নয়া দিল্লি : বৃহস্পতিবার সকালেই ইউক্রেনে যুদ্ধ ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের পূর্ব সীমানার দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলকে পুতিন স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করার পর থেকেই যুদ্ধের আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হচ্ছিল। আজ সেই দামামা বেজেই গেল। একের পর এক হামলা চলছে। ইতিমধ্যেই যুদ্ধের বলি হয়েছেন ৫০ জন। ইউক্রেনের তরফে দাবি করা হয়েছে ৪০ জন রাশিয়ার নাগরিক মারা গিয়েছেন সংঘর্ষে। রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের নাগরিক সহ ১০ জন মারা গিয়েছেন। একের পর এক বিস্ফোরণের আওয়াজ ভেসে আসছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের কাছে সাহায্য় চাইল ইউক্রেন। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের মাঝে ইউক্রেনের দূত ইগর পোলিখা এই সংঘাতে ভারতের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে এই আশঙ্কায় পোলিখা বলেছেন, “মোদীজি বিশ্বনেতাদের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী এবং সম্মানীয় নেতা। আপনার রাশিয়ার সঙ্গে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত, কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। আমরা আশাবাদী যে যদি মোদীজি পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি সাড়া দেবেন। ”
উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন নিয়ে প্রথম থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। এই সংঘাত এড়ানোর জন্য আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আবেদন ভারত আগেও জানিয়েছে। তবে প্রথম থেকে এখনও অবধি রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে নিরপেক্ষই থাকতে দেখা গিয়েছে ভারতকে। প্রসঙ্গত, আজ সকালে রাশিয়ার সময় অনুযায়ী সকাল ৬ টায় পুতিন ঘোষণা করেছিলেন ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ মিলিটারি অপারেশন শুরু করার। তারপরই রাশিয়ার ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য ভারী অস্ত্র সামগ্রী রাশিয়ার উত্তরের সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেনে ঢুকে হামলা চালায়। এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে ভারতের সাহায্যপ্রার্থী ইউক্রেন। ইউক্রেনের দূত বলেছেন, “রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ভালো সম্পর্ক থাকায় ভারতের আরও এক্ষেত্রে ভারতের আরও সক্রিয় অংশ নেওয়া উচিত। শুধুমাত্র আমাদের সুরক্ষার জন্য নয়, নিজের নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে আমরা এই বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ চাই।” তিনি আরও বলেছেন, “আমরা কোনও প্রোটোকল বিবৃতি চাই না। এর ফলে কিচ্ছু হয় না। আমদের গোটা বিশ্বের সমর্থন প্রয়োজন।”
ইউক্রেনের দূত মহাভারতের উল্লেখ করে মোদীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার জন্য। তিনি বলেছেন, “হাজার হাজার বছর আগে যেখানে ইউরোপে কোনও সভ্যতা তৈরি হয়নি তখন থেকেই কৌটিল্য, চাণক্য়ের মাধ্য়মে ভারত কূটনীতিবিদ্যায় পারদর্শী। বিশ্বে ভারতের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে এবং অনেক বছর ধরে ভারত জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে (Non-Aligned Movement)।”