Mallikarjun Kharge : ৮০-তে ইনিংস শুরু, ‘কণ্টকময় পিচে’ খাড়্গের সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ?
Mallikarjun Kharge : বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসের সভাপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন মল্লিকার্জুন খাড়্গে। সভাপতি পদে আসীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেসের হারানো জমি ফিরিয়ে দেওয়া সহ একাধিক চ্যালেঞ্জ এই বর্ষীয়ান নেতার সামনে।
নয়া দিল্লি : দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় পর কোনও অ-গান্ধী নেতা কংগ্রেসের প্রধানের পদে বসলেন। আজই কংগ্রেস সভাপতি পদে অভিষিক্ত হলেন কর্নাটকের দলিত নেতা তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Mallikarjun Kharge)। গান্ধী ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নেতার মাথার এই মুকুটে অবশ্য কাঁটার পর কাঁটা। শশী থারুরের বিরুদ্ধে খুব সহজেই নির্বাচনে জিতে কংগ্রেস সভাপতি হয়েছেন খাড়্গে। তবে সভাপতি হিসেবে তাঁর যাত্রাপথ মোটেই সুগম হবে না। বিভিন্ন বিধানসভা নির্বাচন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন তো আছেই, তার সঙ্গে দলের প্রাসঙ্গিকতা বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হবে খাড়্গে।
বিজেপি বিরোধিতায় দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক বিরোধী দলগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাতে দিনকে দিন নিজেদের জমি হারাচ্ছে কংগ্রেস। আম আদমি পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেসের মতো দলগুলি বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসকেও তোপ দাগছে। এই আবহে সভাপতি হিসেবে খাড়্গের প্রথম কাজ হবে দলের প্রাসঙ্গিকতা ফিরিয়ে আনা। এদিকে দলের অন্দরেও গান্ধী পরিবারের বিরোধিতায় সরব বহু নেতা। গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বল, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, জিতিন প্রসাদ, হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মতো তাবড় তাবড় নেতাদের বিগত দিনে হারিয়েছে কংগ্রেস। এই আবহে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অঙ্ক কষতে হবে খাড়্গেকে। পাশাপাশি গান্ধী পরিবারের সঙ্গে ক্ষমতার ভারসম্য বজায় রাখতে হবে তাঁকে।
এদিকে আসন্ন গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে দলকে জয় এনে দেওয়ার লক্ষ্যে ঘুঁটি সাজাতেও হবে নয়া নির্বাচিত সভাপতিকেই। ইতিমধ্যে গুজরাটে কংগ্রেসের রাজনৈতিক গতিবিধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। গুজরাট নির্বাচনকে নজরে রেখে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছে শাসক বিজেপি। এদিকে বিরোধী পরিসরে কংগ্রেসের জায়গায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে আম আদমি পার্টি। অরবিন্দ কেজরীবাল প্রায় প্রতি সপ্তাহেই গুজরাটে গিয়ে প্রচার সারছেন। এর আগে পঞ্জাবে আম আদমি পার্টির সামনে মুখ থুবড়ে পড়েছিল কংগ্রেস। এই আবহে গুজরাট এবং হিমাচলে কংগ্রেসের নির্বাচনী ফল ভালো করা বড় পরীক্ষা হবে খাড়্গের জন্য।
এদিকে রাজস্থানেও আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে অবশ্য সচিন পাইলট এবং অশোক গেহলটের দ্বন্দ্ব মেটাতে হবে খাড়্গেকে। এদিকে গান্ধী ঘনিষ্ঠ বলে খাড়্গেকে ‘রিমোট কন্ট্রোল’ আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। সেই তকমাও ঝেড়ে ফেলতে দায়িত্ব তাঁর হাতেই। এদিকে রাহুল গান্ধীকে কীভাবে কোন পদে ব্যবহার করা হবে, সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে। এই সবের মাঝেই ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের শক্তিবৃদ্ধি করতে হবে খাড়্গেকে। ২০২৪ সালে যদি বিজেপিকে হারাতে বিরোধী দলগুলিকে এক ছাতার তলায় আনতে হয়, সেই ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে যেভাবে মমতা এবং কেজরীবালরা ‘মুখ’ হয়ে উঠতে চাইছেন, তাতে সমস্যা বাড়ছে কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধীর। সেই সমস্যা দূর করতে ‘ওষুধ’ খুঁজতে হবে বর্ষীয়ান এই নেতাকে। আর এর জন্য সংগঠনকে মজবুত করতে হবে খাড়্গেকে। এই একাধিক চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখেই কংগ্রেস সভাপতির সম্মানে ভূষিত হয়েছেন খাড়্গে।