Video: পুণের আকাশে নয়া বিপদ! মুথা নদীর উপর একের পর এক ‘মশা টর্নেডো’, দেখুন
Mosquito tornado over Pune’s Mutha river: টর্নেডো অত্যন্ত পরিচিত এক প্রাকৃতিক ঘটনা। স্থানীয়ভাবে তৈরি হলেও, এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। কিন্তু, মশার টর্নেডো দেখেছেন কখনও? বিরল দৃশ্য ধরা পড়ল পুনে শহরের মুখা নদীর উপর। যা নিয়ে ওই অঞ্চলে মহামারি তৈরির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পুণে: টর্নেডো অত্যন্ত পরিচিত এক প্রাকৃতিক ঘটনা। পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে কিউমুলোনিম্বাস মেঘ, বা, কোনও কোনও ক্ষেত্রে কিউমুলাস মেঘ পর্যন্ত দীর্ঘ, তীব্র বেগের বাতাসের ঘূর্ণায়মান কলামকেই বলা হয় টর্নোডো। এটা স্থানীয়ভাবে তৈরি হয়। কিন্তু, এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। সম্প্রতি, পুণের কেশবনগর এবং খারাডির বাসিন্দারাও ভেবেছিলেন স্থানীয় মুথা নদীর উপর বোধহয় টর্নেডো এসেছে। টর্নেডোর ক্ষেত্রে যেমন বাতাসের কলামগুলি ধরে ধুলো-বালি এবং আরও বিভিন্ন বস্তু ঘুরতে থাকে, একই রকম ঘূর্ণায়মান কিছু কলাম দেখা গিয়েছিল মুথা নদীর উপর। তবে, এই ক্ষেত্রে কলামগুলি তীব্র বেগের ঘূর্ণায়মান বাতাসের ছিল না। লম্বা লম্বা কলামগুলি ছিল ঘূর্ণায়মান বিশাল বিশাল মশার ঝাঁকের৷ একে বলা হচ্ছে ‘মশার টর্নেডো’।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিয়ো। সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, মুথা নদীর উপর ঘন মেঘের মতো মশার ঝাঁকের ঘূর্ণি। এই ধরনের ‘মশা টর্নেডো’ কিছু নির্দিষ্ট ঋতুতে ভারতের কিছু কিছু অঞ্চলে দেখা যায় ঠিকি, কিন্তু, পুণের মতো শহুরে অঞ্চলে এই ঘটনা অত্যন্ত বিরল। কেন হঠাৎ করে এই ঘটনা ঘটল পুনেতে? বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, সাম্প্রতিক আবহাওয়ার পরিস্থিতি মশার প্রজননের জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করেছে। আর তাতেই, পুণে শহরাঞ্চলে এত বিপুল মশার সমাবেশ ঘটেছে। দৃশ্যটি একেবারে পরাবাস্তব হলেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই অঞ্চলে এই বিপুল সংখ্যক মশার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মশা, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার মতো বিভিন্ন রোগের বাহক। কাজেই, মশার টর্নেডো থেকে কেশবনগর এবং খারাডি এলাকায় এই রোগগুলির প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনেকে জানতে চেয়েছেন, কীভাবে তৈরি হল এই মশার টর্নেডো?
Horrifying ‘mosquito tornado’ near Pune’s Keshav Nagar has sparked outrage, residents have demanded removal of hyacinths. Mosquito tornadoes like this have been reported from Central America and Russia usually during the rainy season.pic.twitter.com/n4SAwJlnzv
— Pune City Life (@PuneCityLife) February 10, 2024
এক ব্যক্তি দাবি করেছেন, প্রকৃতির উপর মানুষের হস্তক্ষেপেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নদীতে এমন বেশ কিছু প্রাণী থাকে, যারা মশার লার্ভা খায়। তাতে মশার সংখ্যানিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু, পুরসভা থেকে নদীতে নর্দমার দুষিত জল ফেলা হচ্ছে। যার ফলে, নদীর জলের সেই প্রাণীগুলির অস্তিত্ব সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে, মশার সংখ্যার অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি ঘটেছে। নদী-পৃষ্ঠ মশার বংশবৃদ্ধির সহায়ক হয়ে উঠেছে। আরও এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, এটা কেশবনগরের নিত্যদিনের বিপদ। কেশবনগর এবং খারাডিই পুনে পুরসভার সবথেকে উপেক্ষিত এলাকা বলে দাবি করেছেন তিনি। তবে, শিগগিরই এই মশা টর্নেডো পুরো শহরেই ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পরিবেশবিদ অমিত সিং-এর মতে, ‘মশা টর্নেডো’র জন্য দায়ী রিভার ফ্রন্ট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প। মুথা নদীর উপর ঘূর্ণায়মান মশার ঝাঁকের এই ঘটনা অবশ্যম্ভাবী ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, “এটা রিভার ফ্রন্ট ডেভেলপমেন্টের কারণেই হয়েছে। আমরা যারা দীর্ঘদিন ধরে বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ নিয়ে গবেষণা করছি, তারা এই বিষয়ে বারবার সতর্ক করেছি। দূষিত জলে মাছ, ব্যাঙাচি এবং ব্যাঙের মতো জীব বাঁচতে পারে না। নদীর বাস্তুতন্ত্রে তাদের বড় ভূমিকা রয়েছে। তারা মশার লার্ভা খেয়ে নেয়। জল দূষণের ফলে, তা ঘটছে না। একইভাবে, সাপ বেঁচে থাকে ব্যাঙ খেয়ে। নদীতীরবর্তী বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে, এই প্রাণীদের আবাসস্থলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মশার ঝাঁকের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মহামারীর আশঙ্কা তৈরি করছে।”