Calcutta High Court: ‘অবিচার সবাই দেখেছেন, কেউ কিছু করতে পারছেন না’, বার অ্যাসোসিয়েশনকে কড়া ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

Calcutta High Court: সোমবার মুখবন্ধ খাম জমা পড়তেই দেখা গেল, তাতে রয়েছে ৮৬ জনের নাম। সেই তালিকা দেখে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ।

Calcutta High Court: 'অবিচার সবাই দেখেছেন, কেউ কিছু করতে পারছেন না', বার অ্যাসোসিয়েশনকে কড়া ভর্ৎসনা হাইকোর্টের
কলকাতা হাইকোর্ট
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 27, 2023 | 4:55 PM

কলকাতা : দোষ করেছেন একজন, আর অন্যজনের নাম জমা দেওয়া হল। এমনটা যাতে না হয়,সে ব্যাপারে আগেই বার অ্যাসোসিয়েশনকে সতর্ক করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টিএস শিবাগনানম। আর সোমবার মুখবন্ধ খাম জমা পড়তেই দেখা গেল, তাতে রয়েছে ৮৬ জনের নাম। সেই তালিকা দেখে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসের বাইরে বিক্ষোভের ঘটনায় কারা যুক্ত ছিলেন, তা শনাক্ত করে ৮৬ জনের নাম জমা দিয়েছে বার অ্যাসোসিয়েশন। কেত এতজনের নাম দেওয়া হল, তা নিয়ে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে বার অ্যাসোসিয়েশনকে। সোমবার বিচারপতি টি এস শিবাগননম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাসের বৃহত্তর বেঞ্চে ছিল শুনানি।

‘সবার অবস্থা এখন পিতামহ ভীষ্মের মত’

সোমবার বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অরুণাভ ঘোষকে বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি আদালতকে ভয় পান না? সম্মান করেন না? বিচারপতি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি এজলাসের বাইরে বিক্ষোভের ঘটনায় ১০ থেকে ১২ জন যুক্ত ছিলেন। আমরা চাইলেই কড়া পদক্ষেপ করতে পারি।’ চাইলেই আদালত অবমাননার রুল জারি করা যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেন বিচারপতি। তাঁর মন্তব্য, ‘আমরা চাই প্রতিষ্ঠানের সম্মান রক্ষা করতে, কিন্তু সত্যিটা সামনে আসা দরকার। সবার অবস্থা এখন পিতামহ ভীষ্মের মত, সবাই অবিচার দেখেছেন, কিন্তু কিছু করতে পারছেন না।’

‘ক্ষমা চাইলে সম্মানজনক সমাধান হতে পারে’

বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় জানান, যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁরা যদি ক্ষমা চান তাহলে এই সমস্যার সম্মানজনক সমাধান করতে পারে আদালত। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মুখবন্ধ খামে নাম দিতে বলেছিলাম। কারও পরিচয় প্রকাশ্যে আসত না।’

‘জাতীয় বার কাউন্সিলের সাহায্য নেব, তাতে কি খুব ভাল হবে?’

বিচারপতি টিএস শিবাগনানমের দাবি, ৮৬ জন মোটেই বিক্ষোভ দেখাননি। কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজ্য বার কাউন্সিল আদালতকে সাহায্য না করতে পারলে আমরা জাতীয় বার কাউন্সিলের সাহায্য নেব। তখন সিদ্ধান্ত তাদের হাতে থাকবে। তাতে কি খুব ভাল হবে?’ অযথা এই মামলা দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি মনে করিয়ে দেন, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল হাত জড় করে তাঁদের সরে যেতে অনুরোধ করেছিলেন, বিক্ষোভকারীরা শোনেননি। সেই ঘটনাকে অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

৮৬ জনের নাম গ্রহণ করেনি আদালত

আদালতের নির্দেশ, রাজ্য বার কাউন্সিল এবার বিক্ষোভকারী আইনজীবীদের শনাক্ত করবেন। জাতীয় বার কাউন্সিলের সঙ্গে তথ্য আদান প্রদান করতে হবে। দুটি সংস্থা আলাদা আলাদা রিপোর্ট পেশ করবে। ৮৬ জন আইনজীবীর নাম সম্বলিত নথি এদিন গ্রহণ করেনি আদালত। পাশাপাশি, সোমবার ৬ সন্দেহভাজন উপস্থিত ছিলেন আদালতে। তাঁদের নিজের নিজের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা দিতে বলেছে আদালত।

রাজ্য়ের তরফে জানানো হয়েছে, দুটি প্রিন্টার থেকে বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে বিতর্কিত পোস্টার ছাপা হয়েছিল। সম্পূর্ন নিশ্চিত হওয়ার জন্য সেই প্রিন্টার ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

গত ৯ জানুয়ারি বিচারপতি মান্থার এজলাসের বাইরে বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীদের একাংশ। সেই ঘটনার আঁচ পৌঁছয় দিল্লিতেও। বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিও এসেছিল কলকাতা হাইকোর্টে। পরে তিন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করতে হবে, কারা ওই দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। মুখবন্ধ খামে জমা দিতে হবে সেই রিপোর্ট। সেই মতো এদিন রিপোর্ট জমা দেয় বার অ্যাসোসিয়েশন।