প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ : বিধানসভা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিল ইডি (Enforcement Directorate) । সূত্রের খবর, সোমবার এই চিঠি বিধানসভায় পাঠানো হয়েছে ইডির তরফে। যদিও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee) জানিয়েছেন, এমন কোনও চিঠি তিনি পাননি।
২২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১ টায় বিধানসভায় হাজিরা দিতে হবে সিবিআই, ইডি-কে। ইতিমধ্যেই সত্যেন্দ্র সিং (ডিএসপি, সিবিআই) এবং রথীন বিশ্বাসকে (ইডি আধিকারিক) ডেকে পাঠানো হয়েছে। নিজাম প্যালেসে সেই সংক্রান্ত চিঠিও পাঠিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, স্পিকারের চিঠি ও তলব প্রসঙ্গে তাদের আইনি ব্যাখ্যা দিয়ে আজ চিঠি পাঠিয়েছে ইডি। আইনগতভাবে তারা ভুল করেনি, সেই ব্যাখ্যাই চিঠিতে বিস্তারিত দিয়েছে ইডি।
তবে কী ইডি বুধবারের তলব এড়াবে? সে প্রশ্নের জবাব সরাসরি দিতে চাননি ইডি কর্তারা। তাঁদের মতে, চিঠিতে আমরা কেন জনপ্রতিনিধিদের চার্জশিট দিয়েছি, তার আইনি দিক কী হতে পারে, তার কথা বলা আছে।
ফলে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ইডির সংশ্লিষ্ট কর্তা যে যাবেন না, তা ধরে নেওয়া যায়। কারণ, আইনি ব্যাখ্যা দিয়েছে ইডি। ফলে সশরীরে হাজিরার বিষয়টি যে তারা এড়াবে, সেটা কিয়দংশে স্পষ্ট।
নারদ মামলায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এবং মদন মিত্রের বিরুদ্ধে ইডি চার্জশিট পেশ করে। এরপর ইডির বিশেষ আদালত তাঁদের নামে সমনও জারি করে। সেই সমন স্পিকারের মাধ্যমে অভিযুক্তদের কাছে পৌঁছাতে পাঠানো হয় বিধানসভায়। কিন্তু অভিযোগ, বিধানসভা কর্তৃপক্ষ তা পাঠাতে অস্বীকার করেন। আর এই থেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে বিধানসভা কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।
বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি, দুর্নীতি দমন আইন (Prevention of Corruption Act) ১৯ (১) ধারা অনুযায়ী, বিধায়কের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করতে গেলে বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমোদন নিতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। অধ্যক্ষ বলেন, “বিধানসভার মর্যাদা ক্ষুন্ন করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। বিধানসভাকে বাদ দিয়ে অনুমোদন নিয়ে আসা হচ্ছে। এই পবিত্র স্থানের গরিমা নষ্ট হতে দেব না।”
অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার ক্ষেত্রে যে আইন রয়েছে, তা লঙ্ঘন করেছে ইডি ও সিবিআই। আর তা ইচ্ছাকৃতভাবেই করা হয়েছে। কেন এভাবে আইন লঙ্ঘন করা হল তা সিবিআই ও ইডির থেকে জানতে চাইছে বিধানসভা কর্তৃপক্ষ। শনিবার সেই সংক্রান্ত চিঠিও পাঠানোর কথা ছিল। ওই দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চিঠির জবাবে কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট না হলে সশরীরে হাজির হতে হবে সিবিআই ও ইডি অধিকারিকদের। একইসঙ্গে স্পিকারের অনুমোদন ছাড়া ইডি ও সিবিআই কীভাবে চার্জশিট দিল, সে প্রশ্নও তুলেছে বিধানসভা কর্তৃপক্ষ।
বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, তিন জনপ্রতিনিধির (সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এবং মদন মিত্রের) কাছে বিধানসভার মারফত ইডি সমন পাঠাতে বলেছিল। সেই সমনের মাধ্যমে জানা গেল জনপ্রতিনিধিদের নাম রয়েছে চার্জশিটে। তবে সেই সমন অভিযুক্তদের কাছে পাঠানোর দায়িত্ব বিধানসভার নয়। তাই তারা পাঠাতে পারবে না।
সম্প্রতি নারদ মামলায় ইডি ওই তিন জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় ইডি। সেই সূত্রেই ইডির বিশেষ আদালত সমন জারি করে। কিন্তু এখন রাজ্য বিধানসভা কর্তৃপক্ষ বেঁকে বসায় চার্জশিট এখনও জনপ্রতিনিধিদের হাত পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছায়নি।
আরও পড়ুন: MP Sougata Roy: তৃণমূল সাংসদের বাড়ির সামনে হাঁটু জল, লুঙ্গি পরে জল ঠেলে ঘুরলেন পাড়ায়