মুম্বই: বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের হাসপাতালে আগুন লেগে পুড়ে মৃত্যু হল রোগীর। এই দুর্ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসল ঠাকরে প্রশাসন। শনিবার মহারাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে আগুন (Fire) লাগে। আইসিইউ(ICU)-তেই পুড়ে মৃত্যু হয় ১১ জন রোগীর। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে রাতারাতি তৈরি করা হল একটি কমিটি (Inquiry panel)। ডিভিশনাল কমিশনারের নেতৃত্ত্বাধীনে এই কমিটি তদন্ত করবে বলে জানা গিয়েছে।
গতকালই সকাল ১১টা নাগাদ মহারাষ্ট্র(Maharashtra)-র আহমেদনগর জেলা হাসপাতালে আগুন লাগে। জেলাশাসক রাজেন্দ্র ভোঁসলে জানান, যেখানে আগুন লাগে সেই ওয়ার্ডটি কোভিড রোগীদের চিকিৎসার (COVID Ward) জন্যই ব্য়বহার হচ্ছিল। মোট ১৭ জন রোগী সেখানে ভর্তি ছিলেন বলেই খবর। শনিবারের ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ১১ জন মারা গিয়েছেন। বাকি রোগীদের অন্য হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এই অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray) শোক প্রকাশ করেন এবং গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন। জানা গিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই জেলা কালেক্টরকে তদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নাসিকের পুলিশ কমিশনার দীপক পাণ্ডে বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪এ অর্থাৎ অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ডিসিপি বা বড় অফিসার ব়্যাঙ্কের কোনও আধিকারিক গোটা ঘটনার তদন্ত করবেন।”
এদিকে, আহমেদনগরের মন্ত্রী হাসান মুসরিফও বলেন, “সরকারের তরফে বারংবার হাসপাতালগুলিকে অডিট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।” যদিও আহমেদনগর পুরসভার দমকল বিভাগের আধিকারিক জানান, সম্প্রতিই হাসপাতালে একটি অডিট করা হয়েছিল অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে এবং সেই সময়ে যাবতীয় ব্যবস্থা মজুত ছিল। গতকাল আগুন লাগলে হাসপাতালের কর্মীরা দুটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে, কিন্তু ততক্ষণে আগুন এতটাই ছড়িয়ে পড়েছিল যে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
তিনি জানান, আগুন ছড়িয়ে পড়তেই গোটা ওয়ার্ড কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়। সেখানে শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। ওই পরিস্থিতিতে আগুন নেভানো যথেষ্ট কষ্টকর ছিল। গতকাল প্রায় দেড়-দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছিল যে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে। পরে জানা যায়, অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ন্ত্রণকারী একটি ইনভার্টার বা ভেন্টিলেটরের মনিটরে যান্ত্রিক ত্রুটি হয় এবং সেখান থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এয়ার কন্ডিশনিং ব্যবস্থা থেকেও শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লাগার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে। তদন্তকারী দলের রিপোর্টেই আগুন লাগার আসল কারণ জানা যাবে।
গতকালের অগ্নিকাণ্ড ও রোগী মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি টুইট করে লেখেন, “আহমেদনগরে সিভিল হাসপাতালে আগুন লাগার ঘটনায় আমি অত্যন্ত ব্যাথিত। এই দুঃখের সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির প্রতি আমার সমবেদনা রইল। যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁরা দ্রুত সেরে উঠুন, এই কামনা করি।”