Supreme Court: ‘সুপ্রিম কোর্টকে অন্তত বিশ্বাস করুন’, সার্চ কমিটি তৈরি নিয়ে মন্তব্য শীর্ষ আদালত
Supreme Court: রাজ্যে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরপর অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস। শিক্ষা দফতরকে না জানিয়েই তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
নয়া দিল্লি: বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাতের মাঝেই হস্তক্ষেপ করেছে শীর্ষ আদালত। উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি তৈরি করে দেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এবার সেই মামলায় আরও বেশ কিছু তথ্য চাইল আদালত। শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘কোনও পক্ষকে বিশ্বাস না করলে সুপ্রিম কোর্টকে অন্তত বিশ্বাস করুন।’ রাজ্যে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আছে তার তালিকা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কোন কোন বিষয় পড়ানো হয়, সেই তথ্য জানাতে হবে সুপ্রিম কোর্টে। শুধু তাই নয়, রাজ্য এই মুহূর্তে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে কী নিয়ম আছে, সেই নিয়মে কোনও পরিবর্তন করা হয়েছে কি না, তাও জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব নথি জমা দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টে।
রাজ্যে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরপর অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস। শিক্ষা দফতরকে না জানিয়েই তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই সংঘাতের শুরু। আগের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, আদালতই একটি সার্চ কমিটি তৈরি করে দেবে। সেই কমিটি উপাচার্য নিয়োগ করবে। কমিটিতে কারা থাকবেন, সেই নামের প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছিল রাজভবন, রাজ্য শিক্ষা দফতর ও ইউজিসি-কে।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে, কোনও পক্ষের মনোনীত বিশেষজ্ঞই কমিটিতে বাড়তি গুরুত্ব পাবে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, কোনও ‘ইলেকশন প্রসেস’ নয়, ‘সিলেকশন প্রসেস’-এর মাধ্যমে হবে উপাচার্য নিয়োগ। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘যদি কোনও পক্ষকে যদি বিশ্বাস করতে না পারেন, অন্তত সুপ্রিম কোর্টকে বিশ্বাস করুন।’
বিশেষত ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো বিশেষ বিষয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে যাতে নির্দিষ্ট বিশেষজ্ঞ সার্চ কমিটিতে থাকেন, সেজন্যই বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং আইনজ্ঞদের নামের তালিকা নতুন করে চাওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই নাম জমা দেওয়া হয়েছে আদালতে। এছাড়াও কমিটিতে রাখা যেতে পারে এমন বিখ্যাত বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষাবিদ, আইন বিশেষজ্ঞদের তালিকা চাইল সুপ্রিম কোর্ট। ৪ অক্টোবরের মধ্যে যাবতীয় নথি জমা দিতে হবে। পরবর্তী শুনানি ৬ অক্টোবর। সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্বে সার্চ কমিটি তৈরি হলে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জট কাটবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সব পক্ষই প্রস্তাবিত নামের তালিকা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
আচার্যের দেওয়া ৫ জনের নামের তালিকা
১. আইআইটি খড়গপুরের ডিরেক্টর বীরেন্দ্র কুমার তিওয়ারি।
২. ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স-এর অধ্যাপক উদয় মৈত্র।
৩. সুরজমল ব্রিজ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য রমেশ চন্দ্র।
৪. দিল্লি আইআইটি-র অধ্যাপক এস ই হাসনাইন।
৫. আইআইটি খড়গপুরের অধ্যাপক ইন্দ্রনীল মান্না।
রাজ্য সরকারের দেওয়া ৫ জনের নামের তালিকা
১. রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সব্যসাচী বসু চৌধুরী।
২. আইএসআই-এর অধ্যাপক অভিরূপ সরকার।
৩. বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দেব নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
৪. সাহা ইন্সটিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের অধ্যাপক অভিজিৎ চক্রবর্তী।
৫. সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অনুরাধা মুখোপাধ্যায়।
ইউজিসি-র দেওয়া ৫ জনের নামের তালিকা
১. ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব আয়ুর্বেদ-এর উপাচার্য সঞ্জীব শর্মা।
২. অন্ধ্র প্রদেশের সেন্ট্রাল ট্রাইবাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য টি ভি কাট্টিমানি।
৩. গুজরাট টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন উপাচার্য নবীন শেঠ।
৪. বাবা সাহেব আম্বেদকর ওপেন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অ্যামি ইউ উপাধ্যায়।
৫. ভোপালের রাজীব গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুনীল কুমার।