Jammu And Kashmir: সেনার গুলিতে নিহত ছেলে, জঙ্গি হামলায় শহিদ বাবা! এক কাশ্মীরি পরিবারের ট্র্যাজিক কাহিনি

Jammu And Kashmir: সদ্য জঙ্গি হামলায় শহিদ হয়েছেন বাবা। দুই বছর আগে সেনার অভিযানে নিহত হয়েছিল ছেলে। বাবা-ছেলের কাহিনিটা অদ্ভুত হলেও কাশ্মীর উপত্যকার প্রেক্ষিতে অস্বাভাবিক নয়।

Jammu And Kashmir: সেনার গুলিতে নিহত ছেলে, জঙ্গি হামলায় শহিদ বাবা! এক কাশ্মীরি পরিবারের ট্র্যাজিক কাহিনি
অ্যাসিস্ট্য়ান্ট সাব-ইন্সপেক্টর মুস্তাক আহমেদ লোন এবং তাঁর ছেলে আকিব মুস্তাক লোন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 15, 2022 | 3:03 PM

শ্রীনগর:  গত মঙ্গলবার (১২ জুলাই) জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে এক জঙ্গি হামলায় শহিদ হয়েছেন অ্যাসিস্ট্য়ান্ট সাব-ইন্সপেক্টর মুস্তাক আহমেদ লোন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শ্রীনগরের লাল বাজার এলাকায় জঙ্গিরা তাঁদের নাকা পার্টির উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল। ওই ঘটনায় এএসআই লোন নিহত হন, আরও দুই পুলিশ কর্মী গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তবে, তাঁর মতো শহিদের তকমা জোটেনি তাঁর পুত্র আকিব মুস্তাক লোনের। বরং, নিরাপত্তা বাহিনী দাবি করেছিল এএসআই মুস্তাক আহমেদ লোনের পুত্র ছিল একজন সন্ত্রাসবাদী! এ এক বাবা-ছেলের অদ্ভুত কাহিনি, তবে কাশ্মীর উপত্যকার প্রেক্ষিতে অস্বাভাবিক গল্প নয়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, ওই ঘটনার আগে পর্যন্ত শ্রীনগরের লাল বাজার এলাকায় কোনও বিপদের আভাস ছিল না। রোজকার মতো বাজার খোলা ছিল। রাস্তায় ভিড়, যানবাহনের জটলা ছিল। সন্ধ্যা নেমে আসছে তাই, মানুষের মধ্যে বাড়ি যাওয়ার তাড়া ছিল। এরই মধ্যে পুলিশের ওই নাকা পার্টির সদস্যদের লক্ষ্য করে ছুটে এসেছিল মুহূর্মুহু গুলি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুলিবিদ্ধ হন ৫৬ বছর বয়সী এএসআই মুস্তাক আহমেদ লোন ও আরও দুই পুলিশকর্মী। পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী তাদের ধরতে পারার আগেই জঙ্গিরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে গিয়েছিল। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় এএসআই লোনের।

তবে এটাই লোন পরিবারে প্রথম মৃত্যু নয়। গত কয়েক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার ধাক্কা খেল, দ্বিতীয় মৃত্যুর সাক্ষী হল এই পরিবার। লোন পরিবারের আদি বাড়ি দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাম জেলায়। যে কুলগাম গত কয়েক দশক ধরে ব্যাপক অশান্তির সাক্ষী। জঙ্গি তৎপরতায় বারবার যে জেলার নাম উঠে এসেছে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে, এএসআই লোনের ছেলে আকিব মুস্তাক কুলগামেরই অস্থাল গুদ্দার এলাকায় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছিল।

পুলিশ দাবি করেছিল আকিব একজন জঙ্গি। সরকারি বয়ানে বলা হয়েছিল,’সে একটি পিস্তল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করেছিল এবং একটি গ্রেনেড ছুড়েছিল।’ কিন্তু লোন পরিবার বরাবর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, আকিব জঙ্গি হতেই পারে না। সে চণ্ডীগঢ়ের একটি কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে নিজের গ্রামে ফিরে এসেছিল। অদৃষ্টের অদ্ভুত পরিহাসে, দুই বছর পর তার বাবার মৃত্যু হল সেই জঙ্গিদেরই গুলিতে।

এএসআই লোনের মৃত্যুর প্রেক্ষিতে, পুলিশ আইনের প্রাসঙ্গিক ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যে, লস্কর-ই-তৈবা ফ্রন্টাল সংগঠন বলে পরিচিত দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এএসআই মুস্তাক আহমেদ লোনকে তারা ‘কট্টর জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ আধিকারিক’ বলেছে। বুধবার, আবার তারা আইএসআইএস-এর কায়দায় ওই হামলার একটি ৪০ সেকেন্ডের ভিডিয়োও প্রকাশ করেছে।

আসলে, জম্মু ও কাশ্মীরের ঘরে ঘরের এটাই গল্প। হয় তুমি জঙ্গি, নইলে ‘বিশ্বাসঘাতক, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের দোসর, কট্টরবাদী’ – গুলি খেতে হতে পারে যখন তখন।