Bihar: রোজ রাতে চলে যেত গোটা গ্রামের বিদ্যুৎ, একটা বিয়ে দিতেই মিটে গেল সমস্যা

Bihar bettiah love story: বিদ্যুৎ দফতরে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বিদ্যুত দফতরের কর্তারা গ্রামে এসে জানাতেন, বিদ্যুতের লাইনে কোনও ত্রুটি নেই। শেষে নিজেরাই এই সমস্যা সমাধানের কথা ভেবেছিলেন গ্রামবাসীরা।

Bihar: রোজ রাতে চলে যেত গোটা গ্রামের বিদ্যুৎ, একটা বিয়ে দিতেই মিটে গেল সমস্যা
প্রতীকী ছবিImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 23, 2023 | 7:01 PM

পটনা: বিহারের বেতিয়া জেলার এক গ্রামে রোজ রাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যুৎ চলে যেত। গত বেশ কয়েকমাস ধরেই এই ঘটনা চলছিল। বৃষ্টি শুরু হলেও গরম কমেনি, তার উপর রয়েছে তীব্র আদ্রতা। এই সময় আলো-পাখা না চলায় খুবই অসুবিধায় পড়তেন গ্রামবাসীরা। বিদ্যুৎ দফতরে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বিদ্যুত দফতরের কর্তারা গ্রামে এসে জানাতেন, বিদ্যুতের লাইনে কোনও ত্রুটি নেই। শেষে নিজেরাই এই সমস্যা সমাধানের কথা ভেবেছিলেন গ্রামবাসীরা। আর তাতেই ধরা পড়ল অদ্ভূত ঘটনা। বিদ্যুতের লাইনে সত্যিই কোনও ত্রুটি ছিল না। আসলে, ওই গ্রামের এক যুবতী রোজ রাতে গোপনে তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন। যাতে গ্রামের কেউ তাঁদের এই অভিসার ধরে না ফেলে, তার জন্য তারাই রোজ রাতে গোটা গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিত!

এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বেতিয়া জেলার নওতান গ্রামে। রাজকুমার নামে পাশের গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল প্রীতি নামে এক ওই গ্রামের এক মেয়ের। দুজনেই নওতান গ্রামের আরেক ব্যক্তির বাড়িতে কাজ করেন। এক সঙ্গে কাজ করতে করতেই সকলের অগোচরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। ওই বাড়ির বাগানেই রোজ রাতে তাঁরা দেখা করতেন। গ্রামের লোকজন জানতে পারলে, তাঁদের সম্পর্ক কেউ মেনে নেবে না – এই আশঙ্কাতেই বিষয়টি তাঁরা সম্পূর্ণ গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। সেই কারণেই রোজ রাতে গোটা গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিত তারা। এদিকে বিহারে লোড শেডিং খুব স্বাভাবিক বিষয়। তাই গ্রামের মানুষও রোদ রাতে বিদ্যুৎ চলে যাওয়াকে স্বাভাবিক ঘটনা বলেই মনে করেছিলেন।

কয়েকজন গ্রামবাসীর অবশ্য সন্দেহ হয়েছিল। তাঁরা লক্ষ্য করেছিলেন, রোজ রাতে একই সময়ে প্রীতি বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যায়, আর তারপরই আলো নিভে যায় গোটা গ্রামের। প্রীতির উপর তাঁরা গোপনে নজর রাখা শুরু করেছিলেন। সম্প্রতি মালিকের বাড়ির বাগানে দেখা করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়েন প্রীতি ও রাজকুমার। মালিকের চিৎকার শুনে জড়ো হয়ে গিয়েছিল গোটা গ্রামের লোক। এই ঘটনা সামনে আসায় হতবাক হয়ে যান গ্রামবাসীরা। প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করার জন্য, গোটা গ্রামের মানুষকে কেউ অসুবিধার মুখে ফেলতে পারে, তা কেউ ভাবতেই পারেননি। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা রাজকুমারকে মারধরও করে। প্রীতির হস্তক্ষেপে মারের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল রাজকুমার। পরে আবার রাজকুমার দলবল পাকিয়ে এসে ওই গ্রামবাসীদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ।

দুই পক্ষের এই উত্তেজনার মধ্যে গ্রামবাসীরা ঠিক করেন, যে করেই হোক এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। দুই গ্রামের প্রবীণরা বসে এই বিষয়ে আলোচনা করেন। ঠিক হয়, রাজকুমার এবং প্রীতির বিয়ে দিয়ে দিতে হবে। নাহলে, রোজ রাতে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সমস্যা মিটবে না। সম্প্রতি, নওতান গ্রামের এক মন্দিরে তাঁদের দুজনের বিবাহ হয়েছে। দুই গ্রামের বাসিন্দারাই সেই আনন্দ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে আর গ্রামের বিদ্যুৎ যায়নি। এই ঘটনা যতই আশ্চর্যজনক হোক না কেন, বিহারে যে এই ধরনের ঘটনা প্রথম ঘটল তা নয়। ২০২২-এ পূর্ণিয়া জেলার এক গ্রামে প্রায়ই কয়েক ঘন্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেত। পরে জানা গিয়েছিল, এক ইলেকট্রিশিয়ান যখনই তাঁর বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে যেতেন, তখনই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতেন।