কেন্দ্র ও রাজ্যের বিপক্ষে গিয়ে সংরক্ষণে তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

সুমন মহাপাত্র |

May 05, 2021 | 7:11 PM

বম্বে হাইকোর্ট মহারাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি চাকরিতে মারাঠা সম্প্রদায়ের সংরক্ষণে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে বহাল রেখেছিল।

কেন্দ্র ও রাজ্যের বিপক্ষে গিয়ে সংরক্ষণে তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের
ফাইল চিত্র

Follow Us

জ্যোতির্ময় রায়: মারাঠা সংরক্ষণ নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকার বড় ধাক্কা খেল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। শীর্ষ আদালত মহারাষ্ট্রে মারাঠাদের জন্য ১৬ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে বাতিল করে দিয়েছে। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এ-ও জানিয়েছে, ইন্দিরা সাহানি মামলার পুনর্বিবেচনারর দরকার নেই। বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, মারাঠা সম্প্রদায়ের জন্য ১৬ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ায় সংরক্ষণের সর্বাধিক সীমা ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে, সুতরাং এটি অসাংবিধানিক। বিচারপতি অশোক ভূষণ ছাড়াও পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও, বিচারপতি এস আবদুল নাজির, বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট রয়েছেন।

বেঞ্চ জানিয়েছে, ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমা লঙ্ঘন করা সাম্যের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে মারাঠাদের ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমা অতিক্রম করার জন্য গাইকওয়াদ কমিশন বা হাইকোর্টের কাছে কোন দৃঢ় ভিত্তি ছিল। সুতরাং, এ জাতীয় কোনও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যাতে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমা অতিক্রম করার প্রয়োজন ছিল। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মারাঠা সম্প্রদায়ের লোকেদেরকে শিক্ষাগত ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া হিসাবে বলা ধরা যায় না, তাই তাদের সংরক্ষণের দায়রার ভিতরে আনা ঠিক হবে না।

এর আগে, বম্বে হাইকোর্ট মহারাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি চাকরিতে মারাঠা সম্প্রদায়ের সংরক্ষণে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে বহাল রেখেছিল। মারাঠা সম্প্রদায়ের লোকদের সংরক্ষণের সরকারের সিদ্ধান্তকে বহু মানুষ ও সংস্থা আপত্তি জানিয়েছিল। আবেদনকারীরা হাইকোর্টের আদেশের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন যে হাই কোর্ট কি সুপ্রিম কোর্টের নয়-বিচারকের বেঞ্চের (মন্ডল কমিশন মামলা) সিদ্ধান্তকে মানতে বাধ্য নয় যাতে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমা নির্ধারণ করা হয়? আবেদনকারী বলেছেন যে মারাঠা সংরক্ষণের কারণে সংরক্ষণ ৭৩ শতাংশে পৌঁছেছে, এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ শ্রেণির লোকদের জন্য সুযোগ খুব কমে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘অসাংবিধানিক’! চাকরি-শিক্ষায় মারাঠা সংরক্ষণ বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে, মহারাষ্ট্র সরকার মারাঠা শ্রেণিকে সরকারি চাকরি এবং উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে ১৬% রিজার্ভেশন দিয়েছিল। বোবম্বে হাইকোর্টে এই রিজার্ভেশনকে নিয়ে দুটি প্রধান ভিত্তিতে আপত্তি জানানো হয়েছিল। প্রথম- এই সংরক্ষণের বৃদ্ধির পিছনে কোনও সঠিক ভিত্তি নেই। এটি কেবল রাজনৈতিক লাভের জন্য দেওয়া। এবং দ্বিতীয় কারণ হল, এটি ১৯৯২ সালের ইন্দিরা সাহানি বনাম ভারত সরকার মামলায় সুপ্রীম কোর্টের সংরক্ষণকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত রাখার সিদ্ধান্তকে লঙ্ঘন করে। তবে ২০১৯ সালের জুনে হাইকোর্ট এই সংরক্ষণের পক্ষে রায় দেয়। হাইকোর্ট জানিয়েছিল, ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে কোনও শ্রেণিকে সংরক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। তবে, চাকরির ক্ষেত্রে ১৩ শতাংশ এবং উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে ১২ শতাংশ সংরক্ষণ করা হয়েছিল। লক্ষ্য করার মতো বিষয় যে সুপ্রিম কোর্টে মারাঠা সম্প্রদায়ের লোকদের সংরক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্রীয় সরকার সমর্থন করেছিল। কেন্দ্র বলেছিল যে মারাঠা সম্প্রদায়ের লোকেদের রিজার্ভেশন দেওয়া আইনি কর্তৃত্ব মহারাষ্ট্র সরকারের রয়েছে এবং মহারাষ্ট্র সরকারে দ্বারা গৃহীত সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক।

আরও পড়ুন: মর্মান্তিক! করোনা আক্রান্ত বাবার চিতায় ঝাঁপ মেয়ের

Next Article