Calcutta High Court: ‘এটা কি কোনও বিচারপতির আচরণ?’, এতদিনে হাইকোর্টে উঠল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, কেন?
Calcutta High Court: কল্যাণ আদালতে জানান, এই চাকরি প্রার্থীদের হয়ে একসময় মামলা করছিলেন ফিরদৌস শামিম। তারপর যখন রাজ্য এদের জন্য অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করল তখন আবার ফিরদৌস শামিমরা রাজ্যের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় মামলা করলেন। মামলাকারীরা কী করবেন ? সেই প্রশ্ন করেন কল্যাণ।

কলকাতা: আদালত অবমাননার অভিযোগে কুণাল ঘোষের মামলায় এবার হাইকোর্টে সওয়াল আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য, বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের বিশেষ বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। এদিন আদালতে কুণালের হয়ে আইনজীবী কল্যাণের আদালতে সওয়াল করার দিন ছিল। কুণালের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে কল্যাণের মুখে এল প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। তিনি প্রশ্ন তুললেন, ‘এটা কি একজন বিচারপতির আচরণ?’
কুণালের আদালত অবমাননার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এদিন কল্যাণ বলেন, “প্রতিদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চোর – ডাকাত বলে আক্রমণ করছে। রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র হয়ে আমি কী করব?” তিনি আদালতের কাছে জানতে চান, “আইনজীবী যদি রাজনৈতিক কথা বলেন এবং অন্য প্রতিপক্ষ দলের নেতাদের আক্রমণ করেন তাহলে কি তিনি আদালতের রক্ষাকবচ চাইতে পারেন?”
কল্যাণ আদালতে জানান, এই চাকরি প্রার্থীদের হয়ে একসময় মামলা করছিলেন ফিরদৌস শামিম। তারপর যখন রাজ্য এদের জন্য অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করল তখন আবার ফিরদৌস শামিমরা রাজ্যের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় মামলা করলেন। কল্যাণের প্রশ্ন, মামলাকারীরা তাহলে কী করবেন ?
ঘটনাপ্রসঙ্গে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। কল্যাণ আদালতে বলেন, “একজন প্রাক্তন বিচারপতি সমস্ত বিশ্বাস এবং আস্থা ভেঙেচুরে দিয়েছেন। চেয়ারে বসে বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি বলেছিলেন ‘কান ধরে তুলে নিয়ে আয়’, এটা একজন বিচারপতির আচরণ?”
কল্যাণ এও বলেন, “বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর অবমাননার ক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু আইনজীবীদের হেনস্থা কি আদৌ অপরাধমূলক আদালত অবমাননা হতে পারে ?” পুলিশের কাছে কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে আদৌ কোনও অভিযোগ দায়ের হয়েছে কিনা, সেটাও জানতে চান আইনজীবী কল্যাণ। আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, এই অভিযোগে কুণালের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। স্বতঃপ্রণোদিত ওই মামলায় কুণাল ছাড়াও ওই মামলায় রয়েছে উচ্চ প্রাথমিকের কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীর নাম।
মামলার প্রেক্ষাপট
সুপার নিউমারারি পোস্ট সংক্রান্ত মামলার শুনানি কেন দ্রুত হচ্ছে না,তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও আইনজীবী ফিরদৌস শামিমকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বিকাশের দুই জুনিয়র আইনজীবীদের জুতো দেখান তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর এই ঘটনায় প্রধান বিচারপতিকে অভিযোগ জানানো মাত্রই তিনি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মামলা গ্রহণ করেন। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বার অ্যাসোসিয়েশনের কয়েক জন আইনজীবী। তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে বলে স্থির করে দেন প্রধান বিচারপতি।

