বনধ আবহেই চলছে কেরলের পঞ্চায়েত ও পুর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Dec 08, 2020 | 4:00 PM

নির্বাচন কমিশন (Election Commission)-র তরফে জানানো হয়, প্রথম ভাগের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৮৮ লাখ ২৬ হাজার ৮৭৩। এরমধ্যে ১৫০জন অনাবাসী ভারতীয় ও ৪২ হাজার ৫৩০ জন প্রথমবার ভোটদাতাও রয়েছে।

বনধ আবহেই চলছে কেরলের পঞ্চায়েত ও পুর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ
সকাল থেকেই ভোট দিতে ভিড় করেছেন কেরলবাসী। ছবি: সংগৃহীত।

Follow Us

তিরুবনন্তপুরম: দেশজুড়ে ভারত বনধ (Bharat Bandh)-র প্রভাব পড়লেও একফোটাও ছাপ নেই কেরলে (Kerala)। সেখানে আজ থেকেই শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত ও পুর নিগম সহ স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাচন (Kerala Local Body Election)। তিন দফার নির্বাচনের প্রথম ভাগের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বুথে সকাল থেকেই ভোটার সংখ্যা চোখে পড়ার মতো ছিল।

প্রথম ধাপের নির্বাচন হবে পাঁচটি জেলায়- তিরুবনন্তপুরম, কোল্লাম, পাঠানামথিতা, আলাপ্পুজা ও ইডুক্কি। এই পাঁচটি জেলায় মোট ৬৯১০টি ওয়ার্ডে নির্বাচন হচ্ছে। সকাল সাতটা থেকে সন্ধে ছ’টা অবধি চলবে ভোটগ্রহণ পর্ব। করোনাবিধির কথা মাথায় রেখে মোট ১১ হাজার ২২৫টি নির্বাচনী বুথ তৈরি করা হয়েছে, সুষ্ঠভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে ৫৬ হাজার ১২২ নিরাপত্তা বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন হবে ১০ ডিসেম্বর, এরনাকুলাম, কোট্টায়াম, ত্রিশুর, পালাক্কার ও ওয়ানাড জেলায় ভোটগ্রহণ চলবে সেইদিন। পালাপ্পুরম, কোঝিকোড়, কন্নুর ও কাসারগড় জেলায় শেষ ধাপের নির্বাচন হবে ১৪ ডিসেম্বর। নির্বাচনের ভোট গণনা হবে ১৬ ডিসেম্বর, ফল ঘোষণা হবে সেইদিনই।

নির্বাচন কমিশন (Election Commission)-র এক আধিকারিক জানান, করোনা ভীতি কাটিয়েই শয়ে শয়ে ভোটার সকাল থেকেই নির্বাচনী কেন্দ্রের বুথগুলিতে সামাজিক দূরত্ব মেনে ভিড় করেছে। সকাল ন’টার মধ্যেই তিরুবনন্তপুরমে ১৪.৬৭ শতাংশ, কোল্লামে ১৬.১৯ শতাংশ, ১৫.৪৯ শতাংশ ভোট পড়েছে ইডুক্কিতে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: কমছে দৈনিক সংক্রমণ, বাড়ছে স্বস্তি, প্রতিষেধক পাওয়ার অপেক্ষায় দেশ

নির্বাচন কমিশন (Election Commission)-র তরফে জানানো হয়, প্রথম ভাগের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৮৮ লাখ ২৬ হাজার ৮৭৩। এরমধ্যে ১৫০জন অনাবাসী ভারতীয় ও ৪২ হাজার ৫৩০ জন প্রথমবার ভোটদাতাও রয়েছে।

কেরলের স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচনী লড়াই ত্রিমুখী। সিপিআই(এম)-র লেফ্ট ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট (LDF)-র সঙ্গে কংগ্রেসের ইউনাইটেড ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট (UDF) ও বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ (NDA) জোটই নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রতিটি দলেরই নজর পাঁচ মাস বাদে হতে চলা বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Election)-র দিকেই।

ভোট দিলেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। ছবি: সংগৃহীত।

নির্বাচনী প্রচারে এলডিএফ (LDF) মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন (Pinarayi Vijayan) সরকারের করোনা (Coronavirus) মোকাবিলা ও সামাজিক উন্নয়নকেই হাতিয়ার করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সোনা পাচার কাণ্ড (Gold Smuggling Case) ও লাইফ মিশন প্রকল্পে দুর্নীতিতে (Life Mission Project Scam) সরকারী আধিকারিকদের নাম জড়িয়ে যাওয়ায়, সেই ইস্যুকেই হাতিয়ার করেছে এনডিএ (NDA)। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)-র ঘোষণা করা বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যে উন্নয়নের আশা দেখিয়েই তারা কেরলের ভোটবাক্স নিজেদের দখলে করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি (COVID-19 Situation)-র কথা মাথায় রেখে বিশেষ কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফে। সাধারণ করোনা বিধি মানার পাশাপাশি নিয়মিত পোলিং বুথগুলিকে স্যানিটাইজ (Sanitize) করা হচ্ছে। একই সময়ে তিনজনের বেশি ভোটারদের বুথে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত ভোটারদের ভোটগ্রহণের জন্যও নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, করোনা আক্রান্তদের বিশেষ ভোটার হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সন্ধে ছ’টার আগে সেই ভোটারদের নির্দিষ্ট বুথে হাজির হতে হবে। বুথে ভোটারদের প্রবেশের আগে থেকেই পোলিং এজেন্ট ও অফিসারদের পিপিই কিট (PPE Kit) পরে প্রস্তুত থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

যেসকল রোগীরা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, তাদের পিপিই কিট পরিয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে আনার দায়িত্ব স্বাস্থ্য দপ্তরের। যারা বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি রয়েছেন, তাদের নিজের খরচেই পিপিই কিট পরে ভোট দিতে আসতে হবে। অ্যাম্বুলেন্সের চালকও যেন পিপিই কিট পরে থাকে, সেই বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছে নির্বাচন কমিশন।

আরও পড়ুন: কৃষক আন্দোলনের সমর্থন করায় গৃহবন্দি কেজরীবাল! আম আদমি পার্টির অভিযোগ ওড়াল দিল্লি পুলিস

Next Article