Bengal School: ভাঁড়ে মা ভবানী, স্কুলে স্কুলে টানাটানি! অবস্থার বদল কবে?
Bengal School: শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড! কিন্তু বাংলায় সেই শিরদাঁড়ার জোর তো ক্রমশ কমেই চলেছে। শেষ হওয়ার পথে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ। চলতি শিক্ষাবর্ষের এগারো মাস শেষ হতে চলল। অথচ, তার আগে রোজকার খরচ চালানোর মতো অবস্থা নেই রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির।
কলকাতা: রোজকার খরচ চালানোই কঠিন হয়ে পড়ছে রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির। অনুদান না আসায় ক্লাসরুম থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে পড়ানোর একটার পর একটা গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী। কেন গুরুত্বপূর্ণ? কারণ, ফের আদালতের তীব্র ভত্সর্নার মুখে পড়েছে পুলিশ। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কুন্তল ঘোষদের জামিন প্রসঙ্গ। এসব খবরের ভিড়ে সরকারি স্কুলে দুর্দশাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি থেকে শুরু করে, হাইস্কুল। সব সরকারি স্কুল, রাজ্যের কাছ থেকে একটা ফান্ড পায়। যে খাতে এই টাকাগুলো রাজ্য খরচ করে, তার নাম কম্পোজিট গ্রান্ট। এই অনুদানের টাকায় স্কুলগুলোতে, চক, ডাস্টার থেকে সব কেনা হয়। বিদ্যুতের বিল মেটানো হয়। মানে স্কুলগুলোর বেসিক চাহিদা যেগুলো, সেগুলো পূরণ হয়। কিন্তু এ বছর এগারোটা মাস শেষ হতে চললেও, সরকারি সেই অনুদান নাকি স্কুলগুলো পায়নি এমনটাই অভিযোগ। এমনিতেই সরকারি স্কুলগুলো ধুঁকছে, সঙ্গে রয়েছে ভুড়ি ভুড়ি দুর্নীতির অভিযোগ। একে স্কুলে শিক্ষক নেই, এবার চক-ডাস্টারও নেই । কিন্তু কেন এই অবস্থা?
শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড! কিন্তু বাংলায় সেই শিরদাঁড়ার জোর তো ক্রমশ কমেই চলেছে। শেষ হওয়ার পথে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ। চলতি শিক্ষাবর্ষের এগারো মাস শেষ হতে চলল। অথচ, তার আগে রোজকার খরচ চালানোর মতো অবস্থা নেই রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির। অভিযোগ, নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ হতে চললেও, এখনও রাজ্যের প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে প্রায় কোনও স্কুলে আসেনি কম্পোজিট গ্রান্ট বা অনুদানের টাকা। এর ফলে দৈনন্দিন কাজ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্কুলগুলিকে। টাকা নেই শিক্ষা সামগ্রী কেনার।
কোন কোন খাতে ব্যবহার করা হয় কম্পোজিট গ্রান্ট?
চক, ডাস্টার,মানচিত্র, প্রশ্নপত্র-সহ অন্যান্য সরঞ্জাম ক্রয়ে
চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ মেরামতির কাজে
বিদ্যুত্, টেলিফোন, ইন্টারনেট বিল মেটানো হয়
এদিকে আর কিছুদিন পরেই মাধ্যমিক পরীক্ষার টেস্ট হতে চলেছে। তার প্রশ্নপত্র ছাপাতে হবে। সরকারি অনুদান না আসায় স্কুলের চক-ডাস্টার কেনার খরচ, বিদ্যুৎ বিল, পরীক্ষা পরিচালনার খরচ পর্যন্ত কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। ফলে স্কুলগুলি মাধ্যমিকের টেস্টের জন্য খরচ কোন খাত থেকে ব্যবস্থা করবে সেই প্রশ্ন তো রয়েইছে। বাঁকুড়া জেলার নামকরা সরকারি স্কুলের মধ্যে অন্যতম মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল। সেখানে ক্লাসরুমগুলিতে চক খুঁজতে দূরবীণ লাগতে পারে! সাধারণত যেসব চক লিখতে না পারার জন্য ফেলে দিতে হয়, সেই ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র চক কোনওরকমে আঙুলে জড়িয়ে বোর্ডে লিখছেন শিক্ষকরা। আধ ভাঙা চক দিয়ে ক্লাস কোনওভাবে সামাল দিতে হচ্ছে।
সাধারণত প্রতি শিক্ষাবর্ষের শুরুর দিকে স্কুলের অ্যাকাউন্টে অনুদানের টাকা পাঠায় স্কুল শিক্ষা দফতর। কিন্তু এবার বছর শেষ হতে চললেও, কানাকড়ি মেলেনি বলে অভিযোগ। এমনিতেই শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে রাজ্যের অধিকাংশ স্কুল। তার উপর কম্পোজিট গ্র্যান্ট না মেলায় এবার ক্লাসরুমের চক ডাস্টারের খরচেও কোপ পড়েছে। কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগ পকেট থেকে চক, ডাস্টার কিনে পঠন পাঠন অব্যাহত রেখেছেন। তাঁদের বক্তব্য এই অসম লড়াই চালানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, স্কুলগুলিতে অনুদান আটকে দিয়ে আসলে সরকারি স্কুলগুলিকে বন্ধ করে দিতে চাইছে রাজ্য।