কলকাতা: পরপর কয়েকদিন ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ মিলছে বিধাননগরে। গ্রেফতার হয়েছেন একাধিক জন। তদন্তে উঠে এসেছে, বিস্ফোরক তথ্য। পুলিশের একাংশের মদতেই নাকি চলে এরকম একাধিক ভুয়ো কল সেন্টার। বৃহস্পতিবারই বিধান নগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ অভিযান চালায় কেষ্টপুর রবীন্দ্রপল্লি এলাকায়। সেখানে যে ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ মেলে, সেখান থেকে নাকি প্রত্যেক মাসে মোটা টাকা যেত পুলিশের একাংশের কাছে। অন্তত তদন্তে তেমনটাই উঠে আসছে। ঘটনায় আটক করা হয় ২২ জনকে। প্রত্যেক জনকে আলাদা ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ৫ জন মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বিধান নগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ। গ্রেফতার হয় ভুয়ো কলসেন্টারের এক চাঁই। তাদের জেরাতেই বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। ধৃতদের বক্তব্য, প্রত্যেক মাসে মোটা টাকা পাঠানো হত পুলিশের একাংশের কাছেই। শুক্রবার ধৃতদের বারাসত আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছেন তদন্তকারীরা।
মূলত এই কল সেন্টার থেকে বিভিন্ন কসমেটিকস প্রোডাক্ট, ইমিউনিটি প্রোডাক্ট, সাজ সরঞ্জাম জিনিসপত্র বিক্রি করার নামে ফোন করে ক্রেতাদের কাছ থেকে টাকা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পেত। পরবর্তী সময়ে সেই টাকা আত্মসাৎ হয়ে যেত। প্রতারিতরা একাধিকবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিন্তু কেউ গ্রেফতার হননি।
বিধান নগর গোয়েন্দা শাখা অভিযোগ দায়ের হয় সম্প্রতি। এরপরই তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল রাতে ৫ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টের পাসবুক, চেক বুক, ৩০ টি মোবাইল ফোন, রেজিস্টার বুক-সহ ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, হার্ডডিস্ক উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় রাজ শেখর নিয়োগ নামে এক জনের নাম উঠে আসে।
মূল অভিযুক্ত রাজ শেখর নিয়োগের বিরুদ্ধে একাধিক অবৈধ কল সেন্টার চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সাইবার পুলিশের হাতে এই সংক্রান্ত একাধিক তথ্য আসে। পরে বিধান নগর গোয়েন্দা শাখা গ্রেফতার করে রাজ শেখরকে। এই প্রতারণার টাকা কোথায় কাজে লাগানো হত, আর কারা কারা জড়িয়ে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশের একাংশের এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এই নিয়ে বিধাননগর থানার পুলিশের কাছে প্রশ্ন করা হলে, তারা কোনও প্রতিক্রিয়া দিতেই রাজি হয়নি। পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য, এখন তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছুই বলা যাবে না।