Swasthya Bhavan: রাজ্যে জীবনদায়ী ইঞ্জেকশনের মান নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন, ‘ওরা টাকা দিচ্ছে না’, কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলছে স্বাস্থ্য ভবন
Swasthya Bhavan: অভিযোগপত্র জমা পড়েছে এনআরএস কর্তৃপক্ষের কাছেও। সূত্রের খবর, প্লাজমা নির্গত ফ্যাক্টরে রোগীদের `বিপদ’ হতে পারে বলে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের সতর্ক করেছিলেন হিমোফিলিয়ার চিকিৎসায় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের একাংশ। এরপরও কেন প্লাজমা নির্গত ফ্যাক্টর-৮’এর বরাত দেওয়া হল? প্রশ্ন তুলে সরব চিকিৎসক সংগঠনের নেতারা।
কলকাতা: সরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রে হিমোফিলিয়ার জীবনদায়ী ইঞ্জেকশনের মান নিয়ে উঠল গুরুতর প্রশ্ন। অভিযোগ, এনআরএসে প্লাজমা নির্গত ফ্যাক্টর-৮ নিয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হিমোফিলিয়া-A রোগে আক্রান্তেরা। জ্বর, বমি, মাথাব্যথা, মাথাঘোরা, এলার্জি, শ্বাসকষ্টের উপসর্গে কাবু আক্রান্তেরা। হেমাটোলজিস্টদের মতে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোগীদের পক্ষে ‘বিপজ্জনক’।
অন্যের রক্তরস থেকে তৈরি ইঞ্জেকশনে এইচআইভি, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি’র মতো অসুখেরও শিকার হতে পারেন হিমোফিলিয়ায় আক্রান্তেরা। অভিযোগ, হিমোফিলিয়ার চিকিৎসায় খরচ কমাতে রিকম্বিন্যান্ট ফ্যাক্টরের বদলে প্লাজমা নির্গত ফ্যাক্টর দিচ্ছে রাজ্য। ফ্যাক্টর বদলের পরই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে আক্রান্তদের। ফের রিকম্বিন্যান্ট ফ্যাক্টর চালুর দাবিতে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনে স্মারকলিপি জমা দেন আক্রান্তেরা।
কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলছে স্বাস্থ্য ভবন
এই খবরটিও পড়ুন
অভিযোগপত্র জমা পড়েছে এনআরএস কর্তৃপক্ষের কাছেও। সূত্রের খবর, প্লাজমা নির্গত ফ্যাক্টরে রোগীদের `বিপদ’ হতে পারে বলে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের সতর্ক করেছিলেন হিমোফিলিয়ার চিকিৎসায় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের একাংশ। এরপরও কেন প্লাজমা নির্গত ফ্যাক্টর-৮’এর বরাত দেওয়া হল? প্রশ্ন তুলে সরব চিকিৎসক সংগঠনের নেতারা। কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলেছে স্বাস্থ্য ভবনও। ‘কেন্দ্র অর্থ মঞ্জুর করলেও মেলেনি টাকা’। এমনই দাবি স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদের একাংশের। তাঁদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে ফ্যাক্টর সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে রাজ্য। একইসঙ্গে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণ খতিয়ে দেখার আশ্বাস এসেছে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে।
আসলে জিনগত ত্রুটির কারণে রক্ত জমাট না বাঁধার অসুখ হল হিমোফিলিয়া। কারও ক্ষেত্রে ফ্যাক্টর-৮ নামের প্রোটিনের অভাবে রক্ত জমাট বাঁধে না। কারও ক্ষেত্রে আবার ফ্যাক্টর-৯ এর অনুপস্থিতি এই অসুখের কারণ। ফ্যাক্টর-৮ এর অনুপস্থিতি ঘটলেই বলা হয়, হিমোফিলিয়া। ফ্যাক্টর-৯ এর অনুপস্থিতিতে দেখা যায় হিমোফিলিয়া-বি। সময়মতো ফ্যাক্টর না দিলে রক্তক্ষরণ হয়ে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। বছরের গোড়া থেকে ফ্যাক্টর সঙ্কটে ভুগছে রাজ্য।
এদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে হিমোফিলিয়া আক্রান্তদের হাতে মহার্ঘ ওষুধ তুলে দিতে ৫৭ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে কেন্দ্র। সূত্রের খবর, এরপরও ৮ টাকা ৩০ পয়সা দরে রিকম্বিন্যান্ট ফ্যাক্টর সরবরাহে রাজি সংস্থাকে বরাত দেয়নি স্বাস্থ্য ভবন। উল্টে বিশেষজ্ঞ কমিটির আপত্তি উড়িয়ে প্লাজমা থেরাপির পথে হাঁটে রাজ্য। যা আদতে পিছনের পথে হাঁটা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা তার কারণ প্লাজমা থেকে হেপাটাইটিস বি, সি, এইচআইভি’র মতো সংক্রমণে হিমোফিলিয়ায় আক্রান্তেরা সংক্রামিত হতে পারেন। এমনটা যে আগে হয়নি তা-ও নয়। এই জন্যই প্লাজমা থেরাপিকে ব্রাত্য করে ফ্যাক্টর দেওয়াকে শ্রেয় মনে করেন হেমাটোলজিস্টরা।
ফ্যাক্টর সরবরাহের সঙ্কটের জন্য হিমোফিলিয়ার আরও উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি এক্সটেন্ডেড হাফ লাইফ অথবা নন ফ্যাক্টর রিপ্লেসমেন্ট থেরাপিকে আপন করে নিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, কেরল, গুজরাত, তেলেঙ্গনা, পঞ্জাব, ছত্তীশগঢ়, এমনকী ঝাড়খণ্ডও। কিন্তু কেন্দ্রের আর্থিক অনুমোদনের পরেও এখন এ রাজ্যেই কেন অমিল হিমোফিলিয়ার আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি? উঠছে প্রশ্ন।