Supreme Court: ‘আদালত অবমাননা আইন বিচারকদের ব্যক্তিগত ঢাল নয়’, বড় পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের
Contempt of Court: বিনীতা শ্রীনন্দন যে সার্কুলার প্রকাশ করেছিলেন, তা আদালত অবমাননাকর ছিল, এ কথা মেনে নিলেও সুপ্রিম কোর্ট সঙ্গে এও উল্লেখ করে যে বিনীতা শ্রীনন্দনের নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা গ্রহণ করতে অস্বীকার করে হাইকোর্ট ভুল করেছে।

নয়া দিল্লি: আদালত অবমাননার জন্য শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা কখনওই সমালোচকদের চুপ করানোর উপায় বা বিচারকদের সমালোচনা থেকে রক্ষা করার ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া উচিত নয়। জোর দিয়ে এ কথা বলল সুপ্রিম কোর্ট। অবমাননার জন্য শাস্তি দেয় যে (আদালত), তার ক্ষমা করার ক্ষমতাও থাকে। শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়েছে যে যখন কোনও অভিযুক্ত সত্যি তার অপরাধের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে, তখন বিচার ব্যবস্থার মূলে থাকা উচিত ক্ষমা।
পশুদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ বিধি নিয়ে একটি ঘটনায় দেশের আদালত ও বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবমামনাকর মন্তব্য করেছিলেন বিনীতা শ্রীনন্দন নামক এক মহিলা। বম্বে হাইকোর্ট তাঁকে এক সপ্তাহের জেলের সাজা দেয়। বম্বে হাইকোর্টের সেই রায় বাতিল করে শীর্ষ আদালত এবং এই পর্যবেক্ষণ রাখে।
বিনীতা শ্রীনন্দন যে সার্কুলার প্রকাশ করেছিলেন, তা আদালত অবমাননাকর ছিল, এ কথা মেনে নিলেও সুপ্রিম কোর্ট সঙ্গে এও উল্লেখ করে যে বিনীতা শ্রীনন্দনের নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা গ্রহণ করতে অস্বীকার করে হাইকোর্ট ভুল করেছে। তিনি প্রথম সুযোগেই আদালতে হাজির হয়েছিলেন, অনুশোচনা প্রকাশ করেছিলেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনার আর্জি জমা দিয়েছিলেন যা আদালত অবমাননা আইন (Contempt of Courts Act)-এর ১২ ধারার প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ ও বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ বলে, “শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতার মধ্যে ক্ষমা করার ক্ষমতাও থাকে, বিশেষ করে যেখানে অভিযুক্ত তার ভুল বুঝতে পেরে সত্যি অনুশোচনা প্রকাশ করে। তাই বিচার ব্যবস্থার অবমাননার প্রয়োগ করার সময় আদালতকে সতরেক থাকতে হবে যে এই ক্ষমতা বিচারপতিদের জন্য ব্যক্তিগত ঢাল নয়। সমালোচনা বন্ধ করার তরবারিও নয়। শেষ পর্যন্ত, নিজের ভুল স্বীকার করতে সাহস লাগে আর যিনি ভুল করেছেন, তাকে ক্ষমা করে দিতে আরও বড় গুণের প্রয়োজন। তাই দয়া ও ক্ষমা বিচার বিভাগের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে থাকতে হবে। বিশেষ করে যখন অবমাননাকারী নিজের ভুল স্বীকার করছে এবং প্রায়শ্চিত্ত করতে চায়।“
আগের আদালত অবমাননা সংক্রান্ত মামলাগুলির উপরে হাইকোর্টের ভরসা করা ঠিক হয়নি, কারণ সেখানে অভিযুক্তরা কোনও অনুশোচনা প্রকাশ বা ক্ষমা চায়নি। এক্ষেত্রে ঘটনাপ্রবাহ আলাদা ছিল। অভিযুক্ত যেহেতু অনুশোচনা প্রকাশ করেছিল, আদালতের ক্ষমা করে দেওয়া বিবেচনা করা উচিত ছিল। শ্রীনন্দনের ক্ষমাপ্রার্থনা গ্রহণ করলেই ন্যায় বিচারের উদ্দেশ্য পূরণ হবে বলে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট বম্বে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে।
