AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘JNU-এর মতো বিরোধী জোট হলে বিজেপিকে লোকসভায় হারানো সম্ভব’

Aishe Ghosh: করোনার কল্য়াণে গত ৪ বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই ক'বছরে নিজেদের সংগঠন মারাত্মক শক্ত করেছে এবিভিপি। তাই এবারের ভোটে 'ইলেকশন ম্যানেজার' ঐশীকে হাঁটতে হয়েছিল জোটের রাস্তায়।

'JNU-এর মতো বিরোধী জোট হলে বিজেপিকে লোকসভায় হারানো সম্ভব'
ঐশী ঘোষ।Image Credit: TV9 বাংলা
| Edited By: | Updated on: Apr 03, 2024 | 2:52 PM
Share

নয়া দিল্লি: এখন সংসদে সিপিআইএমের নির্বাচিত সদস্যের সংখ্যা ৩। বাম শরিক সিপিআইয়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ২। প্রথম ৩ জনের মধ্যে একজন কেরল থেকে নির্বাচিত, দু’জন তামিলনাড়ু থেকে। সিপিআইয়ের ২ জনই নির্বাচিত তামিলনাড়ু থেকে। সামনের লোকসভা ভোটে বামফ্রন্ট যে দারুন ফল করবে, তার কোনও সম্ভাবনা আপাতত নেই। তবে গোটা দেশকে লাল আবির খেলার সুযোগ করে দিয়েছে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়। দেশব্যাপী গেরুয়া ঝড়ের মাঝেও দিল্লির এক চিলতে লাল দুর্গ অক্ষত। ২০২৪ এর JNU ছাত্র সংসদ নির্বাচনে গুরূত্বপূর্ণ সব পদেই বামজোট জয়ী হয়েছে। ভাল ফল করলেও জিততে পারল না বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। পরিসংখ্যান বলছে, JNU-এর এতদিনের ইতিহাসে ছাত্র সংসদ পরিচালনা করার ক্ষমতা এবিভিপি পেয়েছে একবারই। সেটা ২০০০ সালে। তারপর এই প্রথম গেরুয়া হাওয়া উঠেছিল ক্যাম্পাস জুড়ে। যদিও সেই হাওয়ায় পালে জোর পেল না বিজেপি। এবারের নির্বাচনে পদ্ম শিবিরে আঘাত হানার মূলে বাংলার মেয়ে ঐশী ঘোষ। JNU-এর নির্বাচন তাঁর কাছে ছিল অগ্নিপরীক্ষা। তাতে আপাতত সফল ঐশী। তবে এবিভিপির উত্থান নিঃসন্দেহে ভাবাচ্ছে গোটা JNU-কে।

করোনার কল্যাণে গত ৪ বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই ক’বছরে নিজেদের সংগঠন মারাত্মক শক্ত করেছে এবিভিপি। তাই এবারের ভোটে ‘ইলেকশন ম্যানেজার’ ঐশীকে হাঁটতে হয়েছিল জোটের রাস্তায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে কুড়িটিরও বেশি ছাত্র সংগঠন। তার মধ্যে বাম-মনস্ক প্রায় সব ছাত্র সংগঠনকে এক ছাতার তলায় এনে এবিভিপির বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে ছাত্র সংসদের ক্ষমতায় থাকা ঐশীদের। কাঁটায় কাঁটায় টক্করের পর বামেদের জয়। স্বাভাবিক ভাবেই যুদ্ধ জয়ের পর ফুরফুরে ঐশী। মাথা ফাটার পর ‘হুট করে বড় হয়ে যাওয়া’ ৩০ ছুঁইছুঁই আসানসোলের মেয়ে এখন খানিকটা হলিডে মুডে। কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হবে লোকসভা ভোটের প্রচার। তার আগে কিছুটা জিরিয়ে নেওয়া। তার মধ্যেই TV9 বাংলাকে যুদ্ধ জয়ের নেপথ্যের গোপন কথাটি বলে ফেললেন ঐশী।

এবিভিপির জয়ের সম্ভাবনা ছিল, সেখান থেকে বেরিয়ে আসা কীভাবে?

ঐশী: ৪ বছর নির্বাচন হয়নি। অনেক স্পেকুলেশন ছিল। ৪ বছরে টাকাপয়সার মতো একাধিক শক্তি বিজেপির হয়ে কাজ করেছে । কিন্তু প্রত্যেক দিন ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে ছিল শুধুই বামেরা। কোভিডের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তালা খোলার আন্দোলন হোক, কিংবা ক্যাম্পাসে মহিলাদের সুরক্ষার কথাই হোক, আন্দোলনে ছিল শুধু বাম ছাত্র সংগঠনই। তখন এবিভিপি কোথাও ছিল না। হঠাৎ করে নির্বাচনের সময় এবিভিপির আগমন। তাই যারা সব সময় পাশে ছিল, তাদেরকেই বেছে নিয়েছে JNU

গোটা দেশজুড়ে বিজেপির দাপট, ক্যাম্পাসে এবিভিপি সেই কারণেই কি সংগঠন মজবুত করতে পারছে?

ঐশী: (এবিভিপির সংগঠন মজবুত হওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়ে) হ্যাঁ, ক্যাম্পাসের বাইরে আরএসএস ও বিজেপির জোর বাড়ছে। তার প্রভাব এসে ক্যাম্পাসে এসে পড়ছে। JNU-তে বিতর্কের সুযোগ আছে। এখানে কথা বলা যায়। তাই যে কেউ সংগঠনে মন দিতে পারে। আগে যখন কেন্দ্রে ক্ষমতায় কংগ্রেস ছিল, তারও প্রভাব ক্যাম্পাসে ছিল।

এই ভোটে কী শিখলেন?

ঐশী: এই ভোটে জোট তৈরি করতে শিখলাম। ক্যাম্পাসে যত এবিভিপি বিরোধী শক্তি আছে, সবাইকে একজোট করতে হয়েছে। এমন অনেক ছাত্র সংগঠন আমাদের পাশে ছিল, যারা নির্বাচনে অংশ নেয় না। তাদের একজোট করে এবিভিপিকে হারানো সম্ভব হয়েছে। দৈনন্দিন ইস্যু নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে গিয়ে সাড়া পেয়েছি। এটা বুঝেছি, সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে লড়তে পারলে বিজেপিকে হারানো যাবে।

গোটা দেশে INDIA জোট ঠিকভাবে পরিচালিত হতে পারছে না, JNU কি জোটের মডেল হওয়া উচিত?

ঐশী: আমাদের কাছে জোট প্রায়োরিটি ছিল। ক্যাম্পাসে এবিভিপি বিরোধী জোট ৫ বছর ধরে কাজ করছে। আমি মনে করি দেশেও জোট সঠিক ভাবে হওয়া প্রয়োজন, তাহলেই কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে সরানো যাবে।

ঐশী ঘোষ কি দিল্লিতেই রাজনীতি করবে, বাংলায় আর নয়?

ঐশী: (একটু হেসে) না না, JNU আমার কাছে মুখ্য দায়িত্ব ছিল। দ্রুত বাংলায় আসছি। বেশ কিছু রাজ্যে আমায় নির্বাচনী প্রচারে যেতে হবে। প্রথম প্রায়োরিটি ছিল JNU। কেরলে যাব, সেখানে আগে নির্বাচন। আসানসোলে জাহানারাদির হয়ে প্রচার করব।

এই নির্বাচনে মূল স্লোগন কী ছিল?

ঐশী: অনেক স্লোগান ছিল। মূলত শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়ানো ও প্রত্যেকের জন্য হস্টেল নির্মানের দাবি ছিল। আমাদের কল ছিল ‘হস্টেল ফর অল।’

ভোটে এ যাত্রায় জয় পেলেও এবিভিপির ভোট বাড়া নিয়ে চিন্তায় বাম জোট। দ্রুত এই নির্বাচনের বিশ্লেষণে বসবে JNU-এর এবিভিপি বিরোধী ঐক্য। আর ঠিক এই উদ্বেগটাই এখন ক্যাম্পাসে এবিভিপির পুঁজি। JNU এর এবিভিপি ইউনিট প্রেসিডেন্ট উমেশচন্দ্র এবার বাম জোটের প্রার্থী ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ভোটে লড়েছেন। উমেশচন্দ্র ৯২২ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। তবে তাঁর মতে, “JNU থেকে বামেদের পতন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। সবাই একদিকে আব এবিভিপি একদিকে, তারপরে এই ফলাফল। আগামী নির্বাচনেই JNU এর ছাত্রসংসদ জিতবে এবিভিপি। কমিউনিস্টদের হিপোক্রিসি আর চলবে না। জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারার বৃ্দ্ধি হচ্ছে গোটা ক্যাম্পাসে।”