সৌরভ গুহ ও সিজার মণ্ডলের রিপোর্ট
কলকাতা: জল্পনা চলছিলই। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষের গাড়িতে উঠতেই তীব্রতা বেড়েছিল জল্পনার। শেষ পর্যন্ত সেই জল্পনাই সত্যি হল। সোমবার বিকালে তৃণমূল ভবনে দেখা গেল বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডলকে। পাশে অরূপ বিশ্বাসের মতো নেতারা। সেখানেই পাকাপাকিভাবে গেরুয়া শিবির ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিলেন হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক। তাঁর সঙ্গেই তৃণমূলে এলেন জেলা বিজেপির বড় নেতা শ্যামল মাইতিও।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই তাপসীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন তন্ময়। পূর্ব মেদিনীপুরে বিশেষ করে কাঁথি এলাকার সংগঠনের দায়িত্ব রয়েছেন তন্ময়। একইসঙ্গে তৃণমূল সূত্রে আরও দাবি করা হচ্ছে , তাপসী ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরে আরও একজন বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে দলের তরফে। প্রসঙ্গত আরজি কর পর্বে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করা নিয়ে লালবাজারের সামনে জুনিয়র চিকিৎসকদের রাতভর ধরনার পরে অচলাবস্থা কাটাতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন অভিষেক ঘনিষ্ঠ যাদবপুরের এই প্রাক্তন ছাত্র নেতা তন্ময়।
এদিন তাপসীদের হাতে পতাকা তুলে দেন অরূপ বিশ্বাস। অরূপের সাফ কথা, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের উন্নয়ন যজ্ঞে সামিল হচ্ছেন তাপসী। এরপরই মমতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে বলেন, “বাংলার মানুষের হৃদয়ে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব শ্রেণির মানুষকে নিয়ে চলার প্রয়াস শুরু করেছিলেন মমতা। ৩৪ বছরের বাম জমানায় বাংলা পিছিয়ে পড়েছিল। মমতা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাই তাপসী চিন্তা করে দেখেছেন যে মানুষের জন্য কাজ করতে হলে মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত তাঁর কর্মযজ্ঞে সামিল হতে হবে।”
সাংবাদিক সম্মেলন করেন তাপসীও। সুর চড়ান বিভাজনের রাজনীতি নিয়ে। বলেন, “প্রগতিশীল এই রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি চলছে। এই রাজনীতি মেনে নেওয়া কঠিন হচ্ছিল। বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি। তাই তৃণমূলে জয়েন করছি।” বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ান শ্যামল মাইতিও। বলেন, “বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ভারত ও বাংলার ঐতিহ্য। বিরোধী দলনেতা হিংস্র রাজনীতি করছে। বাংলায় শান্তি বজায় রাখতে আমরা বিজেপি ছাড়ছি।”
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন তাপসী। ২০২৪ সালের লোরসভা ভোটের পর থেকে শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর ক্রমশ দূরত্ব বাড়তে থাকে বলে খবর। দলের সঙ্গেও তিক্ততাও বাড়তে থাকে। পরোক্ষভাবে দলের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন বলে খবর। বিজেপির শ্রমিক সংগঠনেও তাঁর গুরুত্ব কমতে থাকে। সেখানেই থেকেই তাঁর এই দলবদলের সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।