Sonia Gandhi: ‘স্বস্তিবোধ করছি…’, ২৩ বছরের যাত্রা শেষে খাড়্গের হাতে ডুবন্ত কংগ্রেসের হাল তুলে দিলেন সনিয়া

Sonia Gandhi: ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস সভানেত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন সনিয়া গান্ধী। ২৩ বছর পর ব্যাটন তুলে দিলেন মল্লিকার্জুন খাড়্গের হাতে। বললেন স্বস্তিবোধ করছি।

Sonia Gandhi: 'স্বস্তিবোধ করছি...', ২৩ বছরের যাত্রা শেষে খাড়্গের হাতে ডুবন্ত কংগ্রেসের হাল তুলে দিলেন সনিয়া
প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়ার সঙ্গে বর্তমান সভাপতি খাড়্গে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 26, 2022 | 3:10 PM

নয়া দিল্লি: ২৩ বছর, সবথেকে দীর্ঘ দিন কংগ্রেস সভানেত্রীর পদে ছিলেন সনিয়া গান্ধী। ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সাল, আবার রাহুল গান্ধী ছেড়ে দেওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে ২০১৯-এর অগস্ট থেকে ২০২২। বুধবার (২৬ অক্টোবর) সরকারিভাবে তিনি ব্যাটন তুলে দিলেন নবনির্বাচিত সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের হাতে। আর তারপর, তিনি জানালেন দায়িত্বমুক্ত হয়ে ‘স্বস্তিবোধ’ করছেন। কং সভাপতি হিসেবে শপথ গ্রহণের পর খাড়্গেকে অভিনন্দন জানিয়ে সনিয়া বলেন, “হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে নবনির্বাচিত কংগ্রেস সভাপতি খাড়্গেজিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তিনি অভিজ্ঞ নেতা। একেবারে সাধারণ কর্মী থেকে কঠোর পরিশ্রম করে তিনি এই জায়গায় পৌঁছেছেন। দলীয় কর্মীরা তচাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হবেন।”

কংগ্রেসের নৌকো যে ক্রমশ ডুবছে, বিদায়বেলায় তা স্বীকার করে নিতে দ্বিধা করেননি সনিয়া। তিনি বলেন, “অতীতেও কংগ্রেস অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ এবং বিপদের সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস হারেনি। আমরা লড়াই করব এবং সামনের দিনে সফল হবই। আমাকে এতদিন ধরে সমর্থন করার জন্য আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাই। কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাব মধুসূদন মিস্ত্রীকেও।” সনিয়া আরও জানান, কংগ্রেস নিছক একটি রাজনৈতিক দল নয়, বরং বছরের পর বছর ধরে এটা একটা আন্দোলনের নাম। কংগ্রেসের সামনে আজ সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল, গণতন্ত্র বিরোধী হুমকিগুলির মোকাবিলা করা।

সনিয়া দাবি করেছেন, নিষ্ঠার সঙ্গে তিনি দলের সেবা করেছেন। প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী বলেন, “কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে আমি আমার সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে কর্তব্য পালন করেছি। এই দায়িত্ব থেকে মুক্ত হয়ে স্বস্তিবোধ করছি। এত বছর ধরে আপনারা আমায় যে সম্মান জানিয়েছেন, তার ভার বহন করাও অনেক বড় দায়িত্ব ছিল। আজ থেকে এই দায়িত্বের ভার গেল খাড়্গেজির কাঁধে। পরিবর্তনই প্রকৃতির নিয়ম।”

১৯৯৮ সালে যখন দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সনিয়া, সেই সময়ও কংগ্রেস দল ছিল টালমাটাল অবস্থায়। একের পর এক নেতা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। দলের শক্তিক্ষয় অব্যাহত ছিল। সেই সঙ্গে তাঁকে লড়তে হয়েছিল বিদেশিনী তকমার বিরুদ্ধেও। এই অবস্থায় দলের হাল ধরেছিলেন সনিয়া। সভানেত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম ভাষণে তিনি বলেছিলেন, “আমাদের প্রত্যাশার ক্ষেত্রে বাস্তববাদী হতে হবে। আমাদের পার্টির পুনরুজ্জীবন একটি দীর্ঘ একটানা প্রক্রিয়া হতে চলেছে। আমাদের প্রত্যেকের আন্তরিকভাবে পরিশ্রম করতে হবে।” ছয় বছর পর, ২০০৪ সালে দলকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন সনিয়া।

আজ, যখন তিনি মল্লিকার্জুন খাড়্গের হাতে ব্যাটন তুলে দিলেন, সেই সময়ও পরিস্থিতি কিছুটা একরকমই। বা বলা ভাল আরও খারাপ। সেই নেতাদের দলত্যাগ, দলের শক্তিক্ষয়ের ছবি দেখা যাচ্ছে। ১৯৯৮ সালে সনিয়া দায়িত্ব নেওয়ার সময় কংগ্রেস ভারতের মাত্র তিনটি রাজ্যে এককভাবে ক্ষমতায় ছিল – মধ্য প্রদেশ, ওড়িশা এবং মিজোরাম। বর্তমানে কংগ্রেস ক্ষমতায় রয়েছে মাত্র দুটি রাজ্যে – রাজস্থান এবং ছত্তীসগঢ়। তার উপর খাড়্গেকে শুধু বিজেপির মোকাবিলা করতে হবে না। নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাথা তুলেছে কোথাও আম আদমি পার্টি, কোথাও তৃণমূল কংগ্রেস, কোথাও টিআরএস। সেই সঙ্গে দলের মধ্যে জুনিয়র বনাম সিনিয়র দ্বন্দ্বও রয়েছে। যার সর্বশেষতম নিদর্শন দেখা গিয়েছে রাজস্থানে – অশোক গেহলট বনাম সচিন পাইলট।