Hantan Competition: ‘আশিতেও হাঁটা থামিও না!’ ২০০ মিটার হেঁটে সোনা জিতে দেশের নাম উজ্জ্বল করলেন ৭৯ বছরের ‘যুবতী’
kolkata: রবিবার সিঙ্গাপুরে বয়স্কদের হন্টন প্রতিযোগিতায় সাত দেশের ৯ প্রতিযোগীকে হারিয়ে প্রথম হয়েছেন অণিমাদেবী
কালনা: বয়স ঊনআশি। কিন্তু কে বলবে? এখনও রয়েছে সেই যৌবনের তেজ, তারুণ্যের ভরপুরতা। আর এই দু’য়ে ভর করে কালনার মেঠো পথ থেকে বিশ্ব জয়ের মঞ্চে বাঙালি প্রবীণ। ৭৯ বছর বয়সে আক্ষরিক অর্থে ‘হেঁটে’ বিশ্ব জয় করলেন বাংলার এক অজ-পাঁড়াগায়ের স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা অণিমা তালুকদার।
রবিবার সিঙ্গাপুরে বয়স্কদের হন্টন প্রতিযোগিতায় সাত দেশের ৯ প্রতিযোগীকে হারিয়ে প্রথম হয়েছেন অণিমাদেবী। বয়স্কদের ২০০ মিটার দৌড়ে তিনিই প্রথম থেকে প্রথমে। গত দু’দিন ধরে (৪-৫ জুন) ১২৬৩টি ইভেন্টে ৬২৮ জন প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিলেন। সারা দেশ জুড়ে ৪৩ জন অ্যাথলিট ছিলেন সিঙ্গাপুরের মঞ্চে। পশ্চিমবঙ্গে থেকে অণিমাদেবী ছাড়াও লং জাম্পে সোনা জিতেছেন চল্লিশোর্ধ্ব স্কুলশিক্ষক দেবাশিস চক্রবর্তী। হন্টন দৌড়ে প্রথম স্থান অধিকার করে অণিমাদেবী বলেন, ‘এই বুড়ো বয়সে যে বিশ্ব জয় করব ভাবিনি। সকলকে বলব অন্তত কুড়ি মিনিট ঘাম ঝরিয়ে হাঁটুন। হাঁটাই মহৌষধ।’
এই বয়সেও সুগার,প্রেসার,হাঁপানি কিছুই নেই অণিমাদেবীর। যে বয়সে ঘরই একমাত্র বয়স্কদের ঠাঁই বলে ধরে নেওয়া হয়, সেই বয়সে অণিমাদেবী করলেন বিশ্ব জয়। গর্বিত করলেন রাজ্য তথা দেশবাসীকে।কথায় আছে আশিতে আসিও না। সেখানে বয়সকে নস্যি করে দেশের পতাকা গায়ে জড়িয়ে নতুন শুরুর রান আপ নিচ্ছেন আশির দোরগোড়ায় থাকা অণিমা। মায়ের সাফল্যে গর্বিত চিকিৎসক পুত্র অরুণাংশু তালুকদার, চিকিৎসক পুত্রবধূ পায়েল তালুকদার ও নাতনি অহনা তলুকদার।
তবে এই যাত্রাপথের সুচনা হয়েছিল বাদাগাছি জুনিয়র হাইস্কুলে কাজ করার সময় থেকে। কৃষ্ণদেবপুরের বাড়ি থেকে বাস ধরে স্কুল পর্যন্ত যাওয়ার উপায় ছিল না। স্কুলের দু’কিলোমিটার দূরে নামিয়ে দিত বাস। সেখান থেকে হেঁটে স্কুল পৌঁছে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করতেন অণিমা দেবী। অবসরের পরে স্কুলের পড়ুয়াদের বিভিন্ন খেলাধুলোর প্রতিযোগিতায় যোগ দিতেন তিনি। সেই রকমই এক প্রতিযোগিতার ময়দানে হণ্টন প্রতিযোগিতায় নাম দেওয়ার জন্য অণিমাদেবীকে বলেছিলেন এক শুভাকাঙ্ক্ষী। ২০০৪ সালে অবসরের পর প্রতিযোগিতায় নামা শুরু অণিমার। মহকুমা-জেলা-জাতীয় স্তরের মঞ্চ জয় করে এবার বিশ্বজয় ঊনআশির অণিমার। বলছেন, আশিতেও হাঁটা থামিও না!