‘থানা-আদালতে যাবেন আদিবাসীরা’, দ্রৌপদীর মনোনয়ে গর্বিত তাঁর গ্রাম, আশাবাদীও

Draupadi Murmu: দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি হলে, প্রশাসনিক ব্য়বস্থার উপর আদিবাসী জনগণের আস্থা জন্মাবে। এমনটাই মনে করছেন, তাঁর কন্যা ইতিশ্রী মুর্মু।

'থানা-আদালতে যাবেন আদিবাসীরা', দ্রৌপদীর মনোনয়ে গর্বিত তাঁর গ্রাম, আশাবাদীও
মেয়ে ইতিশ্রীর সঙ্গে দ্রৌপদী মুর্মু
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 23, 2022 | 7:27 PM

ভুবনেশ্বর: সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই থানা-আদালতকে ভয় পান আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। মামলা-মোকদ্দমা থেকে দূরেই থাকতে চান তাঁরা। কারণ, প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে একটা অবিশ্বাস রয়েছে তাঁদের মনে। কিন্তু, দ্রৌপদী মুর্মু তাঁদের ঘরেরই মেয়ে। আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তিনি এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। শেষ পর্যন্ত রাইসিনার দৌড়ে তিনিই বাজিমাত করলে, প্রশাসনিক ব্য়বস্থার উপর আদিবাসী জনগণের আস্থা জন্মাবে। এমনটাই মনে করছেন, দ্রৌপদী মুর্মুর কন্যা ইতিশ্রী মুর্মু। তবে শুধু ইতিশ্রী একাই নন, একই সঙ্গে এই গর্ব এবং আশার অনুভূতির অনুরণন শোনা যাচ্ছে ওড়িশার ময়ুরভঞ্জ জেলার রাইরঙ্গপুর পৌর এলাকার প্রতিটি বাড়ি থেকে। এখানেই বাড়ি ৬৪ বছর বয়সী রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর।

রাইরঙ্গপুর পৌরসভার অন্তর্গত উপড়বেড়া পঞ্চায়েত এলাকাতেই জন্ম হয়েছিল দ্রৌপদী মুর্মুর। এই পঞ্চায়েত এলাকায় মোট সাতটি গ্রাম রয়েছে। মোট জনসংখ্যা ১৫,০০০। বেশিরভাগই আদিবাসী এবং ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই রাইসিনার দৌড়ে দ্রৌপদী মুর্মুর মনোনয়নে এলাকাবাসীরা দারুণ আনন্দিত। পঞ্চায়েত প্রধান, যমুনা হেমব্রম জানিয়েছেন, এর আগে বিধায়ক এবং মন্ত্রী হিসাবেও দ্রৌপদী মুর্মু এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক সহায়তা করেছিলেন। ওই এলাকায় আগে ‘পাকা’ রাস্তা ছিল না। নিজের উদ্যোগে উপরবেড়ায় পাকা রাস্তা এবং একটি সেতু নির্মাণের কাজ করেছিলেন দ্রৌপদী মুর্মু। রাষ্ট্রপতি হলেও তিনি সেভাবেই এলাকাবাসীর উন্নয়নে কাজ করবেন বলে আশা করছেন যমুনা হেমব্রমরা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্থায়ী ডাক্তার, যুবকদের জন্য চাকরি, মেয়েদের জন্য একটি হোস্টেল এবং একটি রেলস্টেশন দরকার। এই বিষয়ে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করব তাঁকে, যাতে স্থানীয়রা উপকৃত হন। আমরা তাকে পেয়ে (রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে) গর্বিত’।

কন্যা ইতিশ্রী আরও বলেছেন, ‘বহু সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি (দ্রৌপদী মুর্মু) আজকের জায়গায় পৌঁছেছেন। বহু সামাজিক বাধা ভেঙে এগোতে হয়েছিল তাঁকে। ৯০ দশকের আগে, তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে একা একাই রাজধানী শহর ভুবনেশ্বরে গিয়েছিলেন। গ্রামে সেই সময় কোনও রাস্তা ছিল না। গুগল ম্যাপের মতো অ্যাপের সাহায্য পাওয়ার তো কোনও প্রশ্নই ছিল না। সমস্ত কিছু একার হাতে সামলেছিলেন তিনি। এখন তিনি ভারতের মানুষকে এবং আদিবাসী জনতার জন্য কাজ করতে চান।’

ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের পদ থেকে ২০২১ সালে অবসরের পর, গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন দ্রৌপদী। বুধবার সকালে প্রতিদিনের মতো স্থানীয় শিব মন্দিরে ঝাড়ুও দেন। সূত্রের খবর, নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে জনগণের সঙ্গে মেলামেশা কমাতে বললেও, রাজি হননি তিনি। রাতেই, গ্রামের বাড়ি থেকে গাড়িতে ২৮৫ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বরে চলে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে, সেখান থেকে বিমানে তিনি নয়া দিল্লি এসেছেন।