মহেন্দ্র প্রতাপের জন্মদিন পালন করতে দেয়নি ‘মুসলিম ইউনিভার্সিটি’, সেই আলিগড়েই তাঁর নামে তৈরি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়
Raja Mahendra Pratap Singh State University: সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উপস্থিত ছিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও রাজ্যপাল আনন্দিবেন পটেল।
আলিগড়: আলিগড়ে (Aligarh) নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। কিন্তু শিলান্যাসের আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং স্টেট ইউনিভার্সিটি’ (Raja Mahendra Pratap Singh State Univesrsity)। অভিযোগ, ২০১৪ সালে এই রাজা মহেন্দ্র প্রতাপেরই ১২৮ তম জন্মবার্ষিকী পালন করা যায়নি আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে (Aligarh Muslim Univesrsity)। তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। দাবি করা হয়েছিল মহেন্দ্র প্রতাপের জন্মদিন পালন করা হলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হতে পারে। সেই আশঙ্কাতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জন্মদিন পালন করতে দেয়নি এই স্বাধীনতা সংগ্রামীর। এ বার সেই আলিগড়েই মহেন্দ্র প্রতাপের নামে তৈরি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়।
সেই সময় জন্মদিন পালন নিয়ে যখন বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তখন বিষয়টি তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি লিখে সরকারি ভাবে জানিয়েছিলেন আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য। সেই বিতর্কের সাত বছর পরে সেই মহেন্দ্র প্রতাপের নামেই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছে যোগী প্রশাসন। সামনেই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজা মহেন্দ্রপ্রতাপ সিং ইউনিভার্সিটির উদ্বোধন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে যোগীর পাল্টা চাল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
আরএসএসের দাবি, আলিগড়ের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য জমি দিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি চত্বরে মহেন্দ্র প্রতাপের ১২৮ তম জন্মদিন পালন করার আর্জি জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রছাত্রী। সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কে এই মহেন্দ্র প্রতাপ সিং?
উত্তর প্রদেশের হাথরাসে রাজ পরিবারে তাঁর জন্ম ১৮৮৬ সালে। মূলত সমাজ সংস্কারক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই সময় নাম ছিল মহম্মদান অ্যাংলো ওরি্যেন্টাল কলেজিয়েট স্কুল। সেখানেই পড়াশোনা করেন রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ। যদিও স্নাতকের পাঠ তিনি সম্পূর্ণ করেননি, তবে কলেকে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলেন বলে জানা যায়।
জানা যায়ম, ১৯১১ সালে বালকানের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ব্রিটিশরা তাঁকে ধরতে চেয়েছিল। কিন্তু ১৯১৪ সালে আলিগড়ের বাড়ি তথা পরিবার ছেড়ে তিনি চলে যান জার্মানি। সেখানেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন ৩৩ বছর। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর তিনি ফিরে আসেন। ১৯৫৭ তে মথুরা থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। জন সঙ্ঘের প্রতিনিধিত্ব করা অটল বিহারী বাজপেয়ীকে হারিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
শুধু তাই নয়, ১৯১৫ সালে আফগানিস্তানে ভারতের নির্বাসিত সরকার গঠিত হয় আর রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ হন সেই সরকারের প্রেসিডেন্ট। সেখান থেকেই ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তিনি। এরপরই ব্রিটিশরা তাঁর মাথার দাম ঘোষণা করে। ১৯৩২ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত হয় তাঁর নাম।
আরও পড়ুন: Uttar Pradesh Elections: কিসে পাশ, কিসে ফেল? বিধায়কদের ‘মার্কশিট’ দেবে যোগী রাজ্য