বহুজাতিক সংস্থার নথি জাল করে সরকারের কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ, CID-র জালে ৪
CID: এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ নির্দেশের পরেই লেকটাউন এলাকায় হানা দেয় সিআইডির সাইবার সেল। সেখান থেকেই এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত ঋত্বিক বেহেতি, রমাকান্ত বর্মন, ভিনিতা বর্মন এবং অরুণোদয় মজুমদারকে গ্রেফতার করে তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
কলকাতা: বহুজাতিক সংস্থার নথি জাল করে রাজ্য সরকারের কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে সিআইডির জালে এক মহিলা সহ চারজন। কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) নির্দেশে লেক টাউন থেকে শুক্রবার ৪ জনকে গ্রেফতার করল সিআইডির সাইবার সেল। গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত ঋত্বিক বেহেতি।
সিআইডি সূত্রে খবর, ২০১৯ সালে গ্রিনেজ বায়ো প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থার ডিরেক্টর লক্ষ্মী টাটিয়া বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন যে, কেউ বা কারা তাদের সংস্থার ইমেইল একাউন্ট, ওয়েবসাইট হ্যাক করে সেখান থেকে সংস্থার চার ডিরেক্টরের নাম পরিবর্তন করে দেয়। পাশাপশি সংস্থার লেটারহেড জাল করে তার মাধ্যমে সার্টিফাইড করে আর ও সি পরিবর্তন করে নেয়। এরপরই সেই সংস্থার নামে নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে প্রতিটি ভেন্ডারের কাছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করে দেয়। পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আসা কয়েক কোটি টাকা সেই ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নিয়ে গায়েব করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, এই সংস্থা বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের বায়ো হ্যাজার্ডের ডিসপোজালের দায়িত্বে ছিল। তারফলে রাজ্য সরকার সঙ্গে চলত কোটি কোটি টাকার লেনদেন। এমনটাই খবর পুলিশ সূত্রে। শুরুতে এ ঘটনার বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার(Bidhannagar Cyber Crime Police Station) পক্ষ থেকে চলছিল তদন্ত। কিন্তু তাতে বিশেষ অগ্রগতি না হওয়াতেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এই সংস্থার ডিরেক্টর। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চ এই তদন্তের দায়িত্ব দেয় সিআইডির সাইবার সেলকে। ইতিমধ্য়েই দ্রুত তদন্তের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের রাজশেখর মন্থার সিঙ্গেল বেঞ্চের তরফে ২৫ মে-র মধ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সিআইডি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেই লেক টাউন এলাকায় হানা দেয় সিআইডির সাইবার সেল। সেখান থেকেই এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত ঋত্বিক বেহেতি, রমাকান্ত বর্মন, ভিনিতা বর্মন এবং অরুণোদয় মজুমদারকে গ্রেফতার করে সিআইডি।এদের সঙ্গে আর কাদের যোগ রয়েছে সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। সিআইডি সূত্রের খবর, মূল অভিযুক্ত ঋত্বিক লেটারহেড জাল করে সার্টিফাইড করে অভিযুক্তরা সংস্থার চার ডিরেক্টরের নাম পরিবর্তন করে নিজেদের নাম জুড়ে দেয়। এরপরই রাজ্য সরকারের তরফে আসা কয়েক কোটি টাকা নিজেদের অ্য়াকাউন্টে হাতিয়ে নেয় এই ৪ জন। শুক্রবার অভিযুক্তদের বিধাননগর আদালতে তোলা হয়। কিন্তু, তারপরেই দেখা যায় নাটকীয় মোড়। গ্রেফতারির দিনই জামিনে মুক্ত প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডা সহ ৪ জন। গ্রেফতারির পরেও সিআইডি কেন তাদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হল না, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্নও উঠছে তদন্তকারী অফিসারের ভূমিকা নিয়ে।