টেম্বর, ‘প্রধানমন্ত্রী যক্ষ্মামুক্ত ভারত অভিযান’-এর (Pradhan Mantri TB-Mukt Bharat Abhiyan campaign) অধীনে মোট ১.৭৮ লক্ষেরও বেশি যক্ষ্মা রোগীকে (TB patients) দত্তক নেওয়ার কথা ঘোষণা করে মন্তব্য রেখেছিলেন দেশের নয়া রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
নীরব ঘাতক হিসেবে ডায়াবেটিসের মত ক্রমশই বেড়ে চলেছে যক্ষা। বিশেষত দেশজুড়ে কোভিড আছড়ে পড়ার পরই হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে টিবি আক্রান্তের সংখ্যা। প্রসঙ্গত জাতিসংঘের লক্ষ্যমাত্রার পাঁচ বছর আগেই যক্ষ্মামুক্ত অভিযান করে সচেতনতা ও রোগমুক্তি করার চেষ্টা চালাবে ভারত। সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতেই সরকার কমিউনিটি সাপোর্ট প্রোগ্রাম চালু করেছে। যার অধীনে যক্ষ্মা রোগীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা দত্তক ও যত্ন নেওয়া যাবে। নি-ক্ষয়-মিত্র Ni-kshay Mitra- এই প্রকল্পের মাধ্যমে যক্ষা রোগীর যাতে সময়মতো রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা হয় এবং সব যক্ষা রোগী যাতে পুষ্টিকর খাবার খান সেই দিকে খেয়াল রাখতেই বিশেষ এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চল্লিশজন যক্ষা রোগীকে ইতিমধ্যে দত্তক নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ভারতে টিবির প্রকোপ
২০১৯ এর তুলনায় ২০২১-এ যক্ষা রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে রোগের তীব্রতাও। ২০২২ সালে প্রকাশিত হয়েছে ইন্ডিয়া টিবি রিপোর্ট। সেখানেই আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে দেখা গিয়েছে ২০২০ সালে যে সংখ্যাটা ছিল ২৮,১৬১ জন ২০২১ সালে সেই সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১৯,৩৩,৩৮১-তে। ভারতের ন্যাশানাল টিবি প্রিভালেন্স সার্ভে ২০১৯-২০২১ দেখা গিয়েছে এই রোগের প্রাদুর্ভাব প্রতি ১০০,০০ জনে ৩১২ জন। ন্যাশনাল টিউবারকিউলোসিস ইন্সটিটিউটের তরফে এক চিকিৎসক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ভারতে ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ টিবির সংক্রমণ বহন করে। এর মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত হন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমানে ৩০ টি দেশে টিবির সংক্রমণ সবচাইতে বেশি। তার মধ্যে ৮৬% আমাদের দেশে।
নতুন এই প্রকল্পে কত মানুষ উপকৃত হবেন?
নতুন চালু হওয়া এই প্রকল্পের আওতায় ১.৭৮ লক্ষ রোগীকে এখনও পর্যন্ত দত্তক নেওয়া হয়েছে। দেশে বর্তমানে টিবি রোগে চিকিৎসাধীন ১৩,৫১,৫৫০। এর মধ্যে দত্তক নেওয়াতে সম্মতি জানিয়েছেন, ৯,০৪,৪২৫ জন। সরকারের তরফে বাকি রোগীদের কাছেও আবার অনুরোধ করা হবে, তাদের বোঝানো হবে। একটি প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত পঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, দিল্লি, চণ্ডীগড়, জন্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক টিবি আক্রান্তকে দত্তক নেওয়া হয়েছে।
কীভাবে দত্তক নেবেন
যক্ষ্মা রোগীদের যত্ন ও সেবা করার জন্য এগিয়ে আসা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলিকে ‘নি-ক্ষয় মিত্র‘ বলা হবে। ব্লক, জেলা বা এমনকি একজন রোগীকেও দত্তক নেওয়া যেতে পারে। তাদের পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করা, পুষ্টি জোগানো ও চিকিত্সায় সহায়তা প্রদান করতে পারে। উত্তরপ্রদেশের ‘নিক্ষয় মিত্র’দের অধীনে ইতোমধ্যে ৪,৪১৬জনকে দত্তক নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মধ্যপ্রদেশে ২,২৮৬জন ও মহারাষ্ট্রে ৬৪৩জনকে পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়- স্কুল, কলেজে এবং নানা অনুষ্ঠানেও এ বিষয়ে প্রচার চালানো হবে।