Humayun Kabir: ‘চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতাই’, তবুও কেন সংখ্যালঘু ভোট কাটতে চাইছেন হুমায়ুন? জানালেন নিজেই
Humayun Kabir: ১৫ অগাস্টের পর ময়দানে নামার কথাও বসেছিলেন। TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে এবার সেই সমস্ত কিছুর রহস্যভেদ করলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। ১৫ অগাস্টের পর নতুন দল গড়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।

কলকাতা: অতীতে একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তাঁর মন্তব্যে একাধিকবার অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে দলকে। একাধিকবার দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে। ১৫ অগাস্টের পর ময়দানে নামার কথাও বসেছিলেন। TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে এবার সেই সমস্ত কিছুর রহস্যভেদ করলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। ১৫ অগাস্টের পর নতুন দল গড়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।
হুমায়ুন স্পষ্ট বলেছেন, “আমি শুধু মুর্শিদাবাদকেন্দ্রীক দল গড়ব না। মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, নদিয়ার একটা অংশ, ৫০-৫২ সিট নিয়ে দলটা করব।”
কিন্তু বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তাহলে কি তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কেই থাবা বসাতে চাইছেন তিনি?
প্রশ্নটা করা হয়েছিল হুমায়ুনকে। তাঁর সাফ উত্তর, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর কোনও রাগ নেই।
হুমায়ুনের স্পষ্ট বক্তব্য, “ক্ষমতায় আসবেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রীই। নেত্রীই চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন।” তাহলে কেন সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে নজর? হুমায়ুন বলেন, “আমি নেত্রীকে এটা অবগত করার জন্য দলটা করব, যে আমার মতো লোকের দরকার হয়তো হবে না, কিন্তু যে ছাগল দিয়ে ধান মাড়ানো হচ্ছে, তাতে যোগ্য ভোটার সম্মান পাচ্ছেন না। যোগ্য ভোটাররা যাতে সম্মান পান, তারই ব্যবস্থা করব।”
বিশ্লেষকদের বক্তব্য
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হুমায়ুনের কথায় এটা অন্তত স্পষ্ট, তৃণমূলের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ভোটব্যাঙ্ক এলাকাগুলিতেই লড়াই করবেন হুমায়ুন। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে যেখানে রয়েছে ৭০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট, উত্তর দিনাজপুরে ৪২ শতাংশ, মালদহে ৫২ শতাংশ, নদিয়ায় ৩১ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। তাই কিছুদিন আগে ব্যক্তিগতভাবে যে সমীক্ষা চালিয়েছিলেন হুমায়ুন, তাতে বিশেষ করে এটাকেই পাখির চোখ করা হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এটাও বলছেন, তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেন সংখ্যালঘুরা। বিরোধীদের মুখে এ কথাও বারেবারে সামনে এসেছে, যেন তেন প্রকারেণ, তৃণমূল চায় ওই নির্দিষ্ট শতাংশ ভোটকে সুরক্ষিত করতে। যদিও ছাব্বিশের নির্বাচনে তৃণমূলের মাথাব্যথার কারণ হতে পারেন নওশাদ সিদ্দিকিও। বিশ্লেষকরা বলছেন, আইএসএফও একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোট কাটবে, আবার হুমায়ুন দল গড়লে সেই ভোট কাটার পরিমাণ আরও বাড়বে। বলাইবাহুল্য, বিজেপির টিকিট নিয়ে আড়াই লক্ষ ভোট পেয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে। হুমায়ুন তার ভিত্তিতে মানুষের জনসংযোগ নিয়ে একটি সার্ভে করেছেন। তার ওপর দাঁড়িয়েই নতুন দল গড়ার চিন্তাভাবনা করছেন তিনি।
যদিও হুমায়ুনের বক্তব্যকে বিশেষ আমল দিচ্ছে না তৃণমূল। তৃণমূলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, “পিপীলিকা ডানা গজায় মরিবার তরে। এরকম অনেক রাজনীতিবিদদেরই মনে হয়। কারোর ইচ্ছা হলে দল করতেই পারে। বিশেষ করে বিজেপি যদি পিছন থেকে টাকা পয়সা দেয়, তাহলে করতেই পারে। কিন্তু লাভের লাভ কী হবে… সেটা বোঝা যাবে। মানুষের সমর্থনও পাওয়া যায় না।”

