Supreme Court On Citizenship Act: নাগরিকত্ব আইনে অসম চুক্তি বৈধ, ৪-১ অনুপাতে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট

Supreme Court On Citizenship Act:  বৃহস্পতিবার সাংবিধানিক বেঞ্চের ৪-১ রায়ে নাগরিকত্ব আইনের সপক্ষে বলা হয়, ১৯৮৫ সালের ওই আইনের ৬ এ ধারা বহাল থাকছে।

Supreme Court On Citizenship Act: নাগরিকত্ব আইনে অসম চুক্তি বৈধ, ৪-১ অনুপাতে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট
অসম চুক্তি বৈধ: সুপ্রিম কোর্টImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 17, 2024 | 1:15 PM

নয়া দিল্লি: শীর্ষ আদালতের ঐতিহাসিক রায়! নাগরিকত্ব আইনের ৬এ ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ।  বৃহস্পতিবার সাংবিধানিক বেঞ্চের ৪-১ রায়ে নাগরিকত্ব আইনের সপক্ষে বলা হয়, ১৯৮৫ সালের ওই আইনের ৬ এ ধারা বহাল থাকছে। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রকে নিয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চ এদিন এই রায় দেয়। এর মধ্যে বিচারপতি পারদিওয়ালা আইনের ৬এ ধারাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেন।

প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ

সরকার চাইলে, এই আইনটিকে অন্যান্য এলাকাতেও চালু করতে পারত। কিন্তু তা করেনি। কারণ এই বিশেষভাবে প্রযোজ্য অসমের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই। অসম অ্যাকর্ড হল একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আর 6A ছিল একটি সংসদীয় সিদ্ধান্ত। এই ধরনের ব্যবস্থা চালুর ক্ষমতা সংসদের রয়েছে। প্রবেশকারীদের ক্ষেত্রে অসমের সংস্কৃতিও বিশেষভাবে প্রভাব ফেলেছে। প্রধান বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, অসমে  অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা ছিল ৪০ লক্ষ। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছিল ৫৭ লক্ষ অনুপ্রবেশকারী। তাতেও অসমের উপর অনুপ্রবেশের প্রভাব পড়েছে অনেক বেশি। কারণ পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে অসমের জমির পরিমাণ অনেক ছোট ছিল।

বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ, বিচারপতি মনোজ মিশ্রের পর্যবেক্ষণ

এই বিষয়টি অন্তত মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ভাবা উচিত। প্রতিবেশীদের গ্রহণ করে নেওয়ার ক্ষমতা এক রাজ্যের থাকা উচিত। আবেদনকারীদের আর্জি খারিজ করে দেন তাঁরা।

বিচারপতি কান্ত 6A ধারা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলি শুনানি চলাকালীন পড়ে শোনান। তাঁর  পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী

১. যে অভিবাসীরা ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারির আগে অসমে প্রবেশ করেছিলেন, তাঁদের ভারতীয় নাগরিক বলে গণ্য করা হয়।

২. যে সব অনুপ্রবেশকারী ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত অসমে প্রবেশ করেছিলেন, তাঁরা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী হবেন, যদি তাঁরা যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে পারেন।

৩. যে সমস্ত অনুপ্রবেশকারী  ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বা তারপরে অসমে প্রবেশ করেছিলেন, তাঁদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে ঘোষণা করা হয়। তাঁদের শনাক্ত করে আটক করা এবং নির্বাসিত করা হবে।

বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার পর্যবেক্ষণ

যদিও বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এই রায়ের বিপক্ষে ছিলেন। বিচারপতি পারদিওয়ালার যুক্তি ছিল, এই আইনের একটি অংশ কার্যকর হওয়ার সময় পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে  বৈধ হতে পারে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা সাময়িকভাবে ত্রুটিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারির তারিখ অনুপ্রবেশকারীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই 6A নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু  তাঁর পর্যবেক্ষণ, ১৯৭১ সালের আগে যাঁরা প্রবেশ করেছিলেন, তাঁদের আইনসভা খুব সহজেই নাগরিকত্ব প্রদান করতে পারত। কিন্তু সত্য হল নাগরিকত্ব প্রদানই মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল না। কারণ ১৯৬৬-১৯৭১ সালের মধ্যে একটি কঠিন পরিস্থিতি অসমের বাসিন্দাদের শান্ত করতেই এই বিধি লিপিবদ্ধ হয়। কারণ একটি কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়েছিল, দশ বছরের জন্য ভোট দেওয়ার অধিকার নেই অনুপ্রবেশকারীদের। 

এই অসম চুক্তি কী?

১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারির আগে বাংলাদেশ থেকে অসমে প্রবেশকারীদের অসম অ্যাকর্ড অনুযায়ী দেওয়া নাগরিকত্ব বৈধ কিনা, তা নিয়েই দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছিল। আবেদনকারীদের অভিযোগ ছিল, নাগরিকত্ব আইনের 6A ধারা অনুযায়ী ৫০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে আশা অনুপ্রবেশকারীদের অসমে নাগরিকত্ব দেওয়ার ফলে অসমের জনবিন্যাসের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। অসমের স্থায়ী জনজাতি নিজ ভূখণ্ডেই  সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। তাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ, সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব এবং রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব নিয়ে সংকট তৈরি হচ্ছে।

অন্যান্য সামাজিক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের যুক্তি ছিল, নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫র 6A ধারা অবৈধ ঘোষণা করা হলে অসমের জনসংখ্যার এক বিপুল অংশ ৫০ বছর পর হঠাৎ নাগরিকত্ববিহীন হয়ে যাবে।

প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে  ৬এ ধারাটি ছিল আইনি সমাধান। বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য মনে করেন যে, ৬এ ধারা কার্যকর করতে হয়েছিল অসমের বাসিন্দাদেরই নিরাপত্তার স্বার্থে।