HS 2024: এক স্কুলে সিট, স্কুলের কথায় অন্য স্কুলে গিয়ে হাজির পরীক্ষার্থীরা

Laketown School: এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, "একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। অভিভাবকদের যেমন ওরা সন্তান। আমাদেরও ওরা সন্তান। এতদিন ধরে পড়ছে আমার স্কুলে। আমারই তো ছাত্র। আজ যেটা হয়েছে সেটা সাংঘাতিক ভুল আমরা মানছি। কিন্তু মাধ্যমিকে অ্যাডমিটে ভেন্যু লেখা থাকে, উচ্চমাধ্যমিকে সেটা নেই। প্রতি বছর এই স্কুলের সিট পড়ে বাঙুর বয়েজে। সেই জন্য আমরা ভেবেছি ওই স্কুলেই পরীক্ষা পড়েছে।"

HS 2024: এক স্কুলে সিট, স্কুলের কথায় অন্য স্কুলে গিয়ে হাজির পরীক্ষার্থীরা
প্রধান শিক্ষিকার সামনে ক্ষোভ উগরে দেন অভিভাবকরা। Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 16, 2024 | 3:34 PM

কলকাতা: এক স্কুলে সিট পড়েছে পরীক্ষার্থীদের। অথচ স্কুল জানিয়েছে আরেক স্কুলের কথা। সাত সকালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা স্কুলের জানানো কেন্দ্রেই হাজির হয়। সেখানে গিয়ে জানতে পারে এই স্কুলে তাদের সিটই পড়েনি। শুক্রবার উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম দিনই এমন বিশৃঙ্খলার মুখে পড়ে পরীক্ষার্থীরা। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। প্রধান শিক্ষিকার কাছে জবাব তলব করেন তাঁরা। যদিও লেকটাউন আদ্যনাথ শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষিকা তাঁর ভুলের কথা স্বীকারও করেন। তবে এমন ভুল কোনওভাবেই মেনে নিতে নারাজ অভিভাবকরা।

লেকটাউন আদ্যনাথ শিক্ষা নিকেতনের উচ্চমাধ্যমিকের সিট প্রতি বছরই বাঙুর বয়েজ হাইস্কুলে পড়ে। এবারও স্কুল থেকে জানানো হয়েছিল, বাঙুর বয়েজেই সিট পড়েছে। অভিভাবকরা জানান, সাড়ে ৮টার মধ্যে আদ্যনাথের পরীক্ষার্থীরা বাঙুর বয়েজের সামনে চলে যায়। কিন্তু ৯টা ১০ মিনিটেও সিট নম্বরের তালিকা ঝোলানো হয়নি। এরপরই অভিভাবকরা বাঙুর বয়েজের পরীক্ষা পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলেন।

তাতেই জানতে পারেন এই স্কুলে আদ্যনাথের পড়ুয়াদের সিটই পড়েনি। পড়েছে পল্লীশ্রী হাইস্কুলে। তাতে কপালে হাত পড়ে যায় পরীক্ষার্থীদের। অভিভাবকরাও হতবাক। বাজে একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়। অভিভাবকদের দাবি, এত বড় পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের একটা এমনিই টেনশন কাজ করে। তার উপর ওরা শুনছে অন্য স্কুলে সিট পড়েছে। সকলে সে স্কুল চেনেও না। স্বাভাবিকভাবেই ঘাবড়ে গিয়েছে। টেনশনে কেউ অসুস্থও হয়ে যেতে পারত।

এরপর বাঙুর বয়েজ থেকে পল্লীশ্রী হাইস্কুলে যায় আদ্যনাথের পরীক্ষার্থীরা। ততক্ষণে লেকটাউন থানায় খবর যায়। পুলিশ এসে গাড়ির ব্যবস্থা করে পরীক্ষার্থীদের পল্লীশ্রী স্কুলে পৌঁছে দেয়। বাঙুর স্কুল এবং পল্লীশ্রী স্কুলের দূরত্ব খুব কম হওয়ায় বড় সমস্যা কিছু হয়নি। কিন্তু অভিভাবকরা বলেন, হতে অনেক কিছুই পারত। টেনশনে নার্ভ ফেল করতে পারত কারও, কেউ মাথা ঘুরে পড়ে যেতেও পারত। তার দায় কে নিত?

এরপরই পরীক্ষা শেষ হলে আদ্যনাথ শিক্ষা নিকেতনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। প্রধান শিক্ষিকাকে ভুল স্বীকারের দাবিও জানান। ভিকি দাস নামে এক অভিভাবকের কথায়, “স্কুলকে তো জবাব দিতে হবে। আজ কাছে সিট না পড়ে যদি আরও দূরে সিট পড়ত কী করত পরীক্ষার্থীরা? আর পরীক্ষা দিতে এসে এরকম পরিস্থিতি দেখে অনেকেই তো ভয় পেয়ে গিয়েছে। পল্লীশ্রী কোন স্কুল সেটাও তো অনেকে চেনে না।”

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। অভিভাবকদের যেমন ওরা সন্তান। আমাদেরও ওরা সন্তান। এতদিন ধরে পড়ছে আমার স্কুলে। আমারই তো ছাত্র। আজ যেটা হয়েছে সেটা সাংঘাতিক ভুল আমরা মানছি। কিন্তু মাধ্যমিকে অ্যাডমিটে ভেন্যু লেখা থাকে, উচ্চমাধ্যমিকে সেটা নেই। প্রতি বছর এই স্কুলের সিট পড়ে বাঙুর বয়েজে। সেই জন্য আমরা ভেবেছি ওই স্কুলেই পরীক্ষা পড়েছে।”

কিন্তু সেন্টার মিটিং তো হওয়ার কথা। প্রধান শিক্ষিকার বক্তব্য, ১ তারিখ সেই মিটিং ছিল। কিন্তু ২ তারিখ থেকে পাতিপুকুর আদ্যনাথ শিক্ষা মন্দিরে মাধ্যমিকের সিট পড়ে। তাই তা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে ১ তারিখের মিটিংয়ে তাঁরা যেতে পারেননি। তবে একজন প্রধান শিক্ষিকা কী করে নিছক ভেবে নিয়ে এত বড় একটা ঘটনা ঘটালেন তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন অভিভাবকরা।