Kannur: বাগানের মাটি খুঁড়তেই বের হল ঘড়া, খুলতেই মাথা ঘুরে গেল মহিলা শ্রমিকদের…
Kannur: চেঙ্গালাই গ্রামের এক বেসরকারি রাবার বাগানে ফসল কাটতে গিয়েছিল স্থানীয় মহিলা শ্রমিকদের একটি দল। গর্ত খুঁড়তে গিয়ে তারা একটি পাত্র খুঁজে পায়। আর ওই পাত্রই বদলে দিয়েছে গ্রামের ভাগ্য। আশপাশের গ্রামগুলির লোকজন তো বটেই, বহু দূর থেকেও মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন এই শান্ত গ্রামে।
কান্নুর: দিন তিনেক আগেই অধিকাংশ ভারতবাসী এই গ্রামের নাম পর্যন্ত জানত না। কিন্তু, হঠাৎ করেই কান্নুর জেলার চেঙ্গালাই গ্রাম নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। এমনকি, বিদেশেও পৌঁছে গিয়েছে এই গ্রামের নাম। আর এর সূত্রপাত হয়েছে গত শুক্রবার (১২ জুলাই)। চেঙ্গালাই গ্রামের এক বেসরকারি রাবার বাগানে ফসল কাটতে গিয়েছিল স্থানীয় মহিলা শ্রমিকদের একটি দল। গর্ত খুঁড়তে গিয়ে তারা একটি ঘড়া খুঁজে পায়। আর ওই ঘড়াই বদলে দিয়েছে গ্রামের ভাগ্য। আশপাশের গ্রামগুলির লোকজন তো বটেই, বহু দূর থেকেও মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন এই শান্ত গ্রামে।
তবে, ঘড়াটি পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন মহিলা কর্মীরা। তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন, ঘড়াটি সম্ভবত কালো জাদুর সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই সেটির ভিতর কী আছে, তা দেখতেও নারাজ ছিলেন তিনি। কেউ কেউ ভেবেছিলেন, না ফাটা কাঁচা বোমা থাকতে পারে। বাংলার মতো রাজনৈতিক হিংসায় ধ্বস্ত কান্নুরও। এখানে না ফাটা কাঁচা বোমা পাওয়া অস্বাভাবিক বিষয় নয়। তবে, কৌতূহল বড় দায়। ভয় কাটিয়ে পাত্রটি খুলতেই মাথা ঘুরে গিয়েছিল তাদের। পাত্রটির ভিতরে ছিল বহুমূল্য গয়না এবং সোনা ও রুপোর পুরানো মুদ্রা। এই খবর ছড়াতে বেশি সময় লাগেনি।
গ্রামবাসীদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের গ্রামেও। গুপ্তধনের লোভে বহু মানুষ এখন রাবার বাগানে ঘেরা গ্রামে ভিড় জমিয়েছে। তবে, স্থানীয় পুলিশ এলাকাটি ঘিরে রেখেছে। অদূর ভবিষ্যতেই রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এখানে খননকাজ করতে পারে। তার জন্যই জায়গাটি ঘিরে ফেলা হয়েছে। ইতিহাসবিদ এবং প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই এলাকায় খনন চালাতে আগ্রহী বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা মনে করছেন ওই এলাকায় এই ধরনের ঘড়া
পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ওই গয়না ও সোনা ও রুপোর মুদ্রাগুলি ১৮ শতকের। কোঝিকোড়ের পাজহাসি রাজা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের অধিকর্তা, কে কৃষ্ণ রাজ জানিয়েছেন, মুদ্রাগুলিতে ১৮ শতকের শেষের দিকের চিহ্ন রয়েছে। তার মধ্যে ইন্দো-ফরাসি এবং কান্নুর আলি রাজার চিহ্নও রয়েছে। বেশ কয়েকটি পুঁতির নেকলেস পাওয়া গিয়েছে। সেগুলিও একই যুগের বলে মনে করেন কে কৃষ্ণ রাজ। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিস্তৃত অধ্যয়নের পরই এই নিদর্শনগুলির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং তাত্পর্য সম্পূর্ণভাবে বলা যাবে। শুধু স্থানীয় ইতিহাস বোঝার জন্যই নয়, সেই যুগের বৃহত্তর সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্য সংযোগ সম্পর্কে জানার জন্যও এই ধরনের বিশদ অধ্যয়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।