নয়া দিল্লি: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় লালফৌজের “একতরফা ও উস্কানিমূলক” আচরণের জবাব দৃঢ়ভাবে দেওয়া হয়েছে, বার্ষিক রিপোর্টে এমনটাই জানাল প্রতিরক্ষামন্ত্রক (Defence Ministry)। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, চিনাবাহিনীর যেকোনও ধরনের অভিযানকেই প্রতিহত করতে ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রস্তুত। আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শোধরানোর প্রচেষ্টাও চলছে।
১৫ জুন গালওয়ান (Galwan) উপত্যকায় ভারত ও চিনের মধ্যে যে সংঘর্ষ (India-China Clash) হয়, তা বিগত দশকে অন্যতম গুরুতর সামরিক দ্বন্দ্ব বলে অ্যাখ্যা দেওয়া হয়। সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের পাশাপাশি চিনা সেনাবাহিনীরও জওয়ানদের মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি করা হয় এই রিপোর্টে।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (Line of Actual Control) দুই দেশের সংঘর্ষের বিষয়ে বলা হয়, “ওই অঞ্চলে একাধিকবার চিনা সেনাবাহিনী জোর করে আগ্রাসনের চেষ্টা চালিয়েছে, তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে তা দৃঢ় ও অনাগ্রাসী ভঙ্গিতে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী চুক্তি অনুযায়ী যাবতীয় নিয়মকানুন মেনে চললেও চিনের সেনাবাহিনী বিশালসংখ্যক সেনা মোতায়েন করে ও আধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলার চেষ্টা করেছে।”
আরও পড়ুন: গণধর্ষণের পর যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে, পাঁজর ভেঙে খুন, নির্ভয়াকাণ্ডের স্মৃতি উসকে দিল যোগী রাজ্য
বিগত আটমাস ধরে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাকে ঘিরে সংঘর্ষের পরস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি দুই দেশই এই সমস্যার সমাধানে সেনা ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনায় বসে। দুই দেশের তরফেই ধীরে ধীরে এলএসি থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাবে সম্মতি জানানো হলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, ভারতীয় বায়ু সেনার সাহায্যে অল্প সময়েই প্রয়োজনীয় সেনা মোতায়েন, রেশন ও যাবতীয় অস্ত্র পৌঁছে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, গালওয়ান সংঘর্ষের পর লালফৌজকে যোগ্য জবাব দিয়ে গত ২৮ ও ২৯ অগস্ট ভারতীয় সেনা প্যানগং লেকের দক্ষিণ অঞ্চল দখল করে নেয়।
রিপোর্টে আরও জানানো হয়, লাদাখ উপত্যকায় প্রবল ঠান্ডার সঙ্গে মোকাবিলা করতে যাবতীয় প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। চিনা সেনাবাহিনীর কোনও ধরনের আগ্রাসনকেই রুখতে প্রস্তুত ভারতীয় সেনা। বিগত বছরগুলিতেও ভারতীয় সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখা ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় অসংখ্য অনুপ্রবেশের মোকাবিলা করেছে। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গি দমন করা হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরে (Jammu-Kashmir) জঙ্গিদমন সম্পর্কেও রিপোর্টে বলা হয় যে, একদিকে যেমন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনাবাহিনীকে প্রতিহত করেছে ভারতীয় সেনা। অন্যদিকে উপত্যকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতেও নিরাপত্তাবাহিনী টানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানের অনুপ্রবেশের চেষ্টা ও জঙ্গি উপদ্রবকেও কড়া হাতে দমন করেছে সেনাবাহিনী। বর্তমানে উপত্যকায় জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়ার হার যেমন হ্রাস পেয়েছে, তেমনই সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনের সংখ্যাও কমে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামিকাল “ট্রেলার”, পুরো সিনেমা প্রজাতন্ত্র দিবসে, হুঁশিয়ারি কৃষকদের