কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য জুড়ে পুরসভাভিত্তিক ফলাফল খারাপ হয়েছে বহু জায়গায়। সেই নিয়ে কাটাছেঁড়াও হয়েছে অনেক। ভোটের ফল প্রকাশের প্রায় ৬ মাস পর এবার রদবদল! সূত্রের খবর, ক্ষুব্ধ তৃণমূল ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পুরসভারগুলির মাথা বদলের প্রস্তাব দিয়েছেন। অর্থাৎ কোপে পড়তে পারেন একাধিক পুরসভার পুরপ্রধান থেকে কাউন্সিলর। আনুমানিক ১২৫টি পুরসভায় রদবদল হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে কি কলকাতাতেও? এমন প্রশ্নও উঠছে।
সূত্রের খবর, অভিষেকের সেই তালিকায় নেই কলকাতা। কিন্তু কেন? কোন সমীকরণে বাদ ফিরহাদ হাকিমের কলকাতা?
রাজ্যের ৬৯টি পুরসভায় লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে বিজেপি এগিয়ে তৃণমূলের থেকে। কলকাতাতেও এর প্রভাব পড়েছে। লোকসভা ভোটে কলকাতার দু’টি কেন্দ্রে জিতেছে তৃণমূল। কিন্তু কলকাতায় ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪৮টি ওয়ার্ডে বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল শাসকদল। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কলকাতার পুরভোটে ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩৭টি ওয়ার্ডেই জিতেছিল তৃণমূল। অর্থাৎ লোকসভায় ওয়ার্ড ভিত্তিক ফল আগের থেকে খারাপ। তারপরও কেন কলকাতা এই তালিকায় নেই? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মোট চারটি কারণ তুলে ধরছেন।
প্রথমত, ফিরহাদ হাকিম ছাড়া কলকাতা পুরসভাকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ক্ষমতা আর কোনও নির্বাচিত কাউন্সিলরের নেই বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা, এই দু’টি বিষয় ফিরহাদকে এগিয়ে রেখেছে কয়েক কদম।
দ্বিতীয়ত, ফিরহাদ সংখ্যালঘু মুখ। কলকাতা পুরসভা থেকে তাঁকে অপসারিত করলে, সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে বিরূপ প্রভাব পড়বে না তো? সেই আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।
তৃতীয়ত, ফিরহাদের সঙ্গে অভিষেকের সম্পর্ক নিয়ে আগেও অনেক জল্পনা হয়েছে। তারপরও ফিরহাদ হাকিমকে সরালে দলের ভিতরে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের বিতর্ক সামনে আসবে না তো? সেই আগুনে হয়ত ঘি দিতে নারাজ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
চতুর্থত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রবীণ নেতা হিসেবে যাঁরা পরিচিত, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ফিরহাদ হাকিম। ফিরহাদ হাকিমকে সরানোর প্রস্তাব দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৃত্তে হাত গলাতে চাইছেন না অভিষেক? ঠিক কদের ওপর কোপ পড়তে চলেছে, তা সময়ই বলবে।