Murder Case: খুন করে দুই মহিলার মাংস খাওয়া হল কেরলে, কারণ জানলে চমকে যাবেন
Murder Case: কেরলে নরবলির অভিযোগ উঠেছে এক দম্পতি ও এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তারা নিজ মুখে নরবলি দিয়ে মাংস খাওয়ার কথা স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে।
তিরুবনন্তপুরম: ভাগ্য ফেরাতে জোড়া নরবলি দিয়েছে কেরলের এক দম্পতি। ৫০ বছরের আশেপাশের দুই মহিলাকে খুন করে তাঁদের দেহ টুকরো টুকরো করে মাটির তলায় পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় থিরুভাল্লার বাসিন্দা এক দম্পতি ও তাদের সহকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গভীরে গিয়ে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আর সেই পুলিশি তদন্তেই উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। কালা জাদু বা ব্ল্যাক ম্যাজিকের বশবর্তী হয়ে এই দুই মহিলাকে খুন করা হয়েছে তা আগেই জানা গিয়েছে। এবার স্বজাতি ভক্ষণের একটি তত্ত্বও উঠে আসছে। ওই দুই মহিলাকে খুন করে তাঁদের মাংসও অভিযুক্ত দম্পতি খেয়েছে বলে বুধবার পুলিশ জানিয়েছে।
এদিন একটি সাংবাদিক সম্মেলনে কোচি কমিশনার সিএইচ নাগরাজু জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শফির অতীতে অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তার বিরুদ্ধে আটটি ভিন্ন পুলিশ স্টেশনে মামলা চলছে। তার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণের মতো অভিযোগ রয়েছে। সেই ব্যক্তি ভাগবল সিং ও তাঁর স্ত্রী লায়লাকে ফাঁদে ফেলেছে। তারপর তারা অর্থলাভের লোভে এই নরবলি দিয়েছে। শফিকে সাইকোপ্যাথ বলে অভিহিত করেছেন কমিশনার। তিনি আরও জানিয়েছেন, শফি কীভাবে ওই দম্পতিকে এমন একটি কাজে রাজি করাল সেই বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা হবে। দুই মহিলাকে খুন করার মতো এত বড় অপরাধ এবার করলেও ওই দম্পতির বিরুদ্ধে আগে কোনও অপরাধমূলক কাজের রেকর্ড নেই বলেই জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে দুই মহিলার মধ্যে একজনের দেহ খুনের পর ৫৬ টি টুকরো করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
Kerala | In Kochi, we registered a missing person case of a 52-year-old female lottery ticket seller on Sept 26. Our probe revealed that she was cheated, abducted, taken to Pathanamthitta dist & done to death there: CH Nagaraju, Kochi City CP, on Kerala ‘human sacrifice’ case pic.twitter.com/BZOiLYDZ4N
— ANI (@ANI) October 12, 2022
পুলিশ জানিয়েছে, রোসেলিন ও পদ্মা নামের ওই দুই মহিলাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। নারকীয় অত্যাচারও করা হয়েছিল তাঁদের উপর। পিছন দিকে বাঁধা ছিল তাঁদের দুই হাত। তাঁদের স্তন কেটে নেওয়া হয়েছিল। আর একজনের দেহ ৫৬ টি টুকরোতে ভাগ করা হয়েছিল। যদিও পরিষ্কারভাবে আর্থিক দুর্দশা কাটানোর জন্যই এই নরবলি দিয়েছে দম্পতিরা। তবুও এই গোটা ঘটনায় দুঃখ বিলাসিতা ও যৌন বিকৃতির ছাপ রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। পুলিশে জানিয়েছে, ‘যৌনতার বিষয়ে বিকৃত কামনা ছিল শাফির। ‘ মহিলাদের গোপনাঙ্গে আঘাত করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রেফতারির পর জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই দম্পতি জানিয়েছেন, ‘তারা ওই দুই মহিলাদের মাংস খেয়েছে।’ তবে এনডিটিভিকে কোচি সিটি পুলিশ কমিশনার নাগারাজু চাকিলাম বলেছেন, স্বজাতি ভক্ষণের বিষয়টি এখনও পর্যন্ত সন্দেহ করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘এর পক্ষে যথেচ্ছ প্রমাণ নেই আমাদের কাছে। আজ ফরেন্সিক পরীক্ষা ও প্রমাণ জোগাড় করা হবে।’
প্রসঙ্গত, গতকাল এই নরবলির গোটা ঘটনা প্রথম প্রকাশ্যে আসে। একটি নিখোঁজ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই ঘটনার শিকড় খুঁজে পায় কোচি পুলিশ। গতকাল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,মৃত দুই মহিলা রোসেলিন ও পদ্মা কেরলের এরনাকুলামের বাসিন্দা। তাঁদের পেশা, লটারির টিকিট বিক্রি। গত জুন মাসে এরনাকুলাম থেকে রোসেলিন এবং সেপ্টেম্বর মাসে পদ্মা নিখোঁজ হন। আর এই পদ্মার নিখোঁজের তদন্তে নেমেই গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গিয়েছে, মহম্মদ শাফি নামের ওই অভিযুক্ত যুবক এই দুই মহিলাকে প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে। তারপর থিরুভাল্লার বাসিন্দা ওই দম্পতির বাসভবনের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁদের দেহের একাধিক টুকরো মিলেছে। আর্থিক সমৃদ্ধি লাভের জন্য এই দুই মহিলাকে নরবলি দেওয়ার পরমার্শ দিয়েছিল শাফি। পেশায় মাসাজ থেরাপিস্ট শাফির কথামতো প্রথম জুন মাসে রোসেলিনকে বলি দেয়। কিন্তু কোনও আর্থিক উন্নতি না হওয়ার ফের সেপ্টেম্বরে শাফির কথায় দ্বিতীয় বলি দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই কাজে সমস্ত আচার-অনুষ্ঠানের জন্য ওই দম্পতি শাফিকে দেড় লক্ষ টাকাও দিয়েছে বলে জানা যায়। আপাতত এই ঘটনায় তিন অভিযুক্তকেই ২৬ অক্টোবর অবধি বিচারবিভাগীয় হেফজতে পাঠানো হয়েছে।