Chhattisgarh: মাওবাদিদের মোকাবিলায় তৃতীয় লিঙ্গ, ভারতে এই প্রথমবার
Chhattisgarh Transgender: ভারতে প্রথমবার, ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী যোদ্ধা বাহিনীর মোকাবিলা করতে বিশেষ পুলিশ বাহিনীতে সামিল করা হল তৃতীয় লিঙ্গ অর্থাৎ রূপান্তরকামীদেরা।
রায়গঢ়: এবার মাওবাদী যোদ্ধা বাহিনীর মোকাবিলা করবেন তৃতীয় লিঙ্গ অর্থাৎ রূপান্তরকামীরাও। ভারতে এই প্রথম কোনও রাজ্য পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ করা হল তাঁদের। সমাজের প্রান্তিক তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়কে এই দুর্দান্ত সম্মান দিল ছত্তীসগঢ় সরকার। সম্প্রতি, রাজ্যের বস্তার বিভাগের সাতটি মাও অধ্যূষিত জেলায়, মাওবাদীদের মোকাবিলা করার জন্য ‘বস্তার ফাইটার ফোর্স’ নামে এক নয়া বাহিনী গঠন করা হয়েছে। এই বাহিনীতে স্থানীয় যুবদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বস্তার পুলিশ বিভাগের সাতটি জেলা থেকে মোট ২১০০ জনকে এই বাহিনীতে নিয়োগ করেছে। তাঁদের মধ্যেই আছেন তৃতীয় লিঙ্গের ৯ জনও। এবার, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হবেন তাঁরাও। পাহাড়, বন এবং নদী-নালায় ঘুরে ঘুরে সন্ধান করবে মাও ঘাঁটির। তারপর আস্তানায় ঢুকে তাদের করবে চ্যালেঞ্জ।
কঠিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে ‘বস্তার ফাইটার ফোর্সে’ জায়গা করে নেওয়া নির্বাচিত প্রার্থীদের। মাওবাদীদের মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা প্রয়োদজন। তার ভিত্তিতেই এই বাহিনীর সদস্যদের বেছে নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে মোট ৫৩,০০০ আগ্রহী প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচিত হয়েছেন মাত্র ২১০০। এতেই স্পষ্ট বাহিনীকে জায়গা করে নেওয়া কতটা চ্যালেঞ্জের ছিল। স্ত্রীলিঙ্গ এবং পুংলিঙ্গের জন্য যোগ্যতার মাপকাঠিতে কোনও ভেদাভেদ করা হয়নি। তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও একই মাপকাঠি ছিল।
‘বস্তার ফাইটার ফোর্সে’ যে ৯জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ জায়গা করে নিয়েছেন তাঁরা হলেন – দিব্যা, দামিনী, সন্ধ্যা, সানু, রানি হিমাংশি, রিয়া, সীমা এবং বরখা। এঁদের মধ্যে ৮ জন কাঙ্কের জেলার বাসিন্দা এবং অপরজন বস্তার জেলার। এই ৯ জন ছত্তীসগঢ় পুলিশে চাকরি পাওয়ায়, সামগ্রিকভাবে রাজ্যের রূপান্তরকামী সমাজে আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে। এই ৯ জনের অন্যতম বরখা বলেছেন, “আমাদের সম্প্রদায়কে সমাজের মূল স্রোতে যুক্ত করার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা দরকার। আমরা সবাই স্বাভাবিক জীবন চাই। জীবিকার প্রশ্নটাই আমাদের সামনে সবচেয়ে বড়।”
রূপান্তরকামী বরখা ওরফে অনিলের, এই বাহিনীতে সামিল হওয়ার লড়াইটা অত্যন্ত কঠিন ছিল। বরখা নপুংসক সমাজের মানুষ। এই সমাজে গুরু-শিষ্য ঐতিহ্য রয়েছে। সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাঁর পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করতে যাওয়াটা, তাঁর সমাজর প্রবীণদের ক্ষিপ্ত করে তুলেছিল। তাঁর মনোবল ভাঙতে, ছোট করে চুল কেটে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তাঁকে টলানো যায়নি। তার আগে বস্তার রেড ক্রসের সভাপতি তৃতীয় লিঙ্গের দুইজন মানুষকে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যমে সমাজের মূল স্রোতে যুক্ত করার লক্ষ্যে বস্তার রেড ক্রস ইনস্টিটিউটে সহকারী হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। তাঁদেরই একজন ছিলেন বরখা ওরফে অনিল।