চেন্নাই: নির্বাচনী প্রচার চলছে, আগের মতোই ভোটের উত্তাপও রয়েছে, তবুও স্বাদ-গন্ধহীন এবারের বিধানসভা নির্বাচন (Tamil Nadu Assembly Election)। অন্তত এমনটাই মত তামিলনাড়ুর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের। তাঁদের ক্ষোভ, প্রতিবারই নির্বাচনের দিনঘোষণা থেকে ভোটের ফল,দিনভর লাগাতার খাটাখাটনির পর দলীয়কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হত গরমাগরম বিরিয়ানি(Biriyani)-র প্যাকেট। কিন্তু ব্যতিক্রম এবারের নির্বাচন। বিরিয়ানি তো দূরের কথা, ন্যূনতম দই ভাতটুকুও দিচ্ছে না দল।
নির্বাচনে প্রচারে দলীয় কর্মীদের খাটাখাটনিই সবথেকে বেশি হয়। তবে সেই কাজে “না” থাকে না কর্মীদেরও। তবে বিনা পারিশ্রমিকে কী আর কাজ হয়? সেই হিসাবেই দল নির্বিশেষে সকলকে দেওয়া হত বিরিয়ানি। সঙ্গে মাঝেমধ্যে জুটে যেত মদের বোতলও। তবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের নির্বাচনী খরচের উপর নির্বাচন কমিশন কড়া নজর রাখায় রাশ টানা হয়েছে প্রচারের খরচে। আর তাতেই কোপ পড়েছে বিরিয়ানিতে।
তামিলনাড়ুর এক বিরিয়ানি বিক্রেতা বলেন, “বিগত ২০ বছর ধরেই বিরিয়ানি দেওয়ার প্রথা রয়েছে। নির্বাচনের দিনঘোষণার পর থেকেই আমরা সমস্ত রাজনৈতিক দলের তরফেই বিশাল সংখ্যক বিরিয়ানির অর্ডার পেতাম। এক একটি রাজনৈতিক দলই ৩০০ থেকে ৫০০ প্যাকেট বিরিয়ানির অর্ডার দিত। তবে চলতি বছরে এখনও অবধি কোনও বড় অর্ডার পাইনি আমরা।”
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর স্ট্রেনের ফলেই করোনার বাড়াবাড়ি, প্রতিরোধের উপায় জানালেন এইমস প্রধান
ভেলোরের এক বিরিয়ানি বিক্রেতা জানান, নির্বাচনের দিনগুলিতে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ প্যাকেট বিরিয়ানি বিক্রি হতোই। তবে এবার নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মানতে গিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি বিধিভঙ্গের ভয় পাচ্ছেন। সেই কারণেই অনেক দলই ক্যাডারদের সরাসরি খাবার দেওয়ার বদলে টাকা দিয়ে দিচ্ছেন নিজেদের ইচ্ছামতো খাবার কিনে নেওয়ার জন্য।
ভেলোরের এক প্রাক্তন কাউন্সিলর বলেন, “মূলত দলীয়কর্মীদের কাজে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই খাবার দেওয়া হত। বহুবছর আগে যখন প্রথম খাবার দেওয়ার প্রথা শুরু হয়, তখন নিরামিষ খাবারই দেওয়া হত। এরপর সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই বিরিয়ানি দেওয়া শুরু হয়। যে প্রার্থীদের পকেটে তেমন জোর নেই, তাঁরাও কমপক্ষে বিভিন্ন ধরনের খাবার দিতেন দলীয় কর্মীদের।”
বিরিয়ানির দুঃখ শোনা গিয়েছে দলীয়কর্মীদের মুখেও। তাঁদের কথায়, দলের তরফ থেকে আগের মতো বিরিয়ানি দেওয়ার ব্যবস্থা না করায় তাঁরা বাড়ি থেকেই খেয়ে আসেন কিংবা অন্য কোনও কর্মীর বাড়িতে খেয়ে নেওয়া হয়। মাঝেমধ্যে খাবার দেওয়া হলেও, খরচ কমাতে তা বিরিয়ানি থেকে সাম্বার-ভাত বা দই-ভাতে রূপান্তরিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাথরসের নির্যাতিতার পরিবারের প্রাণের ঝুঁকি, মামলা স্থানান্তরিত করার চিন্তাভাবনা আদালতের