Russia-Ukraine Conflict : রাশিয়া-ইউক্রেনে যুদ্ধের মাঝে বাজারে আগুন! মধ্যবিত্তের চিন্তা বাড়িয়ে ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে ভোজ্য তেলের দাম
Oil Price : রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ভারতে ৩,৫০,০০০ টনেরও বেশি রান্নার তেলের আমদানি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ফলে ভারতে বাড়তে পারে ভোজ্য তেলের দাম।
নয়া দিল্লি : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাধলে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাড়ার সম্ভাবনা ছিল প্রবল। ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা করার সঙ্গে সঙ্গেই শেয়ার বাজারে ধস নামে। এর ফলে ইতিমধ্যে বেড়েছে সোনার দাম। তবে এইবার কি ভোজ্য তেলের দাম বাড়তে পারে? এই প্রশ্ন ঘিরে বেড়েছে জল্পনা। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ভারতে ৩,৫০,০০০ টনেরও বেশি রান্নার তেলের আমদানি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কারণ রসদ এবং লোডিং বিভিন্ন বন্দরে আটকে রয়েছে। ভারত সূর্যমুখী তেলের বিশ্বের বৃহত্তম ক্রেতা। ভারত তার চাহিদার ৬০ শতাংশের বেশি সূর্যমুখী তেল আমদানি করে। এছাড়াও পাম এবং সয়াবিন তেলের শীর্ষ ক্রেতা।
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে ইন্টারন্যাশনাল সানফ্লাওয়ার অয়েল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সন্দীপ বাজোরিয়া জানিয়েছেন,ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে ডেলিভারির জন্য দেশের ব্যবসায়ীরা ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে ৫,৫০,০০০ টন সূর্যমুখী তেল আমদানির চুক্তি করেছেন। বন্দর থেকে ১,৮০,০০০ টন রান্নার তেল কোনওভাবে বন্দর থেকে বেরিয়ে গেলেও বাকি তেলের কী হবে তা বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাজোরিয়া।
রান্নার তেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা
বিশ্বের সূর্যমুখী তেলের প্রায় ৮০ শতাংশই রপ্তানি করে ইউক্রেন এবং রাশিয়া। ফলে যুদ্ধের কারণে তেলের সরবরাহ ব্যাহত হলে দেশে রান্নার তেলের দাম বাড়তে পারে। ভোক্তাদের খাবারের দাম ইতিমধ্যেই ১৪ মাসের মধ্যে জানুয়ারিতে দ্রুত গতিতে বেড়েছে। ফলে মধ্যবিত্তের ভাঁড়ারে টান পড়েছে।
ভারত গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১.৮৯ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত রান্নার তেল কিনেছে। এর মধ্যে ৭৪ শতাংশ ইউক্রেন সরবরাহ করেছে। যেখানে প্রায় ১২ শতাংশ আমদানি করা হয়েছে আর্জেন্টিনা এবং রাশিয়ার থেকে। গত দুই বছরে আকাশ ছুঁয়েছে উদ্ভিজ্জ তেলের মূল্য। যা কুকি তৈরি করা থেকে শুরু করে আলুর চিপস ভাজা থেকে শ্যাম্পু বানানো পর্যন্ত সব কিছুর জন্য ব্যবহৃত হয় এই তেল। সরবরাহে সীমাবদ্ধতার কারণে দুই বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে এই তেলের দাম। সরবরাহের ঘাটতির কারণে এই সপ্তাহে পাম এবং সয়াবিন তেলের দাম সর্বোচ্চ হয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি যত দিন যাচ্ছে ততই জটিল হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলো সতর্ক করেছে যে যুদ্ধ চলতে থাকলে কিয়েভের পতন হতে পারে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে বেশ কিছু রান্নার তেলের কোম্পানি তাদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। বানজি লিমিটেড (Bunge Ltd.) দুটি অয়েলসিড প্রসেসিং ফেসিলিটিতে ব্যবসা বন্ধ করেছে, উইলমার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (Wilmar International Ltd) -এর দেশে তার উদ্ভিজ্জ তেল ইউনিট বন্ধ করে দিয়েছে। আর্চার-ড্যানিয়েলস-মিডল্যান্ড কোম্পানি (Archer-Daniels-Midland Co.) কর্নোমস্কে (Chornomorsk) একটি তৈলবীজ ক্রাশিং প্ল্যান্ট বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারতে এর প্রভাব?
বাজোরিয়া রয়টার্সকে বলেছেন, “বিশ্বজুড়ে সূর্যমুখী তেলের ঘাটতি হতে চলেছে এবং দাম বাড়বে।” তিনি আরও বলেছেন যে, ভারতীয় আমদানিকারকরা অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানোর জন্য পাম এবং সয়াবিন তেল কেনার আগে প্রায় এক সপ্তাহ অপেক্ষা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মস্কো এবং কিয়েভের মধ্যে চলমান যুদ্ধটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপের সবচেয়ে খারাপ নিরাপত্তা সংকটগুলির মধ্যে একটি। রিপোর্ট অনুযায়ী, ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদল এখন ইউক্রেনীয়-বেলারুশিয়ান সীমান্তে আলোচনার জন্য রাশিয়ান প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করতে সম্মত হয়েছে।