Covid 19-H3N2 virus: একই শরীরে একসঙ্গে করোনা ও H3N2 ভাইরাসের হানা, মৃত্যু ডাক্তারি পড়ুয়ার
রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৩৬১ জন ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যবাসীকে মাস্ক পরা এবং জমায়েত এড়িয়ে চলার আবেদন জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
পুনে: একে রামে রক্ষে নেই, তায় সুগ্রীব দোসর! H3N2 ভাইরাস দেশে ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এর উপর নতুন করে উদ্বেগ বাড়াতে শুরু করেছে কোভিড-১৯ (Covid 19)। এবার একইসঙ্গে H3N2 ও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক মেডিক্যাল পড়ুয়ার। মহরাষ্ট্রের বাসিন্দা ওই যুবকের রক্তে এই দুই ধরনের ভাইরাসই মিলেছে বলে তাঁর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লিখিত। এছাড়া H3N2 ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মহারাষ্ট্রের সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধেরও মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই মেডিক্যাল ছাত্রের নাম বিত্থাল রাও (২৩)। পুনের ছত্রপতি সম্ভাজি নগরের বাসিন্দা বিত্থাল রাও পাটিল মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ছিলেন। জ্বর, সর্দি-কাশি ও গা-হাত ব্যথা নিয়ে গত ১২ মার্চ জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন। তারপর ১৩ মার্চ মধ্যরাতে তাঁর মৃত্যু হয়। বিত্থালের রক্তের নমুনা পরীক্ষায় H3N2 ও করোনা পজিটিভ মিলেছিল বলে জানিয়েছেন পুনে জেলা হাসপাতালের ডিন ডা. সঞ্জয় ঘোগারে। তবে তাঁর মৃত্যুর তদন্তে জেলা প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করেছে। বিত্থালের সংস্পর্শে আর কারা এসেছিলেন, তাঁরাও সংক্রমিত হয়েছেন কি না সে ব্যাপারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকে গিয়েছিলেন বিত্থাল রাও। পিকনিক থেকে ফিরে আসার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্বর, সর্দি-কাশি ও গা-হাত ব্যথা উপসর্গ হয় তাঁর। প্রথম কয়েকদিন বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করছিলেন। কিন্তু, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ১২ মার্চ পুনে জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন বিত্থাল। ডা. সঞ্জয় ঘোগারে বলেন, তাঁর রক্তের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে কোভিড-১৯ এবং H3N2 ভাইরাস পজিটিভ ছিল। ক্রমশ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছিল। আমরা তাঁকে ভেন্টিলেটারেও দিয়েছিলাম। তবু বাঁচানো যায়নি।
এভাবে একইসঙ্গে দুটি ভাইরাসের সংক্রমণ এবং তার জেরে মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগে জেলা প্রশাসন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিত্থালের সঙ্গে যাঁরা পিকনিকে গিয়েছিলেন এবং সম্প্রতি যাঁরা তাঁরা সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের জেলা প্রশাসনের তরফে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিত্থালের সংস্পর্শে ৬০ জন এসেছিলেন এবং তাঁদের সকলের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে ৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সংক্রমণ ঠেকাতে ইতিমধ্যে তাঁদের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করেছে জেলা প্রশাসন। বাকিদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
অন্যদিকে, গত সপ্তাহে নাগপুরে H3N2 ভাইরাসে সংক্রমিত ৭৩ বছর বয়সি এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। H3N2 ভাইরাসে এক সপ্তাহের মধ্যে পরপর দু-জনের মৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই মহারাষ্ট্র সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এছাড়া রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৩৬১ জন ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যবাসীকে মাস্ক পরা এবং জমায়েত এড়িয়ে চলার আবেদন জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। হাসপাতালগুলিকে অক্সিজেন, ভেন্টিলেশনের যথোপযুক্ত বন্দোবস্ত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।