Om Prakash Mishra: দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগ ওমপ্রকাশের বিরুদ্ধে, তদন্তের নির্দেশ দিলেন রাজ্যপাল
Governor C V Ananda Bose: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুবীরেশ ভট্টাচার্যের গ্রেফতারির পর রাজ্যপালই উপাচার্য করেছিলেন ওমপ্রকাশ মিশ্রকে। পরবর্তীতে দেখা যায় আবার রাজ্যপালই ওমপ্রকাশ মিশ্রকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেন।
কলকাতা: ‘কয়েকজন ভিসিদের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস উস্কাচ্ছেন’ এর প্রতিবাদ করে আগেই সরব হয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র। সাংবাদিক বৈঠক করে একসময় ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। এবার প্রাক্তন এই ভিসির বিরুদ্ধেই উঠল দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগ। তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ রাজভবনের।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুবীরেশ ভট্টাচার্যের গ্রেফতারির পর রাজ্যপালই উপাচার্য করেছিলেন ওমপ্রকাশ মিশ্রকে। পরবর্তীতে দেখা যায় আবার রাজ্যপালই ওমপ্রকাশ মিশ্রের আর মেয়াদ বাড়াননি তাঁর । সম্প্রতি, দেখা যাচ্ছে রাজভবনের এই কার্য-কলাপের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন ওমপ্রকাশ মিশ্র সহ আরও কয়েকজন প্রাক্তন ভিসি। কয়েক দিন আগে রাজভবন কর্তৃক নিযুক্ত ১১ জন ভিসির বিরুদ্ধে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন ওমপ্রকাশ-সহ বেশ কয়েকজন উপাচার্য। আগামী সোমবার ফের একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন তাঁরা।
সেই দিনই আবার রাজভবন থেকে বার্তা আসে ওমপ্রকাশের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস। বস্তুত, এর আগে উপাচার্য থাকাকালীন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে জমি সংক্রান্ত বিবাদে নাম জড়ায় এই ওমপ্রকাশের। যদিও, তিনি বারংবার দাবি করেন পুরো বিষয়টি স্বচ্ছ। এরপর রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে যোগ দেওয়ার পর প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ শুনে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে কী বলছেন ওমপ্রকাশ?
তিনি বলেন, “গত ৩৪ বছর ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমি। বিভিন্ন পদ অলঙ্কৃত করেছি। কোনও দাগ কোনওদিন নেই। রাজভবন এখন রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা করছে। এই চক্রান্ত গুলিকে সামনে আনার চেষ্টা আমি করেছি।”
জমি সংক্রান্ত বিবাদ কী?
উল্লেখ্য, অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে দুমাসের জন্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালে এসেছিলেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। তবে অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত উপাচার্যের জন্য বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়। অনুমতি ছাড়া তিনি কোনও জমি হস্তান্তর করতে পারবেন না। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কোনও বিষয়েও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে।
মূলত, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হোটেল ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়ে তোলা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয় কয়েক মাস আগে। সেই পরিস্থিতিতে অস্থায়ী উপাচার্যের জন্য বেঁধে দেওয়া হয় এই শর্তগুলি বলে মনে করে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই জমিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বানানোর সপক্ষে থাকতে দেখা যায় ওমপ্রকাশকে। এরপর থেকেই তৈরি হয় বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে তাহলে কি নিয়ম ভেঙে কাজ করছেন অস্থায়ী ভিসি? যদিও, এই বিষয়ে ওমপ্রকাশের বক্তব্য, ক্যাবিনেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি শুধু কাজ করেছেন। পরে যদিও,ছাত্র-ছাত্রী সহ শিক্ষকদের লাগাতার চাপের মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ থেকে পিছু হঠে সরকার।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমর বিশ্বাস বলেন, “এখানকার ১৬ বিঘা জমি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চাইছিলেন। ওই জমি নেওয়ার জন্য সামগ্রিক ভাবে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করেছিলেন।”