CM Mamata Banerjee: ‘বিভিন্ন দলের সঙ্গে বসে অ্যাডজাস্টের চেষ্টা করব’, দার্জিলিং নিয়ে বিনয়-শান্তাকে কড়া বার্তা মমতার
Darjeeling: বিনয় তামাং বলেছিলেন, পাহাড়ে ভোটের আগে আর কোনও জোট চান না তাঁরা।
কলকাতা: পুরভোটের ফল প্রকাশের পরই শিলিগুড়িতে দার্জিলিং পুরসভার ফল নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন পাহাড় তৃণমূলের নেতারা। নেতৃত্বে ছিলেন বিনয় তামাং। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তা ছেত্রীও। ভোটের ফল নিয়ে আলোচনা হয় সেখানে। এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিনয় তামাং বলেছিলেন, পাহাড়ে ভোটের আগে আর কোনও জোট (Pre Poll Alliance) চান না তাঁরা। এ নিয়ে সুব্রত বক্সীকে চিঠিও দিয়েছেন। মঙ্গলবার তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠকে উঠে এল সে প্রসঙ্গ। এই ধরনের বক্তব্য যে কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, তা স্পষ্ট বলে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার কড়া বার্তা, কোনওভাবেই এ ধরনের মন্তব্য করা যাবে না। একইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জিটিএ নির্বাচনের আগে পাহাড়ের বিভিন্ন দলের সঙ্গে বসতেও চান তিনি।
মঙ্গলবার তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠক ছিল নজরুল মঞ্চে। দলের শীর্ষ নেতা, সাংসদ, বিধায়ক, যুব-ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি —সকলেরই উপস্থিতি ছিল এই বৈঠকে। সেখানে ছিলেন সাংসদ শান্তা ছেত্রী। তাঁর নাম করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শান্তা তুমি কখনও বলতে পারো না কে একা দার্জিলিং ভোটে লড়বে। এটা দলের সিদ্ধান্ত। বিনয় বলেছে। দেখো আমি তোমাদের একটা কথা বলি, আমি সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই। এখন দার্জিলিংয়ে শান্তি এসেছে। আমার খুব ভাল লাগছে। দার্জিলিংয়ে ভোট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তাতে আমি খুবই খুশি। এরপর জিটিএ নির্বাচনও হবে। কিন্তু তার আগে আমি সকলের সঙ্গে বসতে চাই। আমি চেষ্টা করব বিভিন্ন দলের সঙ্গে বসার এবং আলোচনার। আমরা দেখতে চাই দার্জিলিং হাসছে। তাই আমার দলের তরফে কেউ কোনওরকম বক্তব্য এভাবে বলতে পারে না। এটা দলের জন্য ক্ষতিকর। দার্জিলিং নিয়ে তোমাদের আমি বলে দিলাম।”
বিনয় তামাংয়ের বক্তব্য ছিল, “আগামিদিনে যে ভোটই আসুক আমরা তৃণমূল কংগ্রেস তাতে লড়ার জন্য তৈরি আছি। এবার দল বলেছিল ৩২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টিতে আমাদের প্রতীকে প্রার্থী দিতে। আমরা দিয়েছি এবং ২ জন জিতেছেন। তৃণমূল কংগ্রেস ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে। সেটা যদি আরও ৭ শতাংশ বাড়ানো যায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে যাবে। পাহাড়ে তৃণমূলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আমাদের মনে হয় আগামিদিনে আর প্রি-পোল অ্যালায়েন্সর দরকার নেই। প্রয়োজন হলে ভোট পরবর্তী জোট বা পোস্ট-পোল অ্যালায়েন্সে যাব। এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তৈরি করে আমাদের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকেও পাঠিয়েছি। আগে থেকে আমরা আর জোটে যাব না, এ কথা আমরা রিপোর্টে লিখেছি।”
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনের বার্তা পাহাড়ের রাজনীতির ক্ষেত্রেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এবার দার্জিলিং পুরভোটে জয়ী হয়েছে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি। তিন মাসের একটি রাজনৈতিক দলের এই উত্থান নিঃসন্দেহে পাহাড় রাজনীতিতে আলাদা ছাপ ফেলেছে। অজয় এডওয়ার্ড একসময় বিজেপির সঙ্গে সখ্যতা রেখে চললেও পরে নিজের মতো করেই চলার সিদ্ধান্ত নেন। অনেকেই বলেছেন, অজয়ের দলের উঠে আসা অনেকটা আম আদমি পার্টির বেড়ে ওঠার মতো। আগামিদিনে পাহাড়ের রাজনীতিতে হামরো পার্টি যে ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে তাও মনে করছেন অনেকে। সেই জায়গায় জিটিএ নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন দলের সঙ্গে বসতে চাওয়ার বার্তা ইঙ্গিতবাহী।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘বোনেরাই বিধানসভার সম্মান রক্ষা করেছে’, নারী দিবসে কুর্নিশ মমতার