Body Recovered in Kolkata: ৪ দিন ধরে দিদির দেহের পাশেই খাওয়া, ঘুমানো; রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া ফিরল কলকাতায়
Kolkata death: পুলিশ যখন আজ সুপ্রিয়া ঘোষের দেহ উদ্ধার করতে গিয়েছিল, তখনও দেহের পাশেই বসেছিলেন ভাষ্কর। একেবারে ভাবলেশহীন।
কলকাতা: বড়দিদির মৃতদেহ আগলে বোন এবং ভাই। ফের রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া শহর কলকাতায়। ঘটনাটি ঘটেছে ইস্ট মল রোডে। প্রায় চার দিন ধরে দিদির মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছে এক ব্যক্তি। টানা চার দিন ধরে পাশে বসে খাওয়া, ঘুমানো সমস্ত কাজ করলেন। বিষয়টি জানাজানি হতেই হতবাক এলাকার লোকেরা। ঘটনায় ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ইস্ট মল রোডে (East Mall Road)।
পুলিশ সূত্র মারফত খবর, আজ দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দারা পচা গন্ধ পেতে শুরু করেন। আর তখন থেকেই সন্দেহ জাগে তাঁদের মনে। দেরি না করে স্থানীয়রাই বাগুইআটি থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে ওই বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে। আর ঘরের ভিতর ঢুকতেই রহস্যের উন্মোচন। কম্বলের উপর এক মহিলার মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। শরীরের অধিকাংশ অংশই পচা গলা। মৃত মহিলার নাম সুপ্রিয়া ঘোষ (৫৬)। ইস্ট মল রোডের ৩/৬৪ নম্বর ওই বাড়ির ভিতরেই সেই সময় ছিলেন তাঁর ভাই ভাস্কর ঘোষ এবং তাঁর ছোট বোন রাখী ঘোষ।। ভাষ্কর ঘোষের বয়স ৪২ বছর, বোন রাখী ঘোষের বয়স ৩৬ বছর।
ভাষ্কর ঘোষের মা মারা যাওয়ার পর থেকে দুই বোন এবং এক ভাই এই বাড়িতেই থাকতেন। পুলিশ যখন আজ সুপ্রিয়া ঘোষের দেহ উদ্ধার করতে গিয়েছিল, তখনও দেহের পাশেই বসেছিলেন ভাষ্কর। একেবারে ভাবলেশহীন। বোন রাখী ঘোষও পাড়ায় খুব একটা বেরোতেন না। তবে পুলিশ সূত্র মারফত খবর, ভাই এবং বোন দুই জনেই মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। দমদমের মাদার টেরেজা মিশনারি থেকে খাবার নিয়ে আসতেন ছোট বোন। বাড়িতেই সেই খাবার খেতেন তিন জনে। এই ভাবেই দীর্ঘ এক থেকে দেড় বছর ধরে দৈনন্দিন জীবন যাপন করতেন তাঁরা। এদিকে পচা গলা অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করে আরজিকর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে আসার পরেই বোঝা যাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ।
তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই পরিবারটি মানসিক বিকারগ্রস্ত। সেই কারণে, এলাকায় কোনও প্রতিবেশীর সঙ্গে তেমন যোগাযোগ হত না। বাড়িতে ময়লা আবর্জনা ভর্তি, ঠিক সেই কারণেই গন্ধ পাওয়ার প্রথমে কারও কোনও সন্দেহ হয়নি। আজ দুপুরে সেই পচা দুর্গন্ধ অতিরিক্ত মাত্রায় ছড়াতে শুরু করে সন্দেহ বাড়ে এলাকার মানুষদের। তারপরেই খবর দেওয়া হয় বাগুইআটি থানায়। পুলিশ এসে দেহটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করে।