AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

নতুন আইনের দোহাই দিয়ে হাড়হিম করা হিন্দু হত্যাকে ‘জাস্টিফাই’ করছে জিহাদিরা, জেনে নিন কী সেই পরিবর্তিত আইন?

Article 35A: ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অবলুপ্ত করা হয়। এর সঙ্গে বাতিল করা হয় ৩৫ এ অনুচ্ছেদও। ৩৭০ ধারায় বিশেষ মর্যাদা হারায় জম্মু-কাশ্মীর। ৩৫এ -তে বলা ছিল জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের বিশেষ অধিকার।

নতুন আইনের দোহাই দিয়ে হাড়হিম করা হিন্দু হত্যাকে 'জাস্টিফাই' করছে জিহাদিরা, জেনে নিন কী সেই পরিবর্তিত আইন?
এলাকা ঘিরে ফেলেছে যৌথবাহিনী (ফাইল ফোটো)
| Updated on: Apr 25, 2025 | 1:12 PM
Share

শ্রীনগর: ছবির মতো সাজানো উপত্যকা। সেখানেই নাকি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। মিনি সুইজারল্যান্ডে যে এমন দৃশ্য দেখা যাবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি কেউ। বেছে বেছে হিন্দু নিধন করা হয়েছে পহেলগাঁওয়ের বৈসরণে। সাধারণ পর্যটক, যাদের কাছে নিজেদের রক্ষার জন্য কোনও অস্ত্রই ছিল না, তাদের হত্যা করেছে জঙ্গিরা। পর্যটকদের হত্যার নিন্দায় মুখর গোটা বিশ্ব। তবে জঙ্গিরা যুক্তি দিচ্ছে অন্য। তাদের দাবি,  নয়া আবাসিক আইনে কাশ্মীর জবরদখল করা হয়েছে। কাশ্মীরীদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। পহেলগাঁওয়ের হামলা তারই জবাব। এই যে জঙ্গিরা দাবি করছে, সংবিধান সংশোধনের পর জম্মু-কাশ্মীরের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সত্যিই কি তাই? কী বলা হয়েছে সংবিধানের সংশোধনে?

১৯২৭ ও ১৯৩২-এ করদ রাজ্য (প্রিন্সলি স্টেট) জম্মু ও কাশ্মীরে স্থায়ী বাসিন্দা আইন চালু হয়েছিল। জম্মু-কাশ্মীরের তৎকালীন মহারাজা হরি সিং এই আইন চালু করেছিলেন। ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবে মেনে নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন হরি সিং। ১৯৪৯ সালে শেখ আবদুল্লা নয়া দিল্লির সঙ্গে আলোচনা করে জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা (সংবিধানের ৩৭০) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশেষ মর্যাদার জেরে প্রতিরক্ষা, বিদেশ এবং যোগাযোগ- এই তিন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় আইন প্রযোজ্য হত না।

২০১৯ সালের ৫ অগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অবলুপ্ত করা হয়। এর সঙ্গে বাতিল করা হয় ৩৫ এ অনুচ্ছেদও। ৩৭০ ধারায় বিশেষ মর্যাদা হারায় জম্মু-কাশ্মীর। ৩৫এ -তে বলা ছিল জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের বিশেষ অধিকার।

কী ছিল সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদে?

  • জম্মু-কাশ্মীরে জমি-সহ কোনও স্থাবর সম্পত্তির মালিকানা থাকবে শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতেই। জমি কিনতে পারবেন শুধুমাত্র ওই রাজ্যের বাসিন্দারাই। অন্য রাজ্যের কেউ জম্মু-কাশ্মীরে স্থাবর সম্পত্তির মালিক হতে পারেন না।
  • ১৯৫৪ সালে রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এই ধারাটি।
  • সম্পত্তির মালিকানার পাশাপাশি সরকারি চাকরি বা স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকারও ছিল শুধুমাত্র স্থানীয় বাসিন্দাদেরই।
  • এই ধারা অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা স্থির করতে পারত রাজ্যের ‘স্থায়ী বাসিন্দা’ কারা এবং তাঁদের বিশেষ অধিকার।
  • জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা কোনও মহিলা যদি রাজ্যের বাইরের কাউকে বিয়ে করেন, তবে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। তাঁর উত্তরাধিকারীদেরও সম্পত্তির উপরে অধিকার থাকে না।

সংবিধানের এই ৩৫এ অনুচ্ছেদ অবলুুপ্তিতে জম্মু-কাশ্মীরে ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদের সম্পত্তি কেনার পথ খুলে গিয়েছিল।  জঙ্গিদের আপত্তি এখানেই। লস্কর-ই-তৈবার শাখা সংগঠন টিআরএফ বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংবিধান সংশোধনের পর যে নয়া আবাসিক আইন আনা হয়েছে, তাতে কাশ্মীরের বাইরের বসবাসকারীরা এসে উপত্যকায় জমি কিনছে এবং নিজেদের স্থায়ী বাসিন্দা বলে দাবি করছে। জম্মু-কাশ্মীরে মোতায়েন সেনাবাহিনীকেও স্থায়ী বাসিন্দা বা ডোমিসাইল স্টেটাস দেওয়া হচ্ছে। ভিন রাজ্য থেকে আগতদের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের বরাত দেওয়া, স্থানীয় বাসিন্দা অর্থাৎ কাশ্মীরীদের চাকরি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া, বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে জমি অধিগ্রহণ- এগুলিতে তাদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর তার জবাবেই এই জঙ্গি হানা।