Supreme Court: ওরা তো শোরুম খুলে বসেছে, যাঁকে-তাঁকে সার্টিফিকেট দিচ্ছে: সুপ্রিম কোর্ট
Supreme Court on UNHCR: সবশেষে মামলাকারীর আবেদন খারিজ করে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচের পরিবর্তে অন্য কোনও দেশে তাঁকে আবেদনের পরামর্শ দিয়েছে আদালত। অবশ্য, মামলাকারীর সওয়ালকারী জানিয়েছেন, তিনি তা করে ফেলেছেন। অস্ট্রেলিয়াতে ওই কার্ড নিয়ে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও তা বিবেচনা পর্যায়ে।

নয়াদিল্লি: দেশের অন্দরে আস্ত শোরুম খুলে বসেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। বুধবার ঠিক এই ভাষায় সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংগঠনের হাই কমিশনারকে বিঁধল শীর্ষ আদালত। একটি মামলার শুনানির সময় রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ‘ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস’-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে চলছিল সেই শুনানি। অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতের কাছে দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুদানের এক নাগরিক। নাম ইয়াগৌব মহম্মদ। তাঁর দাবি, দিল্লিতে যে ভাবে আফ্রিকার দেশগুলির নাগরিকদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে, তা নিয়ে তিনি বেশ শঙ্কায় রয়েছেন। তাঁর সওয়ালকারী আদালতকে জানিয়েছে, মামলাকারীর দু’টি সন্তান রয়েছে। যাদের মধ্যে একটি আবার সদ্যোজাত। সবে ৪০ দিন বয়স। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিলে তিনি মহা ফাঁপড়ে পড়বেন বলেই দাবি। তাই সুপ্রিম কোর্টের কাছে গিয়ে আগাম নিরাপত্তা চেয়েছে ওই ব্যক্তি।
এমনকি, মামলাকারীর স্ত্রী ও সন্তানদের রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক দফতর শরণার্থী হিসাবে চিহ্নিত করে শংসাপত্র দিয়েছে বলেও আদালতকে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। তাঁর কথায়, ‘এই শরণার্থী শংসাপত্র সহজে পাওয়া যায় না। একাধিক প্রক্রিয়া পেরিয়ে এই শংসাপত্র মেলে। যার জন্য বেশ কয়েক বছর সময় লেগে যায়।’
আইনজীবীর সেই যুক্তি শুনে বিচারপতি সূর্য কান্ত ভর্ৎসনার সুরে বলেন, ‘ওরা তো এখানে শোরুম খুলে বসেছে, যাকে-তাকে শংসাপত্র ধরিয়ে দিচ্ছে। তাই এই নিয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’ পাশাপাশি, বিচারপতি জয়মাল্য় বাগচী বলেন, ‘১৯৫১ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক সভাকে ভারত স্বীকৃতি দেয়নি।’ উল্লেখ্য, বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়কালে যুদ্ধবিধ্বস্তদের আশ্রয় দিতে এই চুক্তি পেশ করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। সেই সময়কালে মোট ১৪৯টি দেশ ওই সংশ্লিষ্ট চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও, ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে তা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল। নয়াদিল্লির যুক্তি ছিল, বিদেশি নাগরিকদের দেশে প্রবেশ এবং শরণার্থী বিষয়ে স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চায় তারা। যে কারণে আজও ভারতে রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রদত্ত শরণার্থী কার্ড বা শংসাপত্রকে অনুমোদন দেওয়া হয় না। আর সংশ্লিষ্ট মামলায় সেই যুক্তিই তুলে ধরেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। খারিজ করেন মামলাকারীর আবেদন। অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচের পরিবর্তে অন্য কোনও দেশে তাঁকে আবেদনের পরামর্শ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। অবশ্য, মামলাকারীর সওয়ালকারী জানিয়েছেন, তিনি তা করে ফেলেছেন। অস্ট্রেলিয়াতে ওই কার্ড নিয়ে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও তা বিবেচনা পর্যায়ে।
