কলকাতা : প্রায় ২ বছর হয়ে গেল বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়। মাঝে কোভিড বিধি মেনে রাজ্যে কিছুদিনের জন্য অফলাইন ক্লাস খোলা হলেও সংক্রমণের প্রকোপ বাড়তেই ফের বন্ধ হয়েছে দরজা। শিশুরা ভুলতে বসেছে চক, ব্ল্যাকবোর্ড বা টিফিনের আড্ডা। এখন সকাল হলেই বন্ধ ঘরে কম্পিউটারের স্ক্রিনে চোখ রেখে পড়াশোনা। সেই অনলাইন ক্লাস বা ডিজিটাল পড়াশোনার সুযোগই বা কজন পাচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। আর একদিকে যখন নিয়ম-বিধি মেনে রেস্তোরাঁ বা সিনেমা হল খোলার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে, তখন স্কুল কলেজ কেন খোলা হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চিকিৎসক মহলেরও দাবি, শিশুদের আর ঘরে বন্দি করে রাখার প্রয়োজন নেই।
এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট চিকিৎসক অভিজিৎ সরকার বলেন, ‘আমার মনে হয়, বাচ্চাদের কোভিড হতে দেব না ভেবে আদতে শিশুদের সমস্যা তৈরি করছি। শিশুদের কোভিড হলে আলোড়ন হবে এমনটায় নয়।’ তাই অবিলম্বে স্কুল খোলা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি উল্লেখ করেছেন, কী ভাবে স্কুল খুললে কোভিড এড়িয়ে পড়াশোনা করা যায় তা ভাবতে হবে সরকারকে। শ্রেণিকক্ষে ভেন্টিলেশন ভালো না হলে প্রয়োজনে মুক্তাঙ্গনে পড়াশোনা করাতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
চিকিৎসকের কথায়, কবে শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, তার জন্য অপেক্ষা করা যাবে না। কারণ, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও তৃতীয় ঢেউয়ে অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘বাচ্চাদের কিছু হয় না। ওরা খেলাধূলা করে বেরিয়ে যায়। এটা জেনেও আমরা ওদের আটকে রেখেছি।’ তাঁর মতে, স্কুল বন্ধ রেখে যা লাভ হচ্ছে, তার থেকে অনেক বেশি ক্ষতি হচ্ছে শিশুদের। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালোবাসতে গিয়ে ওদের ক্ষতি করছি’।
এই প্রসঙ্গে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষ বলেন, ‘প্রথম যখন করোনা এসেছিল, তখন জানা ছিল না এর মোকাবিলা কী ভাবে করা সম্ভব। এখন পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রিত। সে ক্ষেত্রে, স্কুল কলেজ বিধি মেনে খোলা যেতেই পারে।’
একই দাবি রাজ্যের বিরোধী নেতাদের। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘খেলা-মেলা কিছুই তো বাদ নেই। সবই চলছে পালা করে। তাহলে স্কুল বন্ধ থাকবে কেন? কতদিন বাচ্চারা আর এভাবে ঘরে আটকা পড়ে থাকবে?’ অন্যদিকে, বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, দেশের সর্বত্র কোভিড বিধি মেনে স্কুল খোলা হচ্ছে। মহারাষ্ট্রেও স্কুল খুলে যাচ্ছে। বাংলা তো সবদিক থেকেই এগিয়ে। অথচ এখানে স্কুল খোলার নাম নেই।
আরও পড়ুন : Covid in Kolkata: শহরের বহুতলেই কেন করোনার বিপদ, চাঞ্চল্যকর তথ্য কলকাতা পুরসভার হাতে
আরও পড়ুন : Kalighat Skywalk: জট পেরিয়ে শুরু কালীঘাট স্কাইওয়াক তৈরির কাজ, দেড়বছরেই নির্মাণ সম্পূর্ণ, দাবি পুরসভার