POCSO : ‘নির্যাতিতার সাক্ষ্যই দোষী সাব্যস্ত করতে যথেষ্ট’, পকসো মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের
Calcutta High Court: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর বি সরফ এবং বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার এক বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন সিদ্ধান্তে বলেছে যে গুরুতর ব্যতিক্রম না হলে, যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া অভিযোগকারীর প্রমাণই, কাউকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট।
কলকাতা : যিনি যৌন নিপীড়নের শিকার, শুধুমাত্র তাঁর প্রমাণই একজনকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট। শুক্রবার এক পকসো মামলার পর্যবেক্ষণে এমনটাই জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। হাইকোর্ট জানিয়েছে, যিনি যৌন হেনস্থার শিকার তাঁর প্রমাণকে, সন্দেহের চোখে পরীক্ষা করার দরকার নেই। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর বি সরফ এবং বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার এক বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন সিদ্ধান্তে বলেছে যে গুরুতর ব্যতিক্রম না হলে, যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া অভিযোগকারীর প্রমাণই, কাউকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, “একজন নারী, যিনি যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তিনি কোনও অপরাধ করেননি। তিনি অন্য কোনও ব্যক্তির লালসার শিকার এবং তাই, তাঁর প্রমাণকে সন্দেহের চোখে পরীক্ষা করার দরকার নেই। একজন মহিলা, যিনি যৌন অপরাধের শিকার, তাঁর প্রমাণ যদি বিশ্বাসযোগ্য মানের হয়, তবে তাঁর প্রমাণই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করতে যথেষ্ট।” আদালত আরও পর্যবেক্ষণ করেছে, যিনি যৌন নিপীড়নের শিকার, তিনি যদি নাবালিকা হন, তাহলে তাঁর সাক্ষ্যকে অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত। এটাও লক্ষ করা গিয়েছে, এমনকী যদি নির্যাতিতার মা অন্য কথাও বলেন, তাহলেও নির্যাতিতার সাক্ষ্য নির্ভরযোগ্য প্রমাণিত হলে, একমাত্র সেই প্রমাণই দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট হতে পারে।
আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, “ধর্ষণ নিছক শারীরিক আক্রমণ নয়, এটি নির্যাতিতার পুরো ব্যক্তিত্বকে ধ্বংস করে দেয়। ধর্ষক অসহায় মহিলার আত্মাকে হেয় করে এবং তাই, পুরো বিষয়টায় নির্যাতিতার সাক্ষ্যকে অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। মামলা, এমনকি যদি মা শত্রুতা করেন।”
উল্লেখ্য, এর আগে আবেদনকারীকে নিম্ন আদালতে পকসো আইনের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী আবেদনকারীকে শাস্তিযোগ্য অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। আবেদনকারী নির্যাতিতার সৎ বাবা। অভিযোগ, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে নাবালিকাকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছিল আবেদনকারী। অভিযোগ যখনই নির্যাতিতা নাবালিকার মা ও বোন বাড়িতে থাকত না, তখনই তাকে ধর্ষণ করত সৎ বাবা। বিষয়টি জানতে পেরে, নাবালিকা নির্যাতিতার মা তাকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যান যেখানে ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা যায় ওই নাবালিকা ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এরপর নাবালিকাকে পোর্ট ব্লেয়ারের এক চিল্ড্রেন হোমে পাঠিয়ে দেন। পরে ২০১৭ সালে প্রসবের পর তাকে ফিরিয়ে আনারও আশ্বাস দিয়েছিলেন মা।
পরবর্তী সময়ে ওই হোমের সিস্টার-ইনচার্জ জানতে পারেন ওই নাবালিকা গর্ভবতী এবং সে তার নিজের সৎ বাবার দ্বারা গর্ভবতী হয়েছে। সিস্টার-ইন-চার্জ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান এবং ফৌজদারি মামলা করেন।
আরও পড়ুন : Bagtui Massacre: ‘বিজেপি-সিবিআই একসঙ্গে রামপুরহাটে যাচ্ছে!’ আঁতাতের গন্ধ পাচ্ছেন কুণাল ঘোষ