COVID Vaccination: খেল খতম করোনার! ১০০ কোটি টিকাকরণের দোরগোড়াতেই দারুণ খবর বিশেষজ্ঞদের মুখে

COVID-19 Endemic: করোনা টিকাকরণের সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে নিম্নমুখী হয়েছে দেশের করোনা সংক্রমণও। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অন্যতম কারণ হল হার্ড ইমিউনিটি।

COVID Vaccination: খেল খতম করোনার! ১০০ কোটি টিকাকরণের দোরগোড়াতেই দারুণ খবর বিশেষজ্ঞদের মুখে
বুস্টার ডোজ়ে অনুমোদন আমেরিকায়। ছবি: PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 20, 2021 | 2:58 PM

নয়া দিল্লি: নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কথা ছিল, ডিসেম্বরের শেষ ভাগের মধ্যেই দেশের ১০০ কোটি জনগণকে করোনা টিকা (COVID Vaccination) দেওয়া হবে। অক্টোবর শেষ হওয়ার আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চলেছে কেন্দ্র। মঙ্গলবারই দেশে টিকা প্রাপকের মোট সংখ্যা ছিল ৯৯ কোটি ১২ লাখ ৮২ হাজার ২৮৩। অতএব আজই ১০০ কোটি করোনা টিকার লক্ষ্য়মাত্রা পূরণ হয়ে যাবে। এরইমাঝে আরও খুশির খবর শোনালেন গবেষকরা। একাধিক গবেষকের দাবি, দেশে করোনা সংক্রমণ হলেও অনেকটাই শক্তি হারিয়েছে এই মারণ ভাইরাস। করোনার শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে (Endemic of COVID-19)।

২০২০ সালের মার্চ মাস। দেশে তখন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে চিন থেকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া এই মারণ ভাইরাস। সংক্রমণ রুখতে মাস্ক, শারীরিক দূরত্বের মতো স্বাস্থ্যবিধির পাশাপাশি লকডাউন(Lockdown)-র মতো বড় পদক্ষেপও নিতে হয়েছিল সরকারকে। গোটা বিশ্ব যখন সংক্রমণ সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে, সেই সময় দেশের বৈজ্ঞানিকরা করোনার প্রতিষেধক (COVID Vaccine) আবিষ্কারের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশিই বছর শেষের মধ্যেই দেশে তৈরি হয়ে গেল দুটি করোনা টিকা- কোভিশিল্ড (Covishield) ও কোভ্যাক্সিন (Covaxin)।

চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু এই গণটিকাকরণ অভিযান বিশ্বের অন্যতম বড় টিকাকরণ অভিযান। কেন্দ্রের তরফে প্রথম ধাপে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রথম সারির যোদ্ধাদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে ষাটোর্ধ্ব ও ৪৫ উর্ধ্ব কো-মর্ডিবিটিযুক্ত ব্যক্তিদের করোনা টিকা দেওয়া হয়। বর্তমানে ১৮ উর্ধ্বদের টিকাকরণ চলছে। এখনও অবধি ৭০ কোটি মানুষ কেবল করোনা টিকার প্রথম ডোজ়ই পেয়েছেন। ২৯ কোটি বাসিন্দা প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ়-দুটিই পেয়েছেন। আগামী মাস থেকেই শিশুদের টিকাকরণও শুরু হতে পারে জ়াডাস ক্যাডিলার জ়াইকোভ-ডি ও ভারত বায়োটেক সংস্থার কোভ্যাক্সিনের হাত ধরে।

দেশের এই গণটিকাকরণ অভিযানকে সফল করতে কেন্দ্রের তরফে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি। বিনামূল্যে টিকাকরণের ঘোষণা এই কর্মসূচির অন্যতম বড় পদক্ষেপ ছিল। এছাড়াও বয়স্ক ও যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে জানেন না, তাদের জন্য সরাসরি টিকাকেন্দ্রে গিয়ে নাম রেজিস্ট্রেশনের মতো সুবিধাও করে দেওয়া হয়েছে।

তবে করোনা টিকাকরণের সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে নিম্নমুখী হয়েছে দেশের করোনা সংক্রমণও। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অন্যতম কারণ হল হার্ড ইমিউনিটি। সমস্ত রাজ্যেই অধিকাংশ মানুষই করেনা টিকার একটি বা দুটি ডোজ় পেয়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে। গত মাসেই ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ কন্ট্রোল(NCDC)-র ডিরেক্টর সুজিত সিং বলেছিলেন, “করোনা প্যানডেমিক নিয়ে আমরা যাই-ই আগাম সতর্কতা দিয়েছিলাম, তা অনেকাংশেই ভুল প্রমাণ করে আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছিল সংক্রমণ, তবে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই আমরা এন্ডেমিক পর্যায়ে পৌঁছে যাব।”

ডঃ সিংয়ের মতে, টিকাকরণই বর্তমানে করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে সব থেকে ভাল সুরক্ষা ব্যবস্থা। তিনি বলেন, “যদি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৭০ শতাংশ হয়, তবে দেশের প্রায় ৫০ কোটি জনগণের মধ্যে ইতিমধ্যেই করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে। ভ্যাকসিনের একটি ডোজ় প্রায় ৩০ শতাংশ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেয়, অর্থাৎ দেশের প্রায় ৩০ কোটি জনগণ, যারা ভ্যাকসিনের একটি ডোজ় পেয়েছেন, তাদের মধ্যেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে।”
দু’মাস আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(World Health Organization)-র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথনও জানিয়েছিলেন, ভারত ক্রমশ সংক্রমণের এমন একটা পর্যায়ে প্রবেশ করছে যাকে এই ভাইরাসের একপ্রকার ‘শেষের শুরু’ বলা যায়। ইংরাজিতে ভাইরাসের এই পর্যায়কে ‘এন্ডেমিক স্টেজ’ বলে। ভাইরাসের প্রভাব ক্রমশ বিলিন হতে শুরু হওয়ার আগের পর্যায় হিসেবে এই স্টেজ পরিচিত। অতিমারি বা এপিডেমিক পর্যায়ে সাধারণত ভাইরাস একটা জাতির উপর যেভাবে চেপে বসে, ‘এন্ডেমিক’ পর্যায়ে এসে ভাইরাসকে সঙ্গী করেই বাঁচতে শিখে যায় মানুষ। ভারতও ক্রমশ সেই পথেই অগ্রসর হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: Lakhimpur Case Update: ‘রাত ১টা অবধি অপেক্ষা করেছি আমরা’, লখিমপুরকাণ্ডে ফের ‘সুপ্রিম’ সমালোচনার মুখে যোগী সরকার