নয়া দিল্লি: ক্রমাগত রূপ বদলাচ্ছে করোনা সংক্রমণ(COVID-19)। কখনও অতি সংক্রামক, কখনও আবার মৃদু উপসর্গ, করোনার নানা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে সংক্রমণেও বিভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। করোনা পরীক্ষায় কোন টেস্ট (COVID Test) কতটা কার্যকরী এবং একান্তবাসে থাকার প্রয়োজনীয়তা নিয়েই ফের একবার সাধারণ মানুষকে সচেতন করল কেন্দ্র। বুধবার কেন্দ্রের সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, করোনা ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার তিনদিন পর থেকে ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন (Rapid Antigen) ও হোম -অ্য়ান্টিজেন টেস্ট(Home Antigen Test)-র মাধ্যমে সংক্রমণের টের পাওয়া যায়।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, ল্যাটেরাল ফ্লো টেস্ট, যার অন্তর্গত ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন ও হোম -অ্য়ান্টিজেন টেস্ট, তার মধ্যমে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার তিনদিন পর থেকে আটদিন অবধি সংক্রমণের উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়। অন্যদিকে, আরটি-পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে ২০ দিন অবধি শরীরে করোনা সংক্রমণ হয়েছে কিনা, তা জানা যায়।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের ডিরেক্টর জেনারেল ডঃ বলরাম ভার্গব বলেন, “ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার পর প্রথম দিনই যদি করোনা পরীক্ষা করা হয়, তবে রিপোর্ট নেগেটিভই আসবে, তা সে যে টেস্টই করা হোক না কেন। শরীরে ভাইরাস বিস্তারের জন্য সময় লাগে, এটিকে ল্যাটেন্ট পিরিয়ড বলা হয়। সংক্রমণের তিনদিন থেকে তা ল্যাটেরাল ফ্লো টেস্টের মাধ্যমে তা নির্ণয় করা যায়। আটদিন অবধি এই টেস্ট কার্যকরী,কারণ এতটা সময় ধরেই শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ ছড়ায়। সেই কারণেই সংক্রমণের সাতদিনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। একান্তবাসে থাকা কিংবা হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই সাতদিনের সময়সীমার উপরই জোর দেওয়া হচ্ছে। আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করানো হলে, সংক্রমণের আটদিন পরেও রিপোর্ট পজেটিভই আসবে, কারণ শরীরে কিছু আরএনএ-র অংশ থেকেই যায়।”
ডঃ বলরাম ভার্গব জানান, সরকারের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি, বয়স্ক বা কো-মর্ডিবিটিযুক্ত ব্যক্তি, তাদের করোনা পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন নেই। যারা আন্তঃরাজ্য যাতায়াত করছেন, তাদের ক্ষেত্রেও করোনা পরীক্ষা করার কোনও প্রয়োজন নেই।
এছাড়াও যারা উপসর্গহীন রোগী, কিংবা হোম আইসোলেশনের গাইডলাইন মেনে ৭ দিন একান্তবাসে থেকেছেন, তাদের করোনা পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন নেই। যে সমস্ত করোনা সংক্রমিতদের বাড়ি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, তাদেরও করোনা পরীক্ষা করানোর কোনও প্রয়োজন নেই। তবে আক্রান্তের সংস্পর্শে এলে সাতদিনের একান্তবাসে থাকার নিয়ম যাতে মেনে চলা হয় এবং সর্বক্ষণ মাস্ক পরা হয়, এই বিধিগুলি মেনে চলার কথা বলেন আইসিএমআরের প্রধান।
আইসিএমআরের তরফে যে করোনা পরীক্ষার নতুন নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে, তা অনুযায়ী উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের যদি হোম অ্যান্টিজেন বা ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তবে তাদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে।
আরটি-পিসিআর, ট্রুন্যাট (TrueNat), সিবিন্যাট, ক্রিসপিআর, আরটি-এলএএমপি, ব়্যাপিড মলিকিউলার টেস্টিং বা ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন কিনা, তা জানা যেতে পারে।