Single-Use Plastics: সিঙ্গল ইউজ় প্ল্য়াস্টিকের ব্যবহার কেন বন্ধ করা হল? জেনে নিন সেসব কারণ…

Plastic Ban: প্ল্যাস্টিক পোড়ানোর ফলে যে ক্ষতিকর ডাইঅক্সিন, ফুরান, পারদ, পলিক্লোরিনেটেড বাইফেনাইল তৈরি হয়েছে তা মানুষ, প্রাণী, উদ্ভিদের যথেষ্ট ক্ষতি করেছে

Single-Use Plastics: সিঙ্গল ইউজ় প্ল্য়াস্টিকের ব্যবহার কেন বন্ধ করা হল? জেনে নিন সেসব কারণ...
আজ থেকেই বন্ধ প্লাস্টিকের ব্যবহার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 01, 2022 | 7:25 PM

১ জুলাই থেকে ১০০ মাইক্রনের কম প্ল্যাস্টিক ব্যবহার করা হবে না বলে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার সকালে দেখা গেল না সেই সচেতনতা। শহরের প্রায় সব বাজারে একই ছবি। ক্রেতারা অনেকেই জানেন না, ১০০ মাইক্রোনের কম প্ল্যাস্টিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর দোকানদারেরা বলছেন, কারখানা থেকে পাওয়া যাচ্ছে না ৭৫ মাইক্রোনের কম প্ল্যাস্টিক, পাওয়া গেলেও গ্যাঁটের কড়ি খরচ করতে হচ্ছে বিক্রেতাদেরই। ইয়ারবাড, সিগারেটের প্যাকেট, আইসক্রিমের প্যাকেট, ট্রে, প্যাকেজিং, নিমন্ত্রণের কার্ড, মিষ্টির বাক্স সবেতেই এবার নিষিদ্ধ ১০০ মাইক্রনের কম পলিভিনাইল ক্লোরাইড।

কেন জারি করা হয়েছে এমন নিষেধাজ্ঞা? প্ল্যাস্টিক দূষণ নিয়ে বহু আগে থেকেই সরব হয়েছেন পরিবেশবিদরা। বাড়ছে দূষণ, গলছে বরফ, সেই সঙ্গে নামছে জলস্তরও। প্লাস্টিকের দূষণে ক্ষতি হচ্ছে জলজ প্রাণীদের। মাঝেমধ্যেই সমুদ্র বা নদী থেকে মরা মাছ ভেসে উঠছে, এমন ছবিও একাধিকবার উঠে এসেছে। প্রতি বছর প্রায় ১৫০ মিলিয়ন টনেরও বেশি প্ল্যাস্টিক জলজ আবর্জনা হিসেবে উদ্ধার করা হয়। তবে এই প্ল্যাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে ক্ষতি হচ্ছে আমাদের বাস্তুতন্ত্রের। সেই সঙ্গে প্রভাব পড়ছে ফুসফুস, স্নায়ুতন্ত্রে। ক্ষতি হচ্ছে প্রজননেও। একই ভাবে ক্ষতি হচ্ছে পাহাড়েরও। যে কারণে পাহাড়েও নিষিদ্ধ হয়েছে প্ল্যাস্টিক বর্জ্য।

এই সিঙ্গল ইউজ় প্ল্যাস্টিকের মধ্যে থাকে মাইক্রোপ্লাস্টিক এক্সপোজ়ার, যা সরাসরি প্রভাব ফেলে আমাদের খাদ্যশৃঙ্খলে। এছাড়াও খাবারের মাধ্যমে তা মানবদেহে প্রবেশ করে একাধিক ক্ষতি করতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমেও মাইক্রোপ্ল্যাস্টিক আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। যেখান থেকে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, বন্ধ্যাত্ব, ADHD-এর মতো নানা উপসর্গ দেখা দেয়। অটিজ়ম এবং স্নায়ুতন্ত্রের একাধিক অসুখের জন্যও দায়ী প্ল্যাস্টিকের দূষণ।

প্ল্যাস্টিক ইকোসিস্টেমে প্রবেশ করার পর মাইক্রোপ্ল্যাস্টিকে পরিণত হয়। মাইক্রোপ্ল্যাস্টিকের প্যাথোজেনগুলি দূষণের অন্যতম কারণ। দূষিত এই মাইক্রোপ্ল্যাস্টিক কিন্তু মৃত্যুরও কারণ। বিসফেনল এ (BPA) প্ল্যাস্টিকের মধ্যে থাকা এই উপাদান ক্যানসার, ওবেসিটি, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হাইপারঅ্যাকটিভিটি সহ- বিভিন্ন এন্ডোক্রাইন ডিসঅর্ডারের মবলে থাকে। বিসফেনলের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব থেকে হরমোনের অসামঞ্জস্যতা, বন্ধ্যাত্ব, এন্ডোমেট্রিওসিস, শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়ার মতো একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১৫০ মাইক্রোমিটারের তুলনায় বড় প্ল্যাস্টিক ব্যবহার করলে তার থেকে দূষণের সম্ভাবনা কম। আর মানবদেহে মাইক্রোপ্ল্যাস্টিক হিসেবে তা প্রবেশ করার সম্ভাবনাও কম।

এই সিদ্ধান্তে পরিবেশ কতটা উপকৃত হবে? অনুমান করা হয়, ১৫ শতাংশের বেশি প্ল্যাস্টিক আমরা ইতিমধ্যে পুড়িয়ে ফেলেছি। প্ল্যাস্টিক পোড়ানোর ফলে যে ক্ষতিকর ডাইঅক্সিন, ফুরান, পারদ, পলিক্লোরিনেটেড বাইফেনাইল তৈরি হয়েছে তা মানুষ, প্রাণী, উদ্ভিদের যথেষ্ট ক্ষতি করেছে। দায়িত্বহীনের মত প্ল্যাস্টিক পোড়ানোর পরিবেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে এই একক প্ল্যাস্টিক উৎপাদনেও জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

সিঙ্গল প্ল্যাস্টিকের বিকল্প কী বায়োডিগ্রেডেবল প্ল্যাস্টিক ব্যবহারে বেশি নজর দিতে হবে। খড়, বাঁশ, কাগজ ইত্যাদি ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় ব্যাগ বানাতে হবে। প্রয়োজনে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য জলের বোতল তৈরি করতে হবে। এমন কিছু পদক্ষেপ করা প্রয়োজন, যার প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতেও। এভাবেই দূষণরোধে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে।