কলকাতা: দিল্লির পাতিয়ালা হাউজ় কোর্টে কয়লা পাচার কাণ্ডে (Coal Scam Case) ভিডিয়ো কনফারেন্সে হাজিরা দিলেন অভিষেক (Abhishek Banerjee) পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় (Rujira Banerjee)। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হাজিরায় আপত্তি ইডির। তবে সূত্রের খবর, সশরীরে হাজিরা না দিলে আরও কড়া আইনি পদক্ষেপের পথে হাটতে পারেন ইডি গোয়েন্দারা। আজ, বৃহস্পতিবারই রয়েছে পরবর্তী শুনানি।
কয়লাকাণ্ডে সবার প্রথম সেপ্টেম্বর মাসেই সস্ত্রীক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই ডাকে অভিষেক সাড়া দেন। তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখিও হন। কিন্তু যাননি রুজিরা। তিনি পালটা চিঠি দিয়ে ইডি-র আধিকারিকদের নিজের বাসভবনে ডেকে পাঠান। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন, তিনি দুই সন্তানের মা। কোভিড পরিস্থিতিতে একা দিল্লি যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব না। সেই কারণে যেন কলকাতার দফতর থেকে আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে যা প্রশ্ন করার সেটা করেন।
রুজিরার এই আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি আর্থিক তছরূপের তদন্ত করা এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। জানা যায়, অভিষেককে আরও কয়েকবার তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি। এই মর্মে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি। চিফ মেট্রোপলিটান আদালতের বিচারক রুজিরাকে সমন পাঠান। একাধিক তলব সত্ত্বেও রুজিরা হাজিরা এড়িয়ে যাচ্ছেন, ইডি-র এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এই সমন পাঠানো হয়।
দিল্লি হাইকোর্টে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইডি আধিকারিকরা চাইলে তাঁকে কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। প্রয়োজনে গ্রেফতারও করতে পারেন। কিন্তু যেটাই করা হয়, সেটা যেন কলকাতাতেই হয়।
দিল্লি তলব থেকে যাতে রেহাই মেলে, তার জন্য আবেদন করেন রুজিরা। আইন মেনে কলকাতাতেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করুক ইডি। এই আবেদন জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের অভিষেক-রুজিরা।
এর আগে দিল্লিতে ইডি দফতরে হাজিরা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। টানা ৯ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন ইডির আধিকারিকরা। তারপর ৪৮ ঘণ্টা যেতে না যেতে ফের সমন পাঠানো হয়েছিল অভিষেককে। কিন্তু দিল্লিতে একবার যায়নি রুজিরা। এদিন ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমেই কয়লাকাণ্ডে দিল্লির পাতিয়ালা হাউজ় কোর্টে হাজিরায় দেন রুজিরা।
কিন্তু ইডি কর্তারা প্রথম থেকেই চাইছেন, যাতে সশরীরে হাজিরা দেন রুজিরা। এইভাবে ভার্চুয়ালি হাজিরায় আপত্তি হয়েছে ইডি আধিকারিকদের। সেক্ষেত্রে ইডি সূত্রে খবর, রুজিরার বিরুদ্ধে আরও বড় আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তবে তা কী, সেটা স্পষ্ট নয়। এদিনের শুনানি শেষে ইডি নিতে পারে তার পরবর্তী পদক্ষেপ।